somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - পর্ব ৩

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুলাই ১৮: ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই কমপ্লিট শাট ডাউন কর্সুচী ঘোষনা করে বৈষম্যিরোধী ছাত্র সংগঠন। সমন্বয়ক আসিফ এক বিবৃতিতে বলেন , ‘’আমাদের অভিভাবকদের বলছি, আমরা আপনাদেরই সন্তান। আমাদের পাশে দাঁড়ান, রক্ষা করুন। এই লড়াইটা শুধু ছাত্রদের না, দলমত নির্বিশেষে এদেশের আপামর জনসাধারণের।’’ view this link। কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসুচীর আওতায় বিক্ষোভকারীরা অবরোধ করে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক। দুরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনালেই পড়ে থাকে এদিন।



১৭ ই জুলাই রাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে যখন বাধ্য করা হয় তখন আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পরে। কিন্তু এরপরেই আন্দোলনের মোড় পালটে দেয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একের পর এক দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয় আন্দোলন, বিক্ষোভ। অন্যান্য যেকোনো আন্দোলনের চেয়ে এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। মূল সড়ক থেকে গলিতে ছিল পদে পদে বাধা, সাথে গ্রেপ্তারের ভয়, ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলার আতঙ্ক। তবুও পিছু হটেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সড়কে গুলির মাঝে বুক পেতে দাঁড়িয়েছেন তারা। দুপুরে বাড্ডায় ব্র্যক ইউনিভার্সিটিতে নজিরবীহিন হামলা চালায় পুলিশ।

view this link

ঢাকা ছাড়াও ১৯টি জেলায় ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। পুলিশের গুলিতে ২৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় - ঐসময় তাজা বুলেট, শটগান ছররা এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। এইদিন প্রানহানি ঘটে আন্দোলনকারীদের মাঝে পানি বিতরনকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুগ্ধ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ফারহান ফায়াজ , ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটির ইরফান, ক্লাস নাইনের ছাত্র তাহমিদ, আইইউটির জাহিদুজ্জামান তানভীন , দনিয়া কলেজের জিল্লুর শেখ , চট্টগ্রামে ফয়সাল আহমেদ শান্ত সহ আরো বহু মানুষের। সোস্যাল মিডিয়ায় এতগুলো তরতাজা প্রানের মৃত্যর খবরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সমগ্র দেশের মানুষ। একে একে রাস্তায় নামতে থাকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ ও অভিভাবকেরা।



বিকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।view this link বৈষম্যবিরোধি ছাত্র সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ জানায় - গুলির সঙ্গে কোনো সংলাপ হয় না। এই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করার চেয়ে আমার মৃত্যু শ্রেয়।’


বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৫ দেশের ছাত্রসংগঠনের সংহতি জানায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে। ভারতের অল ইন্ডিয়া ডেমক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অর্গ্যানাইজেশন (এআইডিএসও) ছাড়াও সংহতি জানানো অন্য সংগঠনগুলো হলো- অল নেপাল ন্যাশনাল ফ্রি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফেডারেশন (পাকিস্তান), সোশ্যালিস্ট স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (শ্রীলঙ্কা), সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ ইউনিয়ন (শ্রীলঙ্কা), সোশ্যালিস্ট অ্যালায়েন্স (অস্ট্রেলিয়া), ইয়াং কমিউনিস্ট লিগ অব ব্রিটেন, সোয়াস লিবারেটেড জোন ফর গাজা (যুক্তরাজ্য)।

১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত নয়টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। টানা পাঁচ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল ১০ দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপের মতো সেবা বন্ধ ছিল ১৩ দিন।১৮ই জুলাই রাতে সারা দেশব্যপী ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করা হয়। view this link

পুরো দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বহির্বিশ্ব থেকে।অনলাইন মিডিয়াগুলোতে নতুন খবর আপডেট হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। । লাখ লাখ প্রবাসী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে প্রিয়জনদের কাছ থেকে। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা বিক্ষোভ শুরু করে বিদেশে। বিশেষ করে নিউইয়র্ক এবং লন্ডনে জ্বালাময়ী শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে হাজার হাজার প্রবাসী।

জুলাই ১৯ : ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারনে আন্দোলন সংক্রান্ত খবর পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ডাইরেক্ট ফোনকলেও কথা বোঝা যায় না। এরকম পরিস্থিতিতে প্রবাসে বসবাসরত অনলাইন এক্টিভিস্টরা যতটুকু সম্ভব খবর জোগার করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় । এইদিনে MIST এর কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র শহীদ শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে আর্মড কারের উপর থেকে ফেলে দেওয়ার একটা ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। ভিডিওটা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো দেশ --------------







সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:০১
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×