স্বপ্নের দেশ নামে খ্যাত চীন এর একটি প্রশাসন, ম্যাকাও। সেখানে গিয়েছিলাম গত ৩ মে, ২০০৯। উদ্দেশ্য ওয়েব ২.০ এবং অনলাইন জার্নালিজম এর ওপর একটি আঞ্চলিক কর্মশালায় অংশগ্রহণ। প্রিয় সহকর্মী আরেফিন ফয়সল এবং আদিত্য শাহীন এর অনুরোধে লেখাটি লিখছি।
আমার ধারণা ছিল ওয়ার্কশপ বা কর্মশালা এ জাতীয় পদার্থগুলো স্রেফ বসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। আর, দিনশেষে চা-বিস্কিট খেয়ে বাড়ী ফেরা। এর থেকে বেশি কিছু নয়। মে মাসের ৪ তারিখ থেকে আমাদের ক্লাস শুরু হল।
এশিয়ার ৮টি দেশের মোট ৯জন সাংবাদিকদের অনলাইন জার্নালিজম প্রশিক্ষণ দিতে জার্মানীর ডিডাব্লিউ আকাদেমি থেকে উড়ে এসেছিলেন ৩ জন সাংবাদিক। পরবর্তীতে আরও একজন। ৪ তারিখ থেকেই বুঝতে পারলাম অনলাইন নিয়ে আমাদের যতটুকু জ্ঞান আমরা রপ্ত করতে পেরেছি বাংলাদেশে বসে, তা যথেষ্ট নয় এবং আরও অনেক কিছুই রয়েছে শেখবার এবং প্রয়োগ করবার।
একদিন কথায় কথায় উঠে এলো ব্লগিং এর বিষয়টি। ওয়েব+লগ= ব্লগ। এরকমই একটি ধারণা আমাদের দিতে থাকল ওরা। উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কারা ব্লগ লেখে এরকম একটি প্রশ্ন আমাদের সামনে আসল। আমি সামহোয়্যার-এ লিখছি এক বছরের মত। আমিই সঙ্গত কারণে হাতটা তুললাম।
ব্যাস। শুরু হল আমার সামহোয়্যার প্রেজেন্টেশন। সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টারএ্যাকটিভিটি নিয়ে সামহোয়্যার এর একজন ছোট লেখক হয়েও আমি সামহোয়্যার সম্বন্ধে বলতে শুরু করলাম। ওয়েব দেখে ওরা কিছু বুঝতে পারেনি কারণ তা ছিল বাংলায়। কিন্তু, বড় প্রজেক্টরে সামহোয়্যার এর ওয়েব-পৃষ্ঠাটি দেখতে ভালই লাগছিল আমার।
আরও ভাল লাগছিল, আমিই ছিলাম একমাত্র মানুষ যে ব্লগ লেখে। চাঁদের দেশে মানুষ পদার্পণের অনুভূতি।
ওদের কিছু প্রশ্ন ছিল যার উত্তর আমি পার করেছি এভাবে। যেমন, আমি জানি না সামহোয়্যার এর সম্পাদক কে। সামহোয়্যার এ লেখক মিটার থাকে কারণ একজন লেখক পর্যালোচনা না করে তার লেখা সরাসরি প্রথম পাতায় আসেনা। প্রশ্নগুলো কী ছিল তা নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে। আমি শুধু উত্তরগুলো তুলে দিলাম।
ওরা একটু অবাক হয়েছিল। তখন আমিও ওদের মনে করিয়ে দিলাম চাইলেই বিবিসি তে একটা অনলাইন কমেন্ট পোস্ট করা যায়না। বা হুট করেই একজন সাধারণ মানুষের লেখা বিবিসি ছাপায় না।
সামহোয়্যার এর উইজেট নিয়েও ওরা একটু অবাক হল। কারণ আরও সুশৃঙ্খলভাবে উইজেটগুলো আসতে পারত। তবে বিভিন্ন লেখক যে হাইপারলিংক এবং এমবেড করছে সে বিষয়টি ওদের কাছে ছিল দারুণ উপভোগ্য।
তবে, সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টারএ্যাকটিভিটি তে যে সামহোয়্যার অনেক এগিয়ে গিয়েছে সে বিষয়েও বললাম। সব মিলিয়ে ২০ মিনিটের ছিল আমার প্রেজেন্টেশন।
আরও কথা লিখতে পারতাম। কিন্তু এখন হাতে সময় খুব একটা বেশি নেই বলেই পারলাম না। তবে অনলাইন জার্নালিজম বলতে যা বুঝতাম তা আসলে অন্য একটি বিষয়, তাই বুঝে আসলাম।
ওদের বহুল প্রশংসা করতে এখানে বসিনি। কিন্তু, ওদের থিওরি এবং তার প্র্যাকটিকাল সেন্স দুটোর সমন্বয় আমার ভাল লেগেছে।
ওরা অবশ্য পডকাস্ট খুঁজছিল। আমিও খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। তবে, ওদের প্রধান প্রশ্ন সামহোয়্যার এর সম্পাদনার কাজটি কে করে। তার উত্তর আমি দিতে পারিনি।
ভাল লেগেছে সামহোয়্যার এর কেউ না হয়েও ব্লগ এর একটা প্রেজেন্টেশন করতে পেরে। আশা করছি ভবিষ্যতে আবার এ বিষয়টিতে দু-এক কলম লিখতে পারব যদি সময় অনুমতি দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০০৯ সকাল ১১:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




