বছরখানেক আগে শুনেছিলাম আমেরকিানরা নাকি কুকুর-বেড়ালের পেছনে বছরে ৫ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেন! এর মধ্যে নাকি শুধু কুকুর-বেড়াল মশাইদের আদব লেহাজ আর সহবত শেখাতেই ৬১০ কোটি টাকা খরচা হয়ে যায়...শুনলুম দিনদিন নাকি এই খরচও বাড়ছে...তাতো বাড়বেই যে র্দুমূল্যের বাজার...বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেই খুব চিন্তিত!!!
এই চিন্তার ফাঁকে ছোটবেলায় পড়া সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘পণ্ডিতমশাই’ গল্পের কথা মনে পড়লো...আপনাদের যাদের গল্পটি মনে নেই তাদের জন্য আরেকবার ভাসাভাসা স্মৃতি হাতড়ে গল্পটা আবারো বলার চেষ্টা করি (ভুলচুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন ভাই)....
বৃটিশ লালমুখো সাহেব স্কুল পরিদর্শনে আসবেন...এ কারনে স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক সকলেই তটস্থ...স্কুলের অঙ্কের পণ্ডিত মশাইও সদিন সাফ সুতরো ধুতি পরে এসেছেন....সাহেব এলেন, স্কুল পরিদর্শন করলেন...সাহেবের সঙ্গে এলেন সাহেবের পোষা ৩ পেয়ে কুকুর...বেচারার একটা পা নেই...সেও সাহেবের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে স্কুলের সব ক্লাস পরিদর্শন করলো...পণ্ডিত মশাই জানতে পারলেন সাহেবের এই কুকুরটির পেছনে মাসিক ব্যয় ৭৫ টাকা। খরচটা শুনে পণ্ডিত মশাই হিসেব কষতে বসলেন....তিনি নিজে বেতন পান ২৫ টাকা...তার পরিবারে তিনি ,তার স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, বৃদ্ধা মা ও পিসিসহ সদস্য সংখ্যা ৮ জন...তার মানে দাঁড়ায় তার গোটা পরিবার সাহেবের ৩ পেয়ে কুকুরের এক পায়ের সমান...!!!
গল্পটি অনেককাল আগের...এর মধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে...পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় অনেক জল গড়িয়েছে...কিন্তু মনে হয় না আমাদের খুব বেশি উন্নতি হয়েছে ..এখনো আমরা কুকুরের এক পাায়ের সমানই হয়ে রয়েছি... আর এ কারনেই ওনারা সবাই মা-বাপ আর আমরা সবাই ইয়ের বাচ্চা...
বি:দ্র : হাজার শতকোটি টাকার চুরির গল্প শুনে আর নিজের পকেটের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ মনে পড়লো আরকি পুরনো গল্পটা। দয়া করে কেউ সেন্টু খাবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩