কখনও নিজেকে শুধু নিজের মনে হয় না, মনে হয় ঐ তারার।
তারারা কত দুরে থাকে কিন্তু কখনও ওরা এ-ত নিচে এসে নামে, মনে হয় এইতো সে .. যেমন তোমাকে।
বদ্ধ ঘরের জানালা গলে আকাশ দেখতে গিয়ে পর্দায় দৃষ্টি আটকে গেলেও মনের দরজা খুলে হুড়মুড়িয়ে ঢোকে হু হু আকাশ. এক্কা দোক্কা খেলে, কখনও দোলনার দোল দোলে, যেন ছোট্ট খুকী তুমি বায়না ধরেছো মেলায় যাবে।
সাথে সাথে সোরগোল বাধিয়ে প্রথমে এলো রাজ্যের যত বাজনদার, ঢাক- ঢোল ঝাঝর বাজতেই থাকে আর তার সাথে তাল মিলিয়ে আসে পুতুলনাচের ওস্তাদ কারিগর, বাজিগর জীবনের সবচাইতে ভয়ংকর খেলাটি দেখাবে বলে হাকডাক জুড়ে খুকিকে ডাকছে, সাত সমুদ্দুর আর তেপান্তরের মাঠে পেরিয়ে কত লক্ষ কোটি খেলনা নিয়ে এসেছে নানান দেশের রঙ বেরঙের দোকানীরা খুকি দেখবে বলে, কে যেন নিয়ে এসেছে এত বড় এক নাগরদোলা - যেখান থেকে হাত বাড়িয়ে আকাশ থেকে সূর্যকে পেড়ে আনা যাবে -
গাল ফুলিয়ে বসে আছে খুকি এখনও ওর ওখানে আসছে না বলে, পাহাড়ের মত বিশাল বিশাল খাবারের স্তুপ সাজিয়ে চারদিক থেকে ছুটে আসছে মৌ মৌ গন্ধ এই সময় বাজনা আর হল্লা ছাপিয়ে ভেসে এলো মেঘের ডাক, আর সাথে সাথে পূর্ব কোণের আকাশ কালো করে ধেয়ে আসছে চাদ সমান এক সমুদ্রের ঢেউ তার তোড়ে বুঝি ভেসে যাবে সব, এখান ওখান থেকে কারা জানি হল্লা করে ওঠে সেই হল্লার ভেতরে ঠিক খুকির সামনে দুই হাত করজোড় করে বসে পড়ে বিরাট ঢেউ এর মতো সেই ছাই রঙা হাতি মাথা ঝোকায়, আর তার উপরে বসে , ঝুকে এক ছোট্ট মাহুত তার দিকে তাকিয়ে...
কোথেকে ঢ্যাঙা দৈত্যের মতো আলখেল্লায় মোড়া এক জরিদার জাদুকর মাথা ঝুকিয়ে বলে খুকি এসো তোকে জাদু দেখাই - সে সোজা হয়ে আকাশে হাত বাড়িয়ে একটা ঝকমকে লাঠি পেড়ে কয়েকবার ঘুরিয়ে দাড়িয়ে পড়ে, মাথা নিচু করে তার কাছে মুখ এনে পাগড়ীর নিচ থেকে চোখের কোনে মিষ্টি হাসি হেসে বলে
- চারদিকে যা দেখছো সব আমি অদৃশ্য করে দিতে পারি, দেখবে
সাথে সাথে কোথায় কি সব সব বন্ধ দরজা জানালা ...
জাদুকরটা মায়া দিয়ে ঐ অলৌকিক মেলাটা মিলিয়ে দিল, ছোট্ট খুকীটা যে দুরে তারার নিচে ঘুমোনোর চেষ্টা করছে আসলে আরেকটা জাদু - জাদু কেটে গেলেই দেখবো ছোট্ট খুকি এখানেই আছে আদরের এই মেলায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



