somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুরবানী বন্ধে দেওবন্দ প্রধান- মারগুব থেকে আবুল কাশেমের আহ্বান ও দেওবন্দীদের আমল এবং এদেশীয় দেওবন্দীদের যোগসাজশ ও থানভীর হিন্দুপ্রীতি

৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(১)
‘দেও’ মানে ‘দৈত্য’। ‘বন্দ’ মানে বন্ধ করা। আক্ষরিক অর্থে ‘দেওবন্দ’ মানে হয় যেখানে ‘দৈত্যকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।’ দেওবন্দ সম্পর্কে রয়েছে এমন হাজারো জনশ্রুতি। যা মূলত জায়গাটি প্রতি বদ তাছিরেরই ইঙ্গিত বহন করে।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বিয়ামত হওয়ার আগে, আখিরী জামানায় অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে। তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শুননি, তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষ শুনেনি। তোমরা তাদের কাছে যেয়ো না। তাদেরকে তোমাকের কাছে আসতে দিয়ো না তবে তারা তোমাদের গুমরাহ করতে পারবে না।” (মুসলিম শরীফ)
স্মর্তব্য, ইসলাম ধর্মের মৌলিক মহত্ব হলো কুরবানী বা আত্মত্যাগ করা। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ স্বীয় ছেলেকে কুরবানী করে মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি হাছিল করেছিলেন।
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উসীলায় উম্মতে হাবীবী সে কুরবানীরই নিদর্শন ব্যক্ত করে তথা মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি হাছিল করে পশু কুরবানীর মধ্য দিয়ে।
উল্লেখ্য, পশু কুরবানীর মধ্যে গরু কুরবানীকে বলা হয় শেয়ারে ইসলাম। কারণ পৌত্তলিকরা গরুকে দেবতা মনে করে; অপরদিকে মুসলমানরা গরুকে পশু মনে করে কুরবানী করে।
মূলত, মুসলমানদের গরু কুরবানী দেয়ার ইতিহাস অতি প্রাচীন। এ নিয়ে ঘটে গেছে অনেক যুগান্তকারী ঘটনা। বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার প্রসার বলতে গেলে গরু কুরবানীকে কেন্দ্র করেই। গরু কুরবানী দেয়ায় এক মুসলমানের উপর সিলেটের রাজা গৌরগোবিন্দের নির্মল অত্যাচারের কাহিনী হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কানে পৌঁছাতেই তিনি গৌরগোবিন্দের বিরুদ্ধে জিহাদ করেন এবং এদেশে ইসলাম প্রচার করেন।
ইতঃপূর্বে ভারতে মৃত ইন্দিরা গান্ধী গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করায় তার নির্মম পরিণিত সবারই জানা।
‘ভারতে গরু কোরবানি পরিহার করতে দেওবন্দ মাদরাসার আহ্বান’
গত ৬ নভেম্বর/২০১১ ঈসায়ী ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু কোরবানি না করতে মুসলমানদের প্রতি আহবান জানিয়েছে। দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর মওলানা আবুল কাসিম নোমানি আজ (রোববার) এক বিবৃতিতে বলেছেন, “হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে এ শিক্ষাকেন্দ্র আগামীকাল ঈদুল আজহার দিন গরু কোরবানি পরিহার করার আহবান জানাচ্ছে”। একইসঙ্গে তিনি পশু কোরবানির পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে ভারতের স্বাস্থ্য বিভাগকে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে। [দ্যা হিন্দু, জি নিউজ, আইবিএন]
দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর মৌলানা আবুল কাশেমের গরু কুরবানী বন্ধের এ আহবানের প্রেক্ষিতে “আখিরী যামনায় দাজ্জাল আসার আগে অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে। তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষ শুনেনি।” এ হাদীছ শরীফ-এর ভাষ্যমতে তাকে অন্যতম দাজ্জাল বলেই সান্তনা খুঁজে পাওয়া যায়। দেওবন্দের দেওয়ের তাছিরে ওদের প্রধান তথা ভাইস চ্যান্সেলরও যে কি রকম মিথ্যাবাদী দাজ্জাল হতে পারে; তা স্পষ্টতই অনুভব করা যায়।
(২)
“সূরা ইউসূফ”-এর শেষ আয়াত শরীফ-এর প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পরবর্তীদের জন্য নসীহতস্বরূপ।
আর ইতিহাসের ইতিহাস হচ্ছে যে, ইতিহাস থেকে অনেকেই শিক্ষা নেয় না। ইতিহাস আয়নাস্বরূপ। কিন্তু সে আয়নায় আমরা তাকাতে চাই না। না তাকিয়ে সমসাময়িক অনুষঙ্গকেই মূল্যায়ন করে বসি।
অথচ ইতিহাসের আয়নার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব আজকের ঘটনাবলী, আজকের ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতিচিত্র ধারাবাহিকভাবে ইতিহাসের আয়নায় প্রতিবেষ্টিত হয়ে আছে। যদিও সে তিক্ত প্রতিক্রিয়া অনেকের জন্যই মেনে নেয়া কঠিন।
একটি মহলের কাছে আজকের তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দ ও এদেশীয় খতীব খুব উচ্চ মার্গের বিষয়। এ অনুভূতিটা তারা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্তির মতোই জিইয়ে রেখেছে। যেমন, কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তাদেরকে যখন বলা হয় মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে এসো। তখন তারা বলে আমরা কি সে পথ ছেড়ে দিব যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদা ও মুরুব্বীদের পেয়েছি?”
ঠিক আজকের তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দ ও তথাকথিত দেওবন্দী গং তথা তথাকথিত দেওবন্দী খতীব, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা বা যারা আজকে ইসলাম থেকে, কুরআন-সুন্নাহ্র আমোঘ আহকাম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে তারপরেও তাদেরকে তালাক দিতে তাদের অনুসারীরা যুগপৎ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও জড়তার মধ্যে রয়েছে।
কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হালালও স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট।” সুতরাং এরূপ সুস্পষ্ট নীতিমালা ও দলীল তথা বাইয়্যিনাত থাকার পরও তা মূল্যায়ন না করে তথাকথিত আসাতিজে দেওবন্দ বা উস্তাদবর্গের অন্ধ মুহব্বত ও অনুকরণেই মত্ত থাকা নির্ভেজাল মুরুব্বী পূজা ছাড়া কিছুই নয়।
প্রকৃতপক্ষে একে শুধু মুরুব্বী পূজা বললেও ভুল হবে। এটা প্রকারান্তরে কাদিয়ানীদের দোসর সাজা তথা নব্য কাদিয়ানী দাবি করারও শামিল।
কারণ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রাপ্ত ওহীর মাধ্যমে যে শরীয়ত প্রচার করেছেন- যুগের দোহাই দিয়ে, শাসকের ভীতি অথবা অনুকম্পার আশায় সর্বোপরি নফসের স্বার্থে সুস্পষ্ট হারাম-হালালের বিপরীত ফতওয়া দেয়া কার্যত নিজেদেরই মনগড়া শরীয়ত প্রবর্তন করা তথা নতুন নবী-রসূল দাবি করার শামিল।
স্মর্তব্য, ইসলামী অধিষ্ঠান গণতন্ত্রের মত নয় যে, যেভাবেই চলুক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তা চলতেই থাকবে।
ছয় লক্ষ বছরের ইবাদতকারী মুয়াল্লিমুল মালাকুত ইবলিস মহান আল্লাহ পাক উনার একটা আদেশ অমান্য করার কারণেই মালউন তথা ইবলিসে পরিণত হলো।
জলীলুল্ ক্বদর রসূল হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম উনার ছেলে কেনান কাফিরদের দলভুক্ত হলো।
বালাম বিন বাউরা প্রখ্যাত ছূফী ও আলিম থাকার পরও মরদুদ হলো। অথচ তার দরবারে সবসময় দশ হাজার আলিম তা’লীম নেয়ার জন্য সরগরম থাকতো।
নিকট ইতিহাসে আফজালুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় আবুল ফজল, ফৈজী, আজকের দেওবন্দী মাওলানা-খতীবদের চেয়ে অনেক উচুঁ দরের মাওলানা ছিলো।
সুতরাং এত উচুঁ দরের মাওলানা হওয়ার পরও ক্ষমতা ও অর্থের লোভী হয়ে গুমরাহ হওয়ার জন্য তারা এত মশহুর হতে পারে;
সেক্ষেত্রে আজকের তথাকথিত দেওবন্দী খতীব, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা গং তথা খোদ দারুল উলুম দেওবন্দও ক্ষমতা ও অর্থের লোভী তথা প্রতিপত্তির আশঙ্কায় সুস্পষ্ট কুরআন-সুন্নাহ্র আহকামকে অস্বীকার করার প্রেক্ষিতে তাদেরকে গুমরাহ, ফাসিক ও বিদ্য়াতী বলা যাবে না আর বললেও তাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে কুফরী হবে না এটা কুরআন-সুন্নাহ্র কোথায় আছে?
মূলত, আজকে সত্যিকার অর্থে অবস্থা যখন তাই এটা এখন ফরয তাদেরকে সেভাবেই চিহ্নিত ও প্রতিহত করার।
সেক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী বলে আজকের তথাকথিত দেওবন্দীরা যতই হল্লা-চিল্লা করুক, তাদেরকে জবাব দিতে হবে যে, ইবলিসের ছয় লক্ষ বছরের ঐতিহ্যের তুলনায় তাদের দেড়শ বছরের ঐতিহ্য কিছুই নয়। ঐতিহ্য নয়, ইসলামের দৃষ্টিতে কুরআন-সুন্নাহ্ই বড়।
আর ঐতিহ্য বলতে এটাও যে, যামানার মুজাদ্দিদের আগমন প্রেক্ষাপটে ঐতিহ্যবাহী নামধারী আলিম-উলামাও বিচ্যুতিতে চলে যায় এবং তাদের হাত থেকে রক্ষা করে সনাতন ইসলামকে পুনঃজাগরিত করার পূর্ণ রূহানী যোগ্যতা নিয়েই মুজাদ্দিদে যামানগণ আবির্ভূত হন।
তথাকথিত ঐতিহ্যবাহী নামধারী উলামাগণ যে কিরূপ বিচ্যুতিতে পড়তে পারে তার একটি উদাহরণ মৃত খতীব উবায়দুল হক।
তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক তার “আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা” শীর্ষক বইয়ে তাদের দেওবন্দী আকাবিরদের আদর্শ বয়ান করে বলেছে যে, “তারা মেয়েদের দিকে দৃষ্টি তো দিতেনই না এমনকি কোথাও নছীহত করতে গেলে মাঝে শক্ত পর্দা তো থাকতই তদুপরি যে পাশে মহিলারা রয়েছে পর্দার ওপাশে তার উল্টোমুখ হয়ে বসতেন। যাতে মহিলারা কেউ উঁকি দিয়ে নছীহতকারী পুরুষকেও দেখতে না পারে।”
সেক্ষেত্রে আজকে বাংলাদেশে দেওবন্দীদের মৃত নেতা তথাকথিত খতীব উবায়দুল ছাহেবসহ অনেক দেওবন্দী নেতার মেয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। মৃত খতীবের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মৃত খতীবের মেয়ে পাতলা জামদানী শাড়ী পড়েই খোলামেলা চলাফেরা করছে। ছবিও তুলছে। এমনকি থার্টি ফাস্ট নাইট পালনেও অংশগ্রহণ করেছে।
অথচ এসব বিষয়ে মৃত খতীবের কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। যদিও হাদীছ শরীফ-এর ভাষায় সে দাইয়্যূস সাব্যস্ত হয়। তবু সে নির্বিকার। এর কারণও রয়েছে বটে।
মুরুব্বী পূজাই যেহেতু দেওবন্দী সিলসিলার বাতিক, সেহেতু এই উৎসাহ তথাকথিত খতীব লাভ করেছিলো খোদ দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মাওলানা তথা ভাইস চ্যান্সেলর মৌলানা মারগুবুর রহমানের কাছ থেকে।
ইন্টারনেট সূত্রে পাওয়া যায়:
বিশ্বায়নের যুগে দেওবন্দে একদিন
সম্প্রতি ভারতের দেওবন্দের ইসলামিক মাদরাসাগুলো পরিদর্শনে গিয়েছিলো নেদারল্যান্ডের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো যোগিন্দার সিকান্দ। দেওবন্দ থেকে ফিরে এসে সে তার নিজস্ব সাইট কালান্দারে সেখানকার মাদরাসা শিক্ষা, উগ্রবাদীদের নিয়ে প্রধান মৌলভীর দৃষ্টিভঙ্গি, মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় মৌলভীদের বক্তব্য ও মাদরাসা ছাত্রদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তার উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ পাঠকদের জন্য দেয়া হলো:
দেওবন্দ মাদ্রাসার সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর মা’লানা মারগুব নিজেকে নারীদের উচ্চশিক্ষার পক্ষে বলে জানালেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার নিজের কন্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। নাতনীও এখন আলিগড়ে ডিগ্রি নেয়ার জন্য পড়ছে। (যেমন এদেশীয় দেওবন্দী খতীব ওবায়দুল হকের মেয়ে বেপর্দার উদাহরণ তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে।)
মৌলভীপ্রধানের কক্ষ থেকে দু’রকমের অনুভূতি নিয়ে বেরিয়ে এলাম। তিনি নারীদের উচ্চশিক্ষার যথেষ্ট গুণগ্রাহী হলেও নিম্ন পদমর্যাদার দেওবন্দী উলামাদের অনেককেই আধুনিক শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণের চরম বিরোধিতা করতে দেখেছি।” (আমাদের সময়, ৩ ডিসেম্বর/২০০৫, পৃষ্ঠা নং- ৬)
মূলত, ইসলামের দৃষ্টিতে পর্দার খিলাফ হওয়ার জন্য প্রতিবেদনে উল্লিখিত “নিম্ন পদমর্যাদার দেওবন্দী উলামারা” বিরোধিতা করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
উল্লেখ্য, দেওবন্দীদের এ ইতিহাস নতুন নয়। দেওবন্দীদের গুরু আশরাফ আলী থানভীই এ নীতির পৃষ্ঠপোষক। সে তার বইয়ে লিখেছেন, শেরুওয়ানী আচকান এগুলো পড়বে বিত্তশালী মুসলমানরা। আর গরিব শ্রেণীর মুসলমান পড়বে সুন্নতী কোর্তা, লুঙ্গী ইত্যাদি। (নাউযুবিল্লাহ) ইসলামকে তারা কোথায় ঠৈকিয়েছে?
মূলত, এ বোধের আলোকেই তারা আজকে প্রতিভাত করতে চাচ্ছে যে, উচ্চ শ্রেণীর মুসলমানরা পর্দা করবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, সমাজের উচ্চবিত্ত ফ্যাশনওয়ালাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে, থার্টি ফাস্ট নাইট করবে ইত্যাদি। আর নিম্নপদস্থ ও নিম্নবিত্ত তারা কেবল পর্দা করবে, বোরকা পড়বে। (নাউযুবিল্লাহ)
তাদের মধ্যে যেন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা তথা হিন্দুপ্রীতি জেঁকে বসেছে। স্মর্তব্য, দেওবন্দীদের মাঝে হিন্দুপ্রীতি ও তাশাব্বুহ অনেকটা জন্মগত থেকেই। তাদের কিস্তি টুপি, কোণা ফাঁড়া জামা ও পাজামা সবই মূলত হিন্দুদের পোশাক।
বাদশাহ্ আকবরের আমলে যা হিন্দুদের জন্য প্রবর্তিত হয়েছিলো। তারপরেও দেওবন্দীরা অদ্যাবধি তাদের মুরুব্বী পূজার কারণে সে পোশাকই পরে আসছে। যার একটিও সুন্নত নয়।
মূলত, দেওবন্দীদের এই হিন্দুপ্রীতি ও মুরুব্বী পূজা আজকে যেন খোদ গো-পূজারীতে পরিণত করেছে।
৪ঠা জানুয়ারি/২০০৬ ঈসায়ী চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণে এবং
সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক জালালাবাদে পত্রস্থ হয়:

ঈদে গরু কুরবানী না করতে
দেওবন্দের আহ্বান

“এনএনবি: ভারতের উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী দেওবন্দ দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এবার ঈদুল আজহায় গরু কুরবানী না করার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হিন্দুদের ভাবাবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মাদরাসাটি এ আহ্বান জানায় বলে ভারতের একাধিক সংবাদ মাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
এশিয়ায় বৃহত্তম এই মাদরাসা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের মতামতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আহমেদবাদ ও গুজরাটে এই মতামতের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, এক ধরনের ধর্মব্যবসায়ী দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ইসলামের নাম ব্যবহার করে স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে ধর্মের সর্বনাশ করছে।”
মূলত, আজকের দেওবন্দীরা যে চিহ্নিত ও প্রতিষ্ঠিত ধর্মব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর সেই আবুল ফজল, ফৈজীর মতোই গুমরাহ হয়েছে উপরের গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করণে অনুমোদনে কেবল তার কুকীর্তি কেবল সীমাবদ্ধ নয়।
সে যে ভারত রাজশক্তির দ্বারা তথা ক্ষমতা ও অর্থপ্রাপ্তির দ্বারা কত প্রলুব্ধ হতে পারে মুহূর্তেই ফতওয়া উল্টিয়ে দিতে পারে তার প্রমাণ পর্যাপ্ত।
আরো প্রমাণ:
বোরকা পরে ভোটে দাঁড়ানোর ফতোয়া

“আবারো সংবাদ শিরোনামে ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ শহরের ১৪০ বছরের পুরনো ইসলামী শিক্ষা ও আইন প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম প্রতিষ্ঠানটি বুধবার উত্তর প্রদেশে এক ফতোয়া জারি করেছে।
মুসলমান মহিলারা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। দাঁড়াতে চাইলে বোরকায় মুখ ঢাকতে হবে। দারুল উলুমের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, বোরকা না পরে পুরুষের সামনে বেরুনোর অনুমতি মুসলমান মহিলাদের নেই। ইসলামী আইনে শুধু পর্দানশীন মহিলারাই নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুসলমান মহিলা প্রার্থীদের অবিলম্বে বোরকা পরার নির্দেশ দিয়েছেন এই ইসলামী আদালত। চলতি নির্বাচনের ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। কয়েকশ’ মুসলমান মহিলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।” (দৈনিক সমকাল, ১৯ আগস্ট/২০০৫ ঈসায়ী, পৃষ্ঠা নং ৬)
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বোরকা না পরে পুরুষের সামনে না বেরোনোর ফতওয়া দিলেও মহিলাদের নেতা হওয়া যে নাজায়িয তথা নির্বাচন করাই যে নাজায়িয সে ব্যাপারে ঐতিহ্যবাহী দাবিকৃত দারুল উলুম দেওবন্দ কি লজ্জাকর গুমরাহী ফতওয়া দিলো। মূলত, ক্ষমতা ও অর্থের প্রলোভন ও আশঙ্কা দ্বারা প্রভাবিত হওয়াই যে এর কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার নজীরও রয়েছে নগদ:

ভোট প্রচারে বোরকা নিয়ে
জারি ফতোয়া প্রত্যাহার

“বোরকা নিয়ে জারি করা ফতোয়ায় দেশব্যাপী হইচই ওঠায় দেওবন্দের মুসলিম ধর্ম সংগঠন দারুল উলুম আজ নিজেই ঢোক গিলে ফেললো। রাজনীতিতে ধর্মীয় অনুশাসন জারির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভাইস চ্যান্সেলর মৌলানা মারগুবুর রহমান বলেছেন, সমস্ত মুফতীকে বলে দেয়া হয়েছে যে, কেউ ফতোয়া জারি করবেন না। একই সঙ্গে তাদের প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। ভোট নিয়ে মুসলিম মহিলাদের ওপর জারি করা ফতোয়া তুলে নিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।” (আমাদের সময় ২৪ আগস্ট/২০০৫ ঈসায়ী, পৃষ্ঠা নং- ৪)
বিষয়টা ঠিক এদেশের দেওবন্দী মাওলানাদের মতই। শুধু তথাকথিত শাইখুল হাদীছের “আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা” বই-ই নয় বরং খতীবসহ সব নেতৃস্থানীয় দেওবন্দী মাওলানা, মুফতীদের বয়ান, ক্যাসেট ও লেখাতেই নারী নেতৃত্ব নাজায়িয ও হারাম- এ ফতওয়া বহুবার এসেছে।
কিন্তু এরপরে তারাই আজ আবার চশমখোরের মতো সে ফতওয়া উল্টিয়ে নারী-নেতৃত্বের আঁচলে জোট বেঁধেছে।
এবং এ ব্যাপারে দেওবন্দীদের প্রধান মুরুব্বী তথাকথিত মালানা মারগুব যে এদেশের দেওবন্দীদের হেদায়েত করতে পারতো, নীতিগত ভাবে এদেরকে হেদায়েত করার দায়-দায়িত্ব যার উপর বর্তায় সেও যে পঁচে গেছে বরং আরো বেশী পঁচে গেছে, বড় গুমরাহ হয়ে গেছে উদ্ধৃত খবর তারই প্রমাণ। মেয়ে ও নাতনীকে বেপর্দায় চালানো, মহিলাদের ভোট যুদ্ধে নামানো এমনকি তাদের প্রতি নিজের দেয়া “বোরকা পরার হুকুমের” ফতওয়াও উঠানোর পর হিন্দু রাজশক্তির নেক নজরে থাকার জন্য মুসলমানদেরকেও কুরবানী না করার জন্য উৎসাহিত করা- এসব কর্মকা- প্রত্যক্ষ ক্বিয়ামতের আলামত হিসেবে প্রকাশিত হয়।
যেমনটি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বিয়ামত আসার আগে অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে। তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি, তোমাদের বাপ-দাদা, চৌদ্দপুরুষ শুনেনি। তোমরা তাদের কাছে যেয়ো না, তাদেরকে তোমাদের কাছে আসতে দিয়ো না। তবে তারা তোমাদের গুমরাহ করতে পারবে না।”
সত্যিই তথাকথিত দারুল উলুম দেওবন্দীগং আজকে ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব জায়িয করা, এমনকি কুরবানী করা সংক্রান্ত যে ফতওয়া দিয়েছে তা আমাদের চৌদ্দপুরুষ কেউ শোনেনি। এদেরকে কাছে আসতে না দিলেই এরা এসব বিষয়ের পাশাপাশি মিলাদ-ক্বিয়াম, চোখে বুছা দেয়া মাযার শরীফ জিয়ারত, উজরত গ্রহণ, কুনূতে নাযেলা ইত্যাদি বিষয়ে আমাদেরকে গুমরাহ করতে পারবে না।
অতএব, ঈমান রক্ষার্থেই তাদেরকে আমাদের থেকে দূরে রাখতে হবে। দারুল উলুম দেওবন্দের নামে তারা বড় বড় শাইখুল ইসলাম, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা, খতীব, মুফাস্সিরে কুরআন ইত্যাদি দাবি করলেও কুরআন-সুন্নাহ্র ফায়ছালা অনুযায়ী অনেক আগেই তারা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে সে কথাই জোরদারভাবে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। হাদীছ শরীফ-এ সে নছীহতই জোরদারভাবে করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১১
১৭টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×