somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইজতেমা কি? ইসলামে নতুন কিছু করার সুযোগ নেই। তাবলিগওয়ালারা ইজতেমা কোথা হতে পেল?

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ইসলামে নতুন কিছু করার সুযোগ নেই।
তাবলিগওয়ালারা ইজতেমার কোথা হতে পেল?






না ভাই!
এটা তাবলিগওয়ালাদের ইজতেমা নয়,এটা মুসলমানের ইজতেমা।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জামানা হতে ইজতেমার মত আজিমউস্সান আমল চলে আসছে। নামাজের জন্য যেমন আজান হয়,তেমনি যখনি দ্বীনের অনেকগুলো তাকাজা সামনে আসতো তখন প্রিয়নবী (সাঃ) এলান করতেন "আসসলাতু জামি'য়া"।

এই এলান এর পর সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম তাদের সমস্ত কাজকে কুরবানি করে আল্লাহর রাসূলের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য দলে দলে ময়দানে জমা হতেন।
উনাদের মাঝে কারো বাবা মারা গেছে, মা অসুস্থ, কারো বিয়ে, কারো ব্যবসায়ের রমরমা অবস্থা, কারো খেজুর পেকেছে এরকম বিভিন্ন হালত থাকতো,কিন্তু তারা সকলে হালত উপেক্ষা করে দ্বীনের তাকাজাকে প্রধান্য দিয়ে রাসূলের(সাঃ) ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ময়দানে বা মসজিদে সমাবেত হতেন।

প্রত্যেক সাহাবী নিজেকে প্রস্তুত রাখতেন,হয়ত দ্বীনের জন্য আমার সমস্ত মাল আল্লাহর রাস্তায় দেওয়ার তাকাজা আসতে পারে, তবে আমি তাই করবো।
হয়ত আল্লাহর জন্য আমার পরিবার, বিবি,বাচ্চা ছাড়তে হতে পারে তবে আমি তাই করব। হয়ত দ্বীনের জন্য আমার জান দিতে হবে,তবে আমি আমার জানটাও দিয়ে দিব। আমি তো এ কাজের জন্যই,আমাকে তো এ কাজের জন্যই পাঠানো হয়েছে।
যখন সাহাবায়ে কেরাম আজমাঈনগন সকলে ময়দানে হাজির হতেন।
তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) দ্বীনের তাকাজা পেশ করতেন।

*পারস্য, অমুক অমুক দেশে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে কে কে যাওয়ার জন্য তৈরি আছো? তখন সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম হাত তুলতেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যেক সাহাবীকে এমনি ভাবে তৈরি করেছিলেন, যে প্রত্যেক সাহাবী দ্বীনের সকল তাকাজা পুরা করণেওয়ালা ছিল,দ্বীনের জন্য জান দেনেওয়ালা ছিল।

তখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) নাম ধরে ধরে বলতেন তুমি তুমি এবং তুমি অমুক তাকাজায় চলে যাও। সাহাবায়ে কেরাম তৎক্ষনাত ঘোড়া ছুটিয়ে দ্বীনের মোবারক তাকাজা পুরা করার জন্য রওনা হয়ে যেতেন।

বাড়ীতে গিয়ে কাজ গুছিয়ে তারপর চিন্তা করে তারপর রওনা হওয়া,পরিবারের এজাজত নেওয়া- এসব উনাদের চিন্তার বাইরে ছিল।
তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) অন্যান্য তাকাজা পেশ করতেন। যেসব জামাত আল্লাহর রাস্তায় গিয়েছে তাদের বাড়ির জিম্মাদারী দিতেন।
তাদের খোজ খবর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) রা রাখতেন।

তারপর আল্লাহর রাসূল সীমান্ত রক্ষার জন্য আরেক জামাত কে পাঠাতেন। কেউ যদি কেন সাহাবীকে জিজ্জাসা করত,আপনাকে যে অমুক তাকাজা/জিম্মাদারী দেওয়া হয়েছে তা পুরা করতে পারবেন তো?
সে সাহাবী সাংঘাতিক রাগ করতেন! এবং বলতেন,
আমি কি মুসলমান নই?
আমি কি ঈমানওয়ালা নই?
তুমি কি আমাকে মুনাফিক মনে করো?
আমি তো এ কাজের জন্যই।

যখন সমস্ত তাকাজা পুরা হয়ে যেত তখন এলান করা হত, দ্বীনের সমস্ত তাকাজা পুরা হয়ে গেছে আপনার সকলে বাড়ী ফিরে যান।

এখন আপনাদের সামনে তিনটা কাজ।
১, আল্লাহর রাস্তার যেসব জামাত গিয়েছে তাদের বাড়ির নুসরত ও দেখাশুনা করা।
২, মসজিদ ওয়ার আমলের সাথে জুড়ে থাকা।
৩, নিজের জরুরতগুলো পুরা করে,পরবর্তি তাকাজার জন্য প্রস্তুত থাকা।

সাহাবায়ে কেরাম আজমাঈমন দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বাড়ির পথে এগোতেন। আর নিজেকে তিরস্কার করতেন,হায় আমার আমল হয়ত সুন্দর ছিল না তাই আল্লাহ তায়ালা আমাকে দ্বীনের তাকাজায় কবুল করেন নি,আল্লাহর রাসূল আমার নাম ডাকে নি।
নিশ্চই আমার আমলের কমি ছিল। আমাকে আরো আগে বাড়তে হবে।

আমার সাথিরা কতইনা আগে বেড়ে গিয়েছে। তারা এরপর থেকে আরো সুন্দর আমল করতেন,এবং নেক আমলের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিতেন।

যখন ইজতেমার আমল চলছিল তখন,
১, আল্লাহ পাক রহমত বরকতের দরজা খুলে দিয়েছিলেন, বৃষ্টির মত অবিরাম ধারার আল্লাহ পাকের রহমত বরকত বর্ষণ হচ্ছিল।
২,আল্লাহ তায়ালা মানুষের মাঝে হক কবুলের যোগ্যতা দান করেছিলেন,তাই দলে দলে মানুষ ইসলাম কবুল করছিল।
৩, আল্লাহ তায়ালার মদদ ও সাহায্য বান্দার পক্ষে ছিল।
৪, দুআ কবুলের দরজা আল্লাহ তায়ালা খুলে দিয়েছিলেন।
সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) হালতে আল্লাহর কাছে চাইতেন,আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে তা কবুল করতেন।
৫, মুসলমানদের মাঝে ভাতৃত্ব,সহমর্মিতা তা তৈরি হয়েছিল। একটা সুন্দর সমাজ তৈরি হয়েছিল।

[ইজতেমা উপলক্ষে মিয়াজী মেহরাব সাহেব হজরতজ্বীর মোজাকারা]

আমরা কি এ ফাজায়েলগুলো চাই না?
ইজতেমার দ্বারা এটাই চাওয়া হচ্ছে।

ইজতেমার উদ্দেশ্যঃ
১, কিভাবে প্রত্যেক মুসলমান একশত থেকে একশতভাগ নারী পুরুষের সম্পর্ক আল্লাহ তায়ালার সাথে হয়।
২, কিভাবে প্রত্যেক মুসলমান একশত থেকে একশতভাগ নারী পুরুষ পরিপূর্ন দ্বীনের উপর চলনে ওয়ালা হয়ে যায়।
৩, কিভাবে প্রত্যেক মুসলমান একশত থেকে একশতভাগ নারী পুরুষ জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাতে যায়।
৪, কিভাবে প্রত্যেক মুসলমান একশত থেকে একশতভাগ নারী পুরুষ আল্লাহ আল্লাহর রাসূলকে সামনে রেখে চলতে পারে।

সকলের নিকট ইজতেমার দাওয়াত পৌছানো চাই।
যেন সকলে ইজতেমায় শরীক হতে পারে।

ইজতেমার কামিয়াবির জন্য মা বোনেরা নফল নামাজ, রোজা, সদকা, আল্লাহর জিকির, রোনাজারি, দুআ ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে ইজতেমায় শরীক হই।
আল্লাহ তায়ালা দ্বীনের সকল তাকাজা পুরা করুন।

আমাদের সকলকে ইজতেমায় শরীক করুন।
এবং এই অধমকে দ্বীনের হার তাকাজায় লাব্বাইক থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×