মাঠে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দিলেও তা কেউ শুনছেন না। ফলে কার্যত উপেক্ষিত থাকছে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ। অবরোধের প্রথম দু’দিনে বরাবরের মতো মাঠে নেই বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গ্রেফতার এড়াতে অধিকাংশ নেতা যেমন আত্মগোপনে তেমনি কারো কারো বিরুদ্ধে সরকারকে ম্যানেজ করে চলারও অভিযোগ আছে।
দলীয় সূত্র জানায়, অবরোধ সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি রাজধানীর আটটি পয়েন্টে অবস্থান নেয়ার নির্দেশ ছিল। কিন্তু চেয়ারপারসনের এ নির্দেশনা উপেক্ষিতই থেকে গেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীরকেও সঙ্গে পাননি নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে জ্যেষ্ঠ নেতাদের এ অনুপস্থিতিতে ক্ষোভ বাড়ছে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
গত সোমবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর পরই সরকার পতনে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। কর্মসূচি দিয়েই অন্তরালে চলে গেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। রাজপথে থাকা তো দূরের কথা, যোগাযোগের মাধ্যম সেলফোনও অনেক সময় বন্ধ করে রাখছেন তারা। কারো কারো সেলফোনে রিং হলেও রিসিভ করছেন না।
শুধুমাত্র দফতরের দায়িত্বে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অবস্থান করছেন। সংবাদ সম্মেলন করে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিতও করছেন। দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানকেও মঙ্গলবার অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল কোথায় আছেন সাংবাদিক কিংবা নেতাকর্মী কেউই বলতে পারছেন না।
জোট ও বিএনপির অনেক পরীক্ষিত নেতাকর্মীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখাদেখি ঢাকা মহানগর বিএনপির অনেক ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাও মাঠে নামছেন না। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে এতে হতাশা বিরাজ করছে। কেন্দ্রীয় এসব নেতার প্রতি তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করছেন অনেকে।
দলের প্রায় সব কর্মসূচিতেই মাঠে থাকছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম বিএনপি সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ার। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সবাইকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারপারসন। চট্টগ্রামে আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। কেন্দ্রে যারা রয়েছেন, তাদেরও আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। তবেই আন্দোলন সফল হবে। ঘোষিত কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সব কেন্দ্রীয় নেতারই দায়িত্ব।
মজিবর রহমান সরওয়ার বলেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ আমার শিরোধার্য। নেতা-কর্মীকে মাঠে রেখে কোনদিন মাঠে ছেড়ে যাইনি এবং যাবোও না। তিনি জানান, বরিশালের চেয়ে কঠোর অবরোধ কর্মসূচি অন্য কোথাও পালিত হচ্ছে না।
দলের নেতাদের আত্মগোপন ও মাঠে অনুপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে নেই, সবাই আন্দোলনে আছেন। এটা আন্দোলনেরই কৌশল।
সুত্র : http://goo.gl/YwcXD4