somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চোরাবালি-
পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

বাবা দিবসে সকল বাবা'দের প্রতি ভালোবাসা

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল ছিল বাবা দিবস, যদিও ফেসবুক আর পত্রিকা না থাকলে জানতেই পারতাম না বাবা দিবস বলে কিছু আছে। প্রতিদিন অনন্ত ৫টা সময় বাবার কথা স্মরণ হয় ("রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা"-হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন; যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’) সেখানে আলাদা দিবসের করা যে মাথায় থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।

আজ সকালেই একজন ফেসবুকে একটা পোষ্ট দিল ফেসুকে বাবার প্রতি এত ভালোবাসা সে দেশে এত বৃদ্ধাশ্রম কেন? প্রশ্ন আসলে অনেক সহজ, এবং সহজ উত্তর - ছেলে'রা রাখে না তাই বৃদ্ধাশ্রম। কিন্তু বাস্তব উত্তর অনেক কঠিণ।

বয়ষ্ককদের বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয় শুধু মাত্র ভালোবাসার ঘাটতির কারনে বিষয়টি মোটেও এমন নয়, কখনও কখনও পরিস্থিতির স্বীকার। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটাই প্রচণ্ড স্বার্থপর গোষ্ঠির সমর্থনে যার ফলে আমাদের বাচ্চারা ছোটথেকেই স্বার্থপর হয়ে উঠছে। বাচ্চাদের মানুষিকতা সেভাবেই গড়ে ওঠে যেভাবে তারা ছোট থেকে শিখে আসছে। ছোটবেলায় টিভিতে যখন ম্যাকগ্রাইভার দেখতাম তখন অনেকেই ম্যাকগ্রাইভার হওয়ার চেষ্টা করত আবার কোথাও কেও নেই নাটকের বাকের ভাই হতে চাইতো অনেকেই অবার কারো কারো বিরক্ত লাগল নক্ষত্রের রাতের আবুল হায়তের ঝিমানো টাইপের অভিনয়কে। তথাপিও নাটকে বাবা-মা-ভাই-বোন-খালা-ফুপু'র উপস্থিতি থাকত, তো বাচ্চারাও পরিবারে থেকে পরিবার দেখেই বড় হত। বর্তমানে নাটক সিনেমায় - গুটিকতক বন্ধুবন্ধব, রুমে আড্ডা, কলিং বেলের আওয়াজ, চিপাচাপা পদর্শণ করে গেঞ্জি পরা বান্ধবীই নাটকের মূল অংশ, এখানে বাচ্চারাও সেটাই শিখবে এটাই স্বাভাবিক।

আমার ছেলে একদিন বলছে- আমি যখন বড় হয়ে সাইনটিস্ট হব তখন তোমরা আমার বাসায় আসবা, ইত্যাদি ইত্যাদি। কথাশুনে আমার কোন উত্তর আসছিল না বা কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না, ছেলেটা ওদিকে খোচাখুচি করে চলেছে কিছু বল না কেন, ভালো হবে না, বলো। আমি বললাম হুম, সে আবার হুম বলাটা একদম পচ্ছন্দ করে না, বলে বল- হ্যাঁ, হ্যাঁ বলতে পারো না তুমি। সে ছোট থেকেই দেখে আসছে তারা দাদা-দাদি বছরে ১বার আসে অথবা আসে না। আমরা যাই বছরে ১/২বার। চাকরী, খরচ, বাচ্চাদের স্বাস্থ্য, পড়াশুনা ইত্যাদি চিন্তা করে আর যাওয়া হয়ে ওঠে না ইচ্ছে থাকলেও। অতএব, এখানে সে শিখছে সংসার মানে স্বামী-স্ত্রী বাচ্চাকাচ্চা ১/২জন এই।
নাটক সিনেমা গল্প যেখানে যেদিকে তাকাবেন সেখানেই একই চিত্র।

এবার একটু ভিন্ন দিকে, নারী নির্যাতন নারী নির্যাতন করতে করতে নারীই যে নির্যাতনের মূল যন্ত্রে পরিণত হয়ে গেছে আমরা ভুলেই গেছি। এখন ছেলের বউ শ্বাশুরীকে দেখতে পারে না শ্বাশুরী ছেলেও বউকে দেখতে পারে না, তাদের মধ্যে লেগেই থাকে, আর ঘরে ননদ থাকলে তো কথায় নেই অর্থাৎ এক মেয়ে আরেক মেয়ের পেছনে। দুদিন বাদে সে যখন শ্বাশুরী হয় তখন তার ছেলেও বউ তাকে সহ্য করতে পারে না এটা আজ খুবই সাধারণ চিত্র ঘরে ঘরে। ছেলে ইচ্ছে করলেই বাবা-মাকে অনেক সব সময় সঙ্গে রাখতে পারে না এবং সব সময় তাদের কাছে যেতে পারে না বিভিন্ন পরিস্থিতির কারনে। বাস্তব জীবনে একটা উদাহরণ দেই- আমি যখন সাভারে থাকি তখন মাসে অনন্ত ১বার বাড়িতে যাই বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। হঠাৎ আমার বউ একদিন প্রশ্ন তুলছে এত কেন যেত হবে, পাশের বাসার ভাই তো যায় না। আমি কোন প্রশ্ন না করে শুধু বললাম ঠিক আছে তুমি একটু জানো কেন যায় না। তুমি শুধু বলবা - আমার উনি মাসে ১/২বার যাবেই বাকিটা উনি বলবে। ঠিকই পাশের বাসার ভাবি বলেছিল- এত বাড়িতে যেতে হবে কেন, এখন নিজেদের সংসার, এত টাকা ভাঙতে হবে কেন তাদের পেছনে, তার স্বামীও যেতে চান কিন্তু তিনি যেতে দেন না ইত্যাদি। আমি বুঝে নিয়েছিলাম আমার বউয়ের মাত্র মুখ খোলা শুরু- অতএব আমাকের এখান থেকে বাসা সিফট করতে হবে এবং ব্যপারটা আমার শ্বশুর পর্যন্ত পৌছাতে হবে। যাতে আমার নানী শ্বাশুরী পর্যন্ত পৌছায়, ২মাসের মধ্যে বাসা শিফট করে ২মাস বাড়িতে যাই নাই, আমার শ্বশুর ঠিকই ফোন করে তার মেয়েকে ঝাড়ি দিয়েছে কেন আমি বাড়িতে যাই না, নানী শ্বাশুরিও আমার বাসায এসেছে, আমি ব্যপারটা বলাতে সে অনেক বুঝিয়ে গেছেন নাতনীকে যে আমরা যা করব আমার ছেলেও তাই শিখবে। যতই শেখাক পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বা পরিবেশ যা শেখায় তার থেকে বড় কোন শিক্ষক নেই। সবার শ্বশুই শ্বাশুরিই এরকম না, সো দ্বণ্ড দেখানে স্বাভাবিক।

আবার এখানে যে শুধু বউ দায়ি তা কিন্তু না, দায়ি শ্বাশুরিও মানে আরেক মেয়ে। পৃথিবীতে সব মা চায় তার সব সন্তান সমান থাক যার ফলে কখনও কখনও কোন সন্তানের প্রতি জুলুম হয়ে যায় সেটা তারা ভুলেই যায় এবং প্রতিটি মায়ের একটা বিশেষ সন্তান থাকে যার প্রতি একটু অধিক টানে অন্যদের প্রতি জুলুজ করে ফেলে। এটা মাতৃত্বের অধিকার ও তাদের ভালোবাসার বৈশিষ্ঠ্য আমি দোষের কিছু দেখি না। অনেক বউ দেবর-ননদ একদম সহ্য করতে পারে না কিন্তু তার ভাই-বোন তাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে মহা টেনশনে থাকে। কিছু শ্বাশুরিও থাকে যারা ছেলের বউয়ের পক্ষের আত্মীয় স্বজন একদম সহ্য করতে পারে না কিন্তু মেয়ে পক্ষের আত্মীয় নিয়ে টেনশনে ঘুম নেই। ঘুরে ফিরে কিন্তু এক মেয়ে আরেক মেয়ের সাথে দ্বণ্ড, অধিকাংশ সময় ছেলেদের নিষ্ক্রীয় থাকতে হয় বউয়ের ধারালো চোখের চাহুনিতে।

এসব পরিস্থিতিতে অধিকাংশ সময় ছেলেদের মুখের দিকে তাকিয়ে মা-বাবা বড় ছাড় দিয়ে ছেলের সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়। কেন না ছেলে যদি বউকে শাসন করতে যায় অধিকাংশ সময় নারী নির্যাতন মামলা, যার আসামি স্বামী শ্বশুরু শ্বাশুরী দেবর ননদ যা থাকবে সব। গত কদিনই আগেই প্রথম আলোর একটা রিপোর্টে দেখলাম ৭৬% (সম্ভবত) নারী নির্যাতন মামলা ভুয়া। ইদানিং তো স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলাও করে দেখা যায়। আর নারী নির্যাতন মামলা একবার হলে তার জীবন শেষ। ৯০দিন অজানিম যোগ্য গ্রেফতার, থানা-পুলিশ-উকিল করতে গিয়ে সর্বশান্ত। সে দিকে বিবেচনা করে মা-বাবা চলে যান বৃদ্ধাশ্রমে। এসব চিন্তা করে ছেলে তার বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠতে বাধ্য হয় এবং সেই ছেলে ছেলেও বউ এক সময় কোন এক বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক এবং তার সন্তানেরা অট্টালিকায় বসে পোষ্ট করবে বাবা হল বৃক্ষের মত।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×