

বিএনপির হাই কমান্ডের নেতারা কথা বার্তায় বা কাজে কর্মে কখনই দেশপ্রেম দেখাতে না পারলেও দীর্ঘ ১৭ বছর তৃনমুল বিএনপি নেতা কর্মীরা গুম, খুন, অপহরন ও ক্রসহায়ারের শিকার হওয়ায় জনগনের মনে বিএনপির জন্য সহানুভুতি তৈরী হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবে যখন মির্জা ফখরুল অংশগ্রহন করতে অস্বীকার করেছিল , তখনও মানুষ জানতো যে বিএনপির তৃনমুল নেতাকর্মীরা রাজপথে ঠিকই আছে। ছাত্রদের কাতারে মিশে আছে তারা। আসিফ মাহমুদ যেদিন 'লংমার্চ টু ঢাকা'' কর্মসুচীর কথা ঘোষনা করেছিল তখন বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকামুখী হাজার হাজার মানুষ ভর্তি ট্রাক, বাস দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে , রাজনৈতিক দলগুলোই এসব ব্যবস্থা করেছে। অগাস্টের পাঁচ তারিখে যখন আওয়ামিলীগের পতন নিশ্চিত হয়, তখন সব রাজনৈ্তিক দলের নেতা কর্মী ও ছাত্র জনতা মিলেমিশে একাকার হয়ে উদযাপন করেছিল আজুলাই বিপ্লবের সাফল্য ।

জুলাই বিপ্লবে প্রায় দুই হাজারের মত ছাত্র জনতা প্রান দিয়েছে। চোখ ও হাত পা হারিয়েছে আরো কয়েক হাজার। রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি । হাসপাতালে এখনও কাতরাচ্ছে শত শত মানুষ। কিন্তু বিএনপি যে রুপে বর্তমানে আবির্ভুত হয়েছে তা অবিশ্বাষ্য। যেই আওয়ামিলীগ বিএনপির উপড় এত দমন নীপিড়ন চালালো , আজ সেই আওয়ামি দোসরদের সহায়তায় বিএনপি প্রসাষন ও বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করেছে। অবৈধ নির্বাচনের অনির্বাচিত মেয়রকে বৈধতা দিয়ে রায় দেয় আওয়ামি /বিএনপিপন্থী আদালত !! নির্বাচনের দাবীতে দেশব্যপী অস্থিরতা সৃষ্টি করে চলেছে এই দুই চক্র। ফালতু সব আন্দোলনের নামে সর্বত্র চলছে নজিরবীহিন অরাজকতা। সচিবালয়ে গতকাল যা হল , তা কী কোন অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য? প্রজাতন্ত্রের চাকররা কলম বিরতির সাহস দেখায় কাদের উস্কানিতে? এদের তালে তাল মিলিয়ে তারেক রহমান যেভাবে হুমকি দিচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে তাতে কি বিএনপিকে আর কোন অবস্থাতেই বিপ্লবের অংশিদার মনে করার উপায় আছে? অবস্য জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের ঐতিহাসিক এক দফায় উচ্চারিত '' নতুন রাজনৈ্তিক বন্দোবস্ত '' বিএনপি আগেই অস্বীকার করেছে সংস্কার প্রক্রিয়াকে নাকচ করে। বিএনপি চেয়ারম্যান ও হাই কমান্ডের নেতাদের হম্ভিতম্বিতে মনে হচ্ছে ছাত্র- জনতার রক্তের ওপড় দাঁড়ানো তত্বাবধায়ক সরকারের দ্বায়িত্ব কেবল নির্বাচন আয়োজন করা! আওয়ামি-বিএনপি নিয়ন্ত্রিত প্রসাষনের সহায়তায় একটা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেয়ার জন্য কি নোবেল লরিয়েট ডক্টর ইউনুস ক্ষমতা গ্রহন করেছেন?
বিএনপি বুঝতে পারছে না যে, জুলাই বিপ্লবের নায়কেরা শত অপপ্রচার , প্রপাগান্ডা , হুমকি, আক্রমনের মধ্যেও থেমে যাবার নয়। আসিফ মাহমুদ প্রকাশ্যেই ঘোষনা দিয়েছে যে, '' আমাদের না আছে মরনের ভয়, না আছে কোন কিছু হারানোর ভয়। নাহিদ ইসলাম বলেছে অন্তবর্তী সরকারকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই হবে। সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবীতে সচিবালয়ের দুর্নীতিবাজ , ঘুষখোর বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে কড়া সতর্কবানী উচ্চারন করে হাসনাত বলেছে যে হাসনাত আবদুল্লাহ বেঁচে থাকতে সচিবালয় থেকে যদি সংস্কার কার্যক্রমের বাধা আসে, কঠোর হস্তে তা প্রতিহত করা হবে । হান্নান মাসউদ বলেছে , '' এনবিআর কিংবা পোর্টে যারা স্ট্রাইক করছেন, তাদের বলছি বিপ্লব ওখানেও হবে।আপনারা দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বাধীনতা চাচ্ছেন, কিন্তু '২৪ পরবর্তী সময়ে এটা আর পাবেন না। ''

সারা দেশব্যপী জনসংযোগ করতে নামা এনসিপি নেতা নেত্রীরা তুমুল সারা জাগিয়ে চলেছে। এনসিপি যে ধারার রাজনীতি শুরু করেছে , তা এদেশে এর আগে আর কখনই হয়নি। দেশের প্রচলিত রাজনৈ্তিক ধারার পুরোপুরি বীপরিতে অবস্থান নেয়া এই দলের সবাইকে জনগনের আকাংখিত জনপ্রতিনিধি মনে হচ্ছে। এই দুঃসাহসী তরুন তরুনীরা জুলাই বিপ্লবের শহীদের রক্তের ঋন শোধ করতে নেমেছে। শহীদের রক্তকে সিড়ি বানিয়ে আর কোন লূটেরাকে ক্ষমতায় যেতে দেবে না এরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




