somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফোবিয়ানের যাত্রী - মুহম্মদ জাফর ইকবাল (ষোল)

১৪ ই মে, ২০০৬ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি মিত্তিকার হাত এবং পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে তার মাথার কাছে রাখা বায়ো জ্যাকেটটি চালু
করে দিলাম। প্রায় সাথে সাথেই বায়ো জ্যাকেটের ছোট পাম্পটি গুঞ্জন করে ওঠে। আমি
মনিটরে দেখতে পেলাম তার রক্তের মাঝে দ্রবীভূত হয়ে থাকা নিহিলা গ্যাসটুকু পরিশোধন
করতে শুরু করে দিয়েছে। আমি মিত্তিকার মাথার কাছে চুপচাপ দাঁড়িয়ে তার মুখের দিকে
তাকিয়ে রইলাম, মেয়েটি সত্যিই অপূর্ব সুন্দরী, চেহারার মাঝে একধরনের সারল্য রয়েছে যেটি
সচরাচর চোখে দেখা যায় না। আমার এখনো বিশ্বাস হয় না যে মিত্তিকাকে আরেকটু হলে
ম্যাঙ্গেল ক্বাস একজন ঘাঘু অপরাধীতে পাল্টে দিতে চাইছিল।
আমি মিত্তিকার দিতে তাকিয়ে রইলাম, খুব ধীরে ধীরে তার দেহে প্রাণের চিহ্ন ফিরে
আসছে, মিত্তিকার মুখে গোলাপি আভা ফিরে এল, সে হাত-পা নাড়ল এবং একসময় ছটফট
করে মাথা নাড়তে শুরু করল। আমি তার হাত ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে ডাকলাম, "মিত্তিকা, চোখ
খুলে তাকাও মিত্তিকা।"
মিত্তিকা মাথা নেড়ে অস্পষ্টস্বরে কাতর গলায় কিছু একটা বলল, আমি ঠিক বুঝতে
পারলাম না। মিত্তিকার হাত ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে আমি আবার ডাকলাম, "মিত্তিকা। মিত্তিকা -"
মিত্তিকা হঠাৎ চোখ খুলে তাকাল, তার দৃষ্টি অপ্রকৃতস্থ মানুষের মতো বিভ্রান্ত। আমাকে
দেখে সে চিনতে পারল বলে মনে হলো না। মিত্তিকা অসহায়ের মতো চারিদিকে একবার
তাকিয়ে হঠাৎ করে আমার দুই হাত জাপটে ধরে বলল, "আমি কোথায় ? আমার কী হয়েছে ?"
"তোমার কিছু হয়নি মিত্তিকা।" আমি মিত্তিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, "তোমার
যেখানে থাকার কথা ছিল তুমি সেখানেই আছ।"
মিত্তিকার হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়ে গেল, আর্তচিৎকার করে ভয়ার্ত গলায় বলল,
"ম্যাঙ্গেল ক্বাস ?"
আমি হেসে বললাম, "তোমার কোনো ভয় নাই মিত্তিকা। ম্যাঙ্গেল ক্বাসকে নিয়ে আর
কোনো ভয় নাই।"
মিত্তিকা আতঙ্কিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "কোথায় আছে ম্যাঙ্গেল ক্বাস ?"
"এসো আমার সাথে, দেখবে।"
"না।" মিত্তিকা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, "দেখব না, আমি দেখব না।"
"দেখতে না চাইলে দেখো না, কিন্তু আমার মনে হয় এখন যদি তাকে দেখো তোমার খুব
খারাপ লাগবে না।"
"কেন ?"
"কারণ সে আর হাইব্রিড মানুষ নেই। তার ভেতরের যেটুকু অংশ যন্ত্র ছিল সেটা পুরোপুরি
ধ্বংস হয়ে গেছে। যেটা একসময় তার শক্তি ছিল এখন সেটা তার দুর্বলতা।"
মিত্তিকা একটু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল, মনে হলো সে আমার কথা ঠিক
বুঝতে পারছে না। কয়েকবার চেষ্টা করে বলল, "তুমি কী বলছ, আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
কে তাকে ধ্বংস করল ? কীভাবে করল ? কখন করল ?"
"সে অনেক বড় ইতিহাস।" আমি একটু হেসে বললাম, "তুমি আমার সাথে চলো নিজের
চোখেই দেখতে পাবে।"
মিত্তিকা অপারেশন থিয়েটার থেকে নেমে এল। আমি তার হাত ধরে তাকে নিয়ে করিডোর
ধরে হাঁটতে থাকলাম।
ক্লদ এবং মুশ আলাদা আলাদা দুটি চেয়ারে বসেছিল, তাদের হাত পিছনে শক্ত করে বাঁধা।
আমাকে দেখে ক্লদ বলল, "মহামান্য অধিনায়ক, আমার হাত দুটো খুলে দেবেন ?"
"কেন ?"
"অনেকক্ষণ থেকে আমার নাকের উপরের অংশ চুলকাচ্ছে।"
আমি রক্তে মাখামাখি হয়ে থাকা এই মানুষ দুজনের দিকে তাকিয়ে এক ধরনের সমবেদনা
অনুভব করলাম, একসময়ে নিশ্চয়ই তারা চমৎকার মানুষ ছিল, ম্যাঙ্গেল ক্বাস তাদেরকে আধামানুষ
আধা-জন্তুতে পরিণত করে দিয়েছে। আমি জানি না তাদের মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্থ জায়গা
আবার ঠিক করে দিয়ে আবার তাদের স্বাভাবিক মানুষে তৈরি করে দেয়া যাবে কি না।
ক্লদ আবার অনুনয় করে বলল, "মহামান্য অধিনায়ক ইবান, আপনি কি আমার হাত দুটি
খুলে দেবেন ?"
আমি মাথা নাড়লাম, বললাম, "না ক্লদ। সেটি সম্ভব নয়। আমি ঠিক জানি না তোমরা
ব্যাপারটির গুরুত্বটুকু ধরতে পেরেছ কি না। ম্যাঙ্গেল ক্বাস তোমাদের মস্তিষ্কে একধরনের অস্ত্রোপচার করে তোমাদের স্বাভাবিক চিন্তা করার ক্ষমতা অনেকটুকু নষ্ট করে দিয়েছে। আমার
পক্ষে এখন কোনো ঝুঁকি নেয়া সম্ভব নয়।"
ক্লদ কাতর মুখে বলল, "আপনি বিশ্বাস করুন মহামান্য ইবান আমি আপনার কোনো ক্ষতি
করব না।"
মুশও গম্ভীর মুখে মাথা নাড়ল, বলল, "আমিও ক্ষতি করব না।"
আমি মাথা নাড়লাম, "আমি দুঃখিত ক্লদ এবং মুশ, তোমাদের আরো একটু কষ্ট করতে
হবে। আমি কিছুক্ষণের মাঝে তোমাদের কিছু একটা ব্যবস্থা করব।"
ক্লদ এবং মুশ নেহায়েৎ অপ্রসনড়ব মুখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি মিত্তিকাকে নিয়ে
আরো একটু এগিয়ে গেলাম, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একেবারে কোনার দিকে আমি ম্যাঙ্গেল ক্বাসকে
বেঁধে রেখেছি। তাপ পরিবহনের টিউবগুলো যেখানে ঘরের মেঝেতে নেমে এসেছে সেখানে
ম্যাঙ্গেল ক্বাসের দুটি হাত ছড়িয়ে আলাদা করে বেঁধে রাখা হয়েছে। সে মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে
আছে, আমি সেখানেও কোনো ঝুঁি ক নিই নি, দুটি পা শক্ত করে বেঁধে রেখেছি। ম্যাঙ্গেল ক্বাসকে
দেখে মিত্তিকা আতঙ্কে চিৎকার করে আমাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরল। আমি ফিসফিস করে
বললাম, "মিত্তিকা, ভয় পাবার কিছু নেই। যখন তাকে ভয় পাবার কথা ছিল তখন যেহেতু
তাকে ভয় পাও নি এখন ভয় পেয়ো না।"
মিত্তিকা ভাঙা গলায় বলল, "কিন্তু, দেখো কী বীভৎস ! কী ভয়ানক !"
আমি তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই বীভৎস, সত্যিই ভয়ানক। একটি চোখ খুলে ঝুলছে,
চোখের গর্ত থেকে কিছু ফাইবার বের হয়ে আছে, মুখের ভেতর থেকে কিছু যন্ত্রপাতি বের হয়ে
আসছে, কিছু গালের চামড়া ফুটো করে ফেলেছে। হাত এবং পায়ের নানা অংশ থেকে ধাতব
অংশ শরীরের চামড়া ফুটো করে বের হয়ে এসেছে, সেসব জায়গা থেকে রক্ত চুঁইয়ে চুঁইয়ে
পড়ছে। ম্যাঙ্গেল ক্বাস যখন হাইব্রিড মানুষ ছিল তখন তার যন্ত্র এবং মানব অংশের মাঝে
চমৎকার একটি সমন্বয় ছিল, এখন নেই। এখন দেখে ভিতরে একটি আতঙ্ক হতে থাকে।
ম্যাঙ্গেল ক্বাস তার ভালো চোখটি দিয়ে আমাদের দিকে তাকাল, একটি যন্ত্রণাকাতর শব্দ
করে বলল, "ইবান, আমি তোমাকে বলছি আমাকে কীভাবে হত্যা করতে হবে।" সে কথাগুলো
বলল খুব কষ্ট করে, তার উচ্চারণ হলো অস্পষ্ট এবং জড়িত।
আমি বললাম, "আমি সেটা জানতে চাই না।"
ম্যাঙ্গেল ক্বাস অনুনয় করে বলল, "একটা চতুর্থ মাত্রার অস্ত্র নিয়ে আমার চোখের ফুটো
দিয়ে উপরের দিকে লক্ষ্য করে গুলি করলে মস্তিষ্কটি ছিনড়বভিনড়ব হয়ে যাবে -"
ম্যাঙ্গেল ক্বাসের কথা শুনে মিত্তিকা শিউরে উঠল, আমি তাকে শক্ত করে ধরে রেখে
বললাম, "ম্যাঙ্গেল ক্বাস, আমি তোমাকে হত্যা করব না। তোমাকে হত্যা করাই যদি আমার
উদ্দেশ্য হতো তাহলে তোমাকে ঐ উপগ্রহটিতে তোমার মৃত বন্ধুদের সাথে রেখে আসতে
পারতাম।"
"তুমি তাহলে আমাকে কী করতে চাও ?"
"তোমাকে কতৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে চাই।"
"আমি ভেবেছিলাম তুমি ভালো মানুষ। তুমি কাউকে কষ্ট দিতে চাও না।"
"আমি আসলেই কাউকে কষ্ট দিতে চাই না।"
"তাহলে কেন তুমি আমাকে হত্যা করছ না ?"
"কারণ আমি দীর্ঘদিন চিকিৎসা বিজ্ঞানের খোঁজ রাখি নি - হয়ত চিকিৎসা বিজ্ঞানের
অনেক উনড়বতি হয়েছে, হয়ত তারা তোমার মস্তিষ্ক সারিয়ে তুলতে পারবে, তুমি হয়ত আবার
একজন সাধারণ মানুষ হয়ে যাবে।"
ম্যাঙ্গেল ক্বাস তার বিচিত্র যান্ত্রিক মুখ দিয়ে অবিশ্বাসের মতো একটা ভঙ্গি করে বলল,
"তুমি সত্যিই সেটা বিশ্বাস কর ?"
"হঁ্যা করি।"
ম্যাঙ্গেল ক্বাস কয়েক মুহূর্ত আমার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর মাথা নেড়ে বলল, "কিন্তু
তাহলে সেই মানুষটি তো ম্যাঙ্গেল ক্বাস থাকবে না, সেটি হবে অন্য একজন মানুষ। আমি কি
অন্য মানুষ হতে চাই ?"
আমি একটু অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম, তার এই প্রশেড়বর উত্তর আমার জানা
নেই।
ম্যাঙ্গেল ক্বাস এবং তাদের দুই অনুচর ক্লদ এবং মুশকে তাদের ক্যাপসুলে ঢুকিয়ে, দেহগুলোকে
শীতল করে দীর্ঘসময়ের জন্যে সংরক্ষণ করতে আমার এবং মিত্তিকার দীর্ঘ সময় লেগে গেল।
সত্যি কথা বলতে কি মিত্তিকা না থাকলে আমার একার পক্ষে এ কাজগুলো করা দুঃসাধ্য
ব্যাপার ছিল। ক্লদ এবং মুশ খুব সহজেই তাদের ভাগ্যকে মেনে নিয়েছিল কিন্তু ম্যাঙ্গেল ক্বাসের
জন্যে সেটি ছিল অসম্ভব একটি ব্যাপার। ক্যাপসুলের কালো ঢাকনাটি যখন ধীরে ধীরে নেমে
আসছিল তখনো সে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কাতর গলায় তাকে হত্যা করার জন্যে
অনুরোধ করে যাচ্ছিল। কোনো একটি বিচিত্র কারণে ম্যাঙ্গেল ক্বাস বুঝতে পারছিল না যে
আসলে তার মৃতু্য ঘটে গেছে। একজন মানুষ যখন এভাবে মৃতু্য কামনা করে তখন তার বেঁচে
থাকা না-থাকায় কিছু আসে যায় না।
ম্যাঙ্গেল ক্বাস আর তার দুজন অনুচরকে নিরাপদে সংরক্ষণ করার পর আমি প্রথমবার
ফোবিয়ানের দিকে নজর দিলাম, নিউট্রন স্টারের প্রবল আকর্ষণ থেকে বের হয়ে আসার জন্যে যে
প্রচণ্ড শক্তিক্ষয় হয়েছে তার চিহ্ন সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। নিয়ন্ত্রণের মূল অংশটি ধ্বংস
হয়ে যাওয়ায় জরুরী অংশটি কোনোভাবে কাজ করছে। তাপ সঞ্চালনের অনেকগুলো টিউব
দুমড়ে মুচড়ে ফেটে গেছে। বিদু্য সঞ্চালনের একটি বড় অংশ অচল হয়ে গেছে। ফোবিয়ানের
দেওয়ালের কোথাও কোথাও সুক্ষ্ম ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে, ভেতর থেকে বাতাস বের হয়ে যাওয়ার
আশঙ্কা থাকায় ফোবিয়ানের অনেকগুলো অংশের জরুরী চাপ নিরোধক দরজা পাকাপাকিভাবে
বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ মডিউলের কিছু অংশও অকেজো হয়ে গেছে, গন্তব্য স্থানে নিয়মিত
যে সিগনাল পাঠানো হচ্ছিল সেটি বন্ধ হয়ে গেছে, সেটি আবার চালু করে না দিলে মহাজাগতিক
নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র ধারণা করতে পারে ফোবিয়ান নিউট্রন স্টারের আকর্ষণে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে
গেছে। সব মিলিয়ে এখন প্রচুর কাজ। কিছু কিছু এই মুহূর্তে শুরু করতে হবে।
কিন্তু সব কাজ শুরু করার আগে আমার মিত্তিকাকে তার শীতল ক্যাপসুলে ঘুম পাড়িয়ে
দিতে হবে। এই মহাকাশযানটিতে শুধুমাত্র তার অধিনায়কের থাকার কথা - এটি সেভাবেই
প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো একটি বিচিত্র কারণে আমার মিত্তিকাকে শীতল ক্যাপসুলে ঘুম
পাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছিল না - ইচ্ছে করছিল তাকে আমার পাশাপাশি রেখে দিই, কিন্তু সেটি
সম্ভব নয়। সে মহাকাশযানের একজন যাত্রী, তাকে নিরাপদে তার গন্তব্যে পেঁৗছে দিতে হবে।
একজন যাত্রীকে সারাক্ষণ তার শীতল ক্যাপসুলে ঘুমিয়ে থাকার কথা, আর এখন এই
মহাকাশযানের মোটামুটি বিপজ্জনক পরিবেশে তাকে বাইরে রাখা বেআইনি এবং বিপজ্জনক;
একজন মহাকাশযানের অধিনায়ক হিসেবে আমি কোনো অবস্থাতেই সেটি করতে পারি না।
মিত্তিকা নিজেও সেটা জানে কাজেই ম্যাঙ্গেল ক্বাস এবং তার দুজন অনুচরকে ঘুম পাড়িয়ে দেবার
পর সে আমাকে বলল, "এবার আমার পালা।"
আমি মাথা নাড়লাম, বললাম, "হঁ্যা।"
"মহাকাশযানের যে অবস্থা আমার মনে হচ্ছে তোমাকে সাহায্য করতে পারলে হতো -
কিন্তু তুমি তো জান আমি মহাকাশযানের কিছুই জানি না।"
আমি মাথা নাড়লাম, বললাম, "আমি জানি। তোমার জানার কথা নয়। আমাকে দীর্ঘদিনে
এসব শিখতে হয়েছে।"
মিত্তিকা চোখে একটু দুশ্চিন্তা ফুটিয়ে বলল, "তুমি কি একা এইসব কাজ শেষ করতে
পারবে ?"
আমার ইচ্ছে হলো বলি, না, পারব না। তুমি আমার পাশে থাকো - কিন্তু আমি সেটা মুখ
ফুটে বলতে পারলাম না। বললাম, "পারব মিত্তিকা। আমাকে সাহায্য করার জন্যে সাহায্যকারী
রবোটগুলি চালু করে দেব। নিউরাল নেটওয়ার্কে সব তথ্য রাখা আছে - কোনো সমস্যা হবে
না।"
মিত্তিকা কিছু বলল না একটা নিঃশ্বাস ফেলল। আমি বললাম, "এই মহাকাশযানের যাত্রী
হওয়ার কারণে তোমার অনেক দুর্ভোগ হলো মিত্তিকা। ফোবিয়ানের অধিনায়ক হিসেবে আমি
আন্তরিকভাবে তোমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তুমি যদি চাও আমি আনুষ্ঠানিকভাবে তোমার
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি।"
মিত্তিকা শব্দ করে হেসে বলল, "এর প্রয়োজন নেই ইবান, অধিনায়ক হিসেবে তুমি
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে পার - কিন্তু আমি কী করব ? আমার তো কোনো
আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা নেই, আমার প্রাণ বাঁচানোর জন্যে আমি কীভাবে ধন্যবাদ জানাব ?"
"ধন্যবাদ জানানোর কিছু নেই মিত্তিকা। আসলে আমরা খুব সৌভাগ্যবান তাই এত বড়
বিপদ থেকে রক্ষা পেয়ে গেছি।" আমি নিয়ন্ত্রণ প্যানেলের উপর রাখা কোয়ার্টজের গোলকের
ভিতরে সৌভাগ্য-বৃক্ষটিকে দেখিয়ে বললাম, "এই সৌভাগ্য-বৃক্ষে এতক্ষণ ফুল ফুটে যাওয়া
উচিত ছিল।"
"ঠিকই বলেছ। আমরা যে সৌভাগ্যবান সেটা জানার জন্যে আমাদের যেটুকু সময় বেঁচে
থাকার দরকার ছিল তুমি না থাকলে সেটা সম্ভব হতো না।"
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×