দেশ এখন উত্তাল। জনস্রোত মিলছে শাহবাগে। শাহবাগে যাওয়া এবং না যাওয়া প্রসঙ্গে নানা বিতর্ক। অথচ মানুষ ছুটে চলছে। গণদাবি বলে কথা। এমন সময় একটু ভিন্ন ঘটনা শেয়ার করছি। কারণ, ঘটে যাওয়া সব ঘটনাগুলো কিন্তু আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই উত্তাল সময়ের কিছুটা বাইরে দুদিন কাজের প্রয়োজনে গিয়েছিলাম যশোরে। গতকালের একটা ঘটনা বলছি। সকালে শ্যুটিং এবং যাবতীয় ঝামেলা সেরে ঢাকার উদ্দেশে ফিরছিলাম আদিত্য শাহীন, মাহিন রনি, মুকুল, রিজভি নেওয়াজ, আনোয়ার এবং রাসেল-এর সাথে। উল্লেখ্য এই দলটির সাথেই গিয়েছিলাম যশোরে।
ফেরার পথে সংগত কারণেই চা বিরতি। ডাক্তার আমাকে বারণ করেছেন চা, কফি, গরু এবং খাসির মাংসসহ আরও কিছু ফল না খেতে। তো, আমার বিরতি মানে ‘গরুর-দুধ পান’ বিরতি। ফরিদপুরের কানাইপুরে তখন আমরা। একজন জীর্ণ মহিলা তার সন্তান নিয়ে চায়ের দোকানে বসে। গরুর দুধের চা বানায় মা-ছেলে। আমি গরুর দুধের হাড়ি দেখে মহা খুশী। বললাম, ‘চা খাবো না, শুধু এক গ্লাস দুধ দেন।’ দুধ থাকা সত্ত্বেও মহিলা বা তার সন্তান রাজী হল না। আমি বেশি দাম দেব বলার পরও রাজী হল না। খানিকটা বিরক্ত হয়ে বাজার ঘুরে গরুর দুধ খুঁজলাম, কিন্তু পেলাম না। গাড়ীতে ওঠার আগে আমি তখন একা দাঁড়িয়ে। রিজভি এসে আমাকে বলল, ‘মহিলা আমাকে বলল, দুধ গতকালের। খেলে শরীর খারাপ হবে তাই দেয়নি, আর কিছু না’।
কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমার চোখ ভিজেছিল। তাও আবার সামলে নিয়েছি। গাড়ীতে ওঠার আগে দেখলাম মা আর ছেলে মনোযগ দিয়ে কাজ করে চলেছে। কী অসাধারণ মানুষ ওরা!
শুনুন, এই ভাল মানুষদের দেশ আমার বাংলাদেশ। এমন মা বাংলাদেশেই আছে। এমন দেশ শুধু বাংলাদেশেই জন্ম নেয়। গুটিকয়েক লোকেরা হায়েনার মত দাঁত দিয়ে কামড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে দেশটাকে। আর কিছু লোক বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বদনাম করতে এক পায়ে খাঁড়া, সদা প্রস্তুত। আমার দেশ সবার উপরে। এই কথাটি এখন থেকে বলতে শিখি। কী হয়েছে তা না ভেবে কী হচ্ছে তাই নিয়ে ভাবি। কী ভাল হতে পারে তাই নিয়ে স্বপ্ন দেখি। চোখ মেলে দেখবেন কোটি কোটি মা আর সন্তান রয়েছেন এই বাংলাদেশে যারা নিজেদের ভালোবাসা ছড়িয়ে দিয়েছেন এই বাংলার মাটিতে। জয় হোক জনতার। জয় হোক বাংলাদেশের।
(ঘটনা খুবই সামান্য, কিন্তু আমার জন্য খুবই অসামান্য। ধন্যবাদ রিজভি)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




