somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশী গল্পের ভাষান্তরঃ আমার মা কোথায়?

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূল গল্পঃ
কৃষ্ণা সোবতি

[কৃষ্ণা সোবতি হিন্দি সাহিত্যের একজন বিদগ্ধ লেখিকা৷ জন্ম ১৯২৫ সালে, পশ্চিম পাঞ্জাবে৷ তিনি নিজেই সরাসরি ১৯৪৭-এর দেশ বিভাগের ভোগান্তির শিকার৷ প্রথম উপন্যাস মিত্র মার্জনী প্রকাশিত হবার পরপরই তিনি হিন্দি সাহিত্যের একজন প্রভাবশালী লেখিকা হিসেবে আবিভর্ূত হন৷ এরপর তাঁর বেশকিছু সফল উপন্যাস প্রকাশিত হয়৷ দেশ বিভাগের উপর লেখা তাঁর সর্বশেষ উপন্যাস জিন্দিগিনামা, যা অবিভক্ত পাঞ্জাবের উপর রচিত একটি আকর গ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত৷ কৃষ্ণা সোবতির হিন্দি ভাষায় লেখা, কে. এস. দুগগালের ইংরেজি ভাষান্তরিত Where is My Mother থেকে বঙ্গানুবাদটি পত্রস্থ করা হলো]

বেশ কিছুদিন পর আজ রাতেই সে চাঁদের দিকে তাকাবার ফুরসত পেয়েছে৷ স্বপ্নের দেশ প্রতিষ্ঠার জন্যে সে জীবনপণ লড়াই করে চলেছে৷ চাঁদের দিকে তাকাবার ফুরসত কোথায় পাবে? ল্যে পেঁৗছাবার জন্য গুজরানওয়ালা, ওয়াজিরাবাদ ও আরো কত শহর থেকে শহরে একনাগাড়ে একটানা চারটা দিন ছুটে বেড়িয়েছে৷ এ শহর থেকে ও শহরে গাড়ির বহর নিয়ে ছুটে বেড়ানোর একটাই উদ্দেশ্য, পাকিস্তান নামে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা৷ এভাবে ছুটে বেড়ানোর মধ্যে তার নিজের কোন স্বার্থ নেই৷ ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধের খাতিরেই ইউনুস খান বালুচের এই ছুটে-চলা৷
ইউনুস খানের বাহিনীর গোলাবারুদের আঘাতে জনপদের পর জনপদ তবিত৷ নারী পুরুষ, শিশু আর বৃদ্ধের মর্মবিদারী আর্তনাদ ইউনুস খানের পাষাণহৃদয় ণিকের জন্যেও কেঁপে ওঠে নি৷ তার বাহিনী নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে৷ আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম৷ জলন্ত আগুনে নারী পুরুষ শিশু পুড়ে পুড়ে অঙ্গার হবার দৃশ্য দেখেও ইউনুস বালুচের মনে কোনই ভাবান্তর ঘটে নি৷ রক্তপাত ছাড়া আজাদী লাভ করা স্বপ্নের অতীত৷ প্রতিটি সংগ্রামই সফলতার মুখ দেখেছে হত্যা, নির্যাতন ও অনেক অনেক রক্তপাতের মাধ্যমে৷ এটা ইউনুস খানের বদ্ধমূল ধারণা৷ একটা নতুন রাষ্ট্রের জন্মের জন্যে ইউনুস রাতদিন অগি্নসংযোগ, লুণ্ঠন ও হত্যাযজ্ঞ নির্বিচারে চালিয়ে যাচ্ছে৷
রাতে ইউনুস বালুচের চোখ ঘুমে জড়িয়ে আসছে৷ কিন্তু ঘুমালে চলবে না, যে কোন ভাবে তাকে আজ রাতে লাহোর পৌঁছাতেই হবে৷ বড়কর্তাদের জানাতে হবে একটা কাফেরও জীবিত নেই৷ ইউনুস বালুচের ট্রাক লাহোরের উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছে৷ পথের ধারের দু'পাশের গ্রামগুলোতে প্রাণের কোন অস্তিত্ব আছে বলে মনে হচ্ছে না৷ ইউনুস হঠাত্‍ বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল রাস্তার পাশের ফসলের েেত অনেক মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে৷ এর আগে সে এই পথ দিয়ে যাবার সময় 'হর হর মহাদেব' ধ্বনির প্রতিবাদে 'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি শুনতে পেয়েছিল৷ সে সময়ও সে মানুষের ভয়ার্ত চাহনি আর আর্তনাদ শুনতে ও দেখতে পেয়েছে৷ কিন্তু তাতে ইউনুস বালুচের হৃদয় বিগলিত হয় নি৷
সে এখন দিব্যচোখে দেখতে পাচ্ছে মুসলমানদের জন্য অল্পদিনের মধ্যেই মুঘল সাম্রাজ্যের চেয়েও একটা বড় রাষ্ট্রের জন্ম হতে চলেছে৷ আজ রাত চারদিক জোছনার আলোয় ছয়লাব, ফুটফুটে চাঁদের আলোয় রাস্তার দু'পাশের সবকিছু দৃশ্যমান, হত্যাযজ্ঞের নির্মমতার চিহ্ন এখানে ওখানে ছড়ানো৷
'ট্রাক থামাও, ট্রাক থামাও', ইউনুস খান চিত্‍কার করে ড্রাইভারকে হুকুম করে৷ রাস্তার পাশে ছায়ার মতো কী যেন একটা দেখা যাচ্ছে৷ হঁ্যা, ছোট মত একটা ছায়া, না, ছায়া নয়, একটা ছোট্ট মেয়ে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে৷ গায়ের জামাটা রক্তে ভেজা৷ কেন সে ড্রাইভারকে ট্রাক থামাতে বলল? ইউনুস খানের মনে প্রশ্নটা উদয় হয়৷ কোনো মৃতদেহ দেখে কখনোই তার কোনরূপ ভাবান্তর হয় নি৷ এই কয়দিনে সে শতশত মৃতদেহ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় এখানে ওখানে পড়ে থাকতে দেখেছে৷ নিজ চোখে শিশু হত্যা অবলোকন করে তৃপ্ত হয়েছে৷
না, এই শিশুটাকে সে ট্রাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেবে৷ শিশুটাকে বাঁচিয়ে তোলার জন্যে সে আপ্রাণ চেষ্টা করবে৷ কিন্তু কিসের জন্যে সে এটা করতে চলেছে? ইউনুস বালুচ নিজের মনকে প্রশ্ন করে৷
না, সে মেয়েটিকে ওখানে ঐভাবে ফেলে রেখে যাবে না৷ কিন্তু মেয়েটি যদি কাফের হয়!
সে তার দু'হাত দিয়ে মেয়েটিকে জাপটে ধরে মাটি থেকে তুলে ট্রাকের সামনের সিটে শুইয়ে দেয়৷ মেয়েটি চোখ তখনো বন্ধ৷ মাথা থেকে রক্ত ঝরছে৷ মুখটা ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে৷ সারাটা শরীর রক্তে ভেজা৷
ইউনুস খান তার হাতের আঙ্গুলগুলো দিয়ে শিশুটির চুল ও চুলের বিনুনী স্পর্শ করল৷ শিশুটির প্রতি তার কেন যেন মায়া হল৷ এর আগে ইউনুস খানের মনে এই ধরনের অনুভূতি কখনো দেখা দেয় নি৷ কী কারণে তার মনে এ ধরনের দয়ার উদ্রেক হচ্ছে তা সে নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না৷
মেয়েটি অচৈতন্য অবস্থায় ট্রাকের সিটে শুয়ে আছে৷ সে জানে না এখন যে হাতের স্পর্শ তার শরীরে পড়েছে ঐহাতই হয়ত তার স্বজনদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে৷
ইউনুস বালুচ জীবনে এভাবে একটা শিশুকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে নি৷ মেয়েটির অর্ধনিমিলিত চোখের পর্দায় তার নিজের বোন নূরানের ছবি ভেসে ওঠে৷ ইউনুসের মনে এখন তার নিজ বাড়ি কোয়েটা শহরের ছবি৷ মা তার বোন নূরানকে রেখে মারা গেলেন, বোনটি চিরদিনের জন্যে এতিম হয়ে গেল৷ সামান্য কয়েকদিন যেতে না যেতেই তার বোন নূরানও তার মায়ের সহযাত্রী হল৷
ইউনুস বুঝছে দ্রুত সময় গড়িয়ে যাচ্ছে৷ মেয়েটিকে বাঁচাতে হলে তড়িত্‍ বেগে ট্রাক ছুটিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে হবে৷ দ্রুতবেগে ট্রাকটা ছুটে চলেছে সামনের দিকে৷ চেষ্টা করলে হয়ত মেয়েটাকে বাঁচানো যেতে পারে৷ কিন্তু কেন সে মেয়েটিকে বাঁচিয়ে তুলবে যেখানে সে নিজেই শত শত শিশু, বৃদ্ধবৃদ্ধাকে হত্যা করেছে? ইউনুস খানের মনের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷ এক সময় তার মনের দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান হয়৷ সে ভাবল, এই মেয়েটি কি তাদের সংগ্রামের প্রতিবন্ধক হতে পারে? এই মেয়েটি পাকিস্তান নামক নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কতটুকুই বা প্রতিবন্ধক? ইউনুস নিজের মনকে প্রশ্ন করে৷
সামনেই লাহোর৷ গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোডের সমান্তরালে রেলপথ লাহোরের দিকে ছুটে চলেছে৷ ওইতো শাহদারা৷ মেয়েটিকে সে স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে ভর্তি করাবে না৷ হিন্দুদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করালে মেয়েটিকে ওরা ফেরত দেবে না৷ ওকে মেয়ো মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, ইউনুস মনে মনে ভাবে৷
মেয়ো হাসপাতালের ডাক্তারকে কাছে সে জানতে চায়, 'শিশুটিকে কি বাঁচানো যাবে?' ডাক্তার প্রতু্যত্তরে বললেন, তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন৷ শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা চলছে৷ ওদিকে ইউনুস বালুচও তার কর্তব্যকর্ম যথা নিয়মে করে চলেছে৷ গ্রামগুলোতে জ্বালাও পোড়াও সমান তালেই চলছে৷ অন্যকাজ করার ফুসরত তার কোথায়! তবুও সময় পেলে সে শিশুটির বিছানার পাশে এসে বসতে কসুর করছে না৷
লাহোর তখনো জ্বলছে৷ ইউনুস বালুচ দেখে রাস্তার পাশের অাঁস্তাকুড়ে স্তূপাকারে মৃতদেহ পড়ে আছে৷ মহিলাদের উলঙ্গ মৃহদেহও ওর মাঝে রয়েছে৷ ইউনুস খান গতকাল পর্যন্ত শিকারের আশায় হন্যে হয়ে ছুটে বেড়িয়েছে৷ আজ সে যেন কিছুটা বিমর্ষ ও উদাসীন৷ সন্ধ্যার পর থেকে তার মাঝে আবার কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেল৷ এক সময় তার মনে হল হাসপাতালটা হাসপাতাল নয়, ওটা যেন নিজের বাড়ি৷ সে প্রায়ই মেয়েটির বেডের পাশেই কাটাচ্ছে৷ ণে ণে মনটা বিপ্তি হয়ে উঠছে৷
সে কেন একটা অচেনা অজানা মেয়ের জন্য এতটা উদ্বিগ্ন? মেয়েটি কি তার নিজের সমপ্রদায়ের? সে তো হিন্দু-কাফের! তার মনে হচ্ছে হাসপাতালের গেট থেকে মেয়েটির বেডের দূরত্ব বেশ কয়েক যোজন৷ সেখানে পৌঁছাতে ইউনুস বালুচকে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে৷ মেয়েটি তখনো হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী, মাথায় ব্যান্ডেজ, চোখদুটো বন্ধ৷ হয়ত সে চোখ বুঁজে পিছনে ঘটে-যাওয়া ঘটনাগুলো স্মৃতিতে ফিরিয়ে আনবার চেষ্ট করছে৷ সেসব দৃশ্যের কথা চিন্তা করলেও গা শিউরে ওঠে৷
ইউসুন ভাবছে মেয়েটিকে সে কী বলে সম্বোধন করবে? তার বোনের নামে? নূরান নামটা তার ঠোঁটের কোণায় এসে হাজির৷ সে হাতটা বাড়িয়ে দেয় মেয়েটির মাথায়৷ হঠাত্‍ মেয়েটি তার দিকে ফিরে চিত্‍কার করে উঠল, 'ক্যাম্প, ক্যাম্প, জান বাঁচানোর জন্যে পালাও৷'
'ভয় পেয়ো না, চোখ খোল, সোনামণি,' ইউনুস শিশুটিকে সাহস দিয়ে বলল৷
ঠিক ঐ সময় মেয়ো হাসপাতালের ডাক্তার তার দিকে তাকিয়ে বলেন, 'ওর জন্যে আপনার আর কিছুই করার দরকার নেই৷ ও আপনাকে দেখে ভয় পায়৷ কারণ সে মুসলমান নয়, কাফের৷'
কাফের শব্দটা ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয়ে ইউনুস খানের কানে প্রবেশ করল৷ মেয়েটি কাফের! তাহলে কেন সে তাকে রা করতে গেল? অথচ সে ওকে নিজের বোনের মত লালনপালন করতে চায়৷
দ্বিধাদ্বন্দ্বের মাঝে দিন কেটে গেছে৷ ইউনুস খানের কাজের কিন্তু কোনরকম বিরাম নেই৷ মেয়েটি ঘুমিয়ে থাকলে ইউনুস খান তার কর্মশেষে প্রায়ই তাকে দেখতে হাসপাতালে আসে৷
এক সময় মেয়েটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে৷ একদিন সন্ধ্যায় ইউনুস খান মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে আসে৷ মেয়েটি তার কালো মণির চোখ মেলে ইউনুস খানের দিকে তাকায়৷ উভয়ের চোখেই আতঙ্ক ও সন্দেহ৷ ইউনুস মেয়েটিকে খুশি করার জন্যে আদর-মাখানো সুরে কথা বলার চেষ্টা করে৷ মেয়েটির চেহারায় বোঝা যায় সে বড়ই ভীত৷ সে এই ভেবে আতঙ্কিত, ওই লোকটা তাকে এক সময় গলা টিপে হত্যা করবে৷ গলা টিপে হত্যা করার বহুদৃশ্য সে নিজের চোখে দেখেছে৷ মেয়েটি কিছু সময় চোখ বন্ধ করে কী যেন ভাবতে থাকে৷ কালরাতের ভয়ার্ত দৃশ্যগুলো মেয়েটির মনের পর্দায় ছবির মত একের পর এক ভেসে উঠছে৷ নিজ ভাইয়ের মাথাটা ধারাল ছোরার আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করার দৃশ্যটা মেয়েটির চোখে স্পষ্ট ভাসে৷
ইউনুস খান স্নেহের সুরে মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলে, 'এখন তুমি সেরে উঠেছ৷ তোমাকে বাড়ি নিয়ে যাব৷'
শিশুটি চিত্‍কার করে বলে, 'না না, কখনোই না৷ আমার কোন বাড়ি নেই৷ আমি তোমার সঙ্গে যাব না৷ তুমি আমাকে মেরে ফেলবে৷'
'আমি? আমি কেন তোমাকে মেরে ফেলতে যাব? তুমি তো আমার বোনের মতো,' ইউনুস অনুচ্চ স্বরে বলল৷ তার মৃত বোন নূরানের কথা মনে পড়েছে৷ আবার মনে হয় এই শিশুটি নূরান হতে যাবে কেন? ওতো হিন্দু৷ সে কী সত্যি সত্যি তাকে দেখে ভয় পায়?
মেয়েটি বলল, 'আমি বাড়ি যেতে চাই নে, আমাকে রিফুজি ক্যাম্পে পাঠিয়ে দাও, আমি ক্যাম্পে যেতে চাই৷'
ইউনুস মেয়েটির চোখের দিকে তাকাবার সাহস হারিয়ে ফেলে৷ সে এখন কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না৷ সৈনিক ইউনুস খান সমবেদনার দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকায় এবং নরম সুরে বলে, 'আমি তোমার আপনজন৷'
মেয়েটি চিত্‍কার করে বলে উঠে, 'না না৷' সে ভাবল, ইউনুস তাকে একবার ট্রাকে তুলতে পারলেই নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে৷ তাই সে ইউনুস খানের হাত জড়িয়ে ধরে মিনতি ভরা কণ্ঠে বলে, 'খান সাব, আমাকে মেরে ফেল না, ভগবানের দিব্যি তুমি আমাকে মেরে ফেল না৷'
ইউনুস খান মেয়েটির মাথায় হাত রেখে স্নেহের সুরে বলে, 'বোন, তোমার ভয় পাবার কিছুই নেই, আমাকে দেখে ভয় পেয়ো না, আমি তোমাকে রা করার জন্যে এখানে আছি৷'
শিশুটি হঠাত্‍ উত্তেজিত হয়ে পড়ে৷ সে ইউনুস খানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করলে সে তাকে জাপটে ধরে৷ শিশুটি তখন চিত্‍কার করতে থাকে, 'আমাকে রিফুজি ক্যাম্পে নিয়ে চল৷'
ইউনুস বালুচ ধৈর্য ধারণ করে শিশুটিকে বোঝাবার চেষ্টা করতে থাকে, 'তোমার ভয় পাবার কিছু নেই, তোমার এখন ক্যাম্পে যাবার প্রয়োজন নেই, তুমি আমার বোনের মতই আমার সঙ্গে থাকবে, আমার বাড়িতে৷ তুমি আবার মরে যাওয়া ছোট বোনটির মতো৷'
মেয়েটি চিত্‍কার করে উঠে৷ সে তার ছোট বদ্ধমুষ্টি দ্বারা বালুচটির বুকে আঘাত করতে থাকে আর বলতে থাকে, 'না না, তুমি আমাকে মেরে ফেলবে৷'
তারপর এক সময় শিশুটি উচ্চকণ্ঠে কেঁদে উঠে, 'আমি আমার মাকে চাই, আমার মা কোথায়?'
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×