১০ বছর হলো আমাদের ব্যাচের পোলাপান রা একেক জন একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছে। কেউ কেউ হয়তো জীবন আর সময়ের দুর্বিষিহ ধাক্কায় এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে করিডোর থেকে করিডোরে। বাকিরা কেউ চাকরি করে, ব্যবসা করে কিংবা উচ্চ শিক্ষায় রত। আবার অনেকেই অকালেই হারায় গেছে অন্ধকারে কিংবা ওপারে।
সময়ে সময়ে এই বছরে এই ১০ বছরের মাইলফলক এ পা দিয়েছে তাদের মাঝে যারা বাংলাদেশের শিক্ষা কাঠামোর উপর তলার বাসিন্দার ছাত্র-ছাত্রী এরা সবাই বিভিন্ন হ্যাশট্যাগের খেলা খেলবে। নাম দিবে #10yearschallenge ।বাকিরা কোনোরকমে লুকিয়ে বাচবে আর নাহয় দেখেও দেখবেনা। এখন আর চোখের পানি বা এসবের অভাবে আবেগ আসেনা। আমরা বুঝে গেছি ইন্টারমিডিয়েটের সেই গালগপ্পো গুলো সব মিথ্যা। নিজের পরিশ্রম ছাড়া সবই ভুয়া। কালচারাল ভিন্নতা ছাড়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থা সবই কাছাকাছি রকমের ভুয়া। আপনার আশেপাশে কারা আছে, আপনি কাদের সাথে থাকেন এটাই একমাত্র সত্য হয়ে দাঁড়ায়। দিনশেষে যে সঠিক ভাবে প্ল্যান করবে, প্ল্যান অনুযায়ী লেগে থাকবে সেই ভালো করবে।
কিন্তু তাইলে, আমাদের সস্তা ডিপ্রেশন গুলো কি ভুল,মিথ্যা? নাহ। কারন সমাজ উপরের সত্য গুলো জানলেও আপনাকে, আমাকে স্তরীভূত করবে। অন্ধকারে ঠেলে দিবে। শিক্ষা ব্যবস্থার উপরের তলার ছাত্র না হলে কথায়,ব্যবহারে,কাজে আপনাকে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়ায় দিবে। চোখে আংগুল তুলে নর্দমা দেখায় বলবে "পচা মাল ওইদিকে যাও, ওটাই তোমার প্রাপ্য"।
পরিবার,সমাজ এঁর সব ভাড় পিঠে নিয়ে অন্ধকারে চুপচাপ নিজের একাগ্রতা অনুযায়ী কাজ করে যখন পরের স্টেপে আসি। তখন বুঝি একাডেমিক যে দক্ষতা গুলো দরকার ছিল তার ১০% ও আসলে শিখি নাই এই বাল চোদনা মার্কা ইন্সটিটিউশন গুলো থেকে। উপর তলার বাসিন্দাদের কথা আলাদা। তারা নিজের যোগ্যতায় এই অসুবিধা গুলো থেকে দূরে থেকেছে। বাকি দেশে ৮০% ছাগল ঘাস খেতে খেতে ঢুকেছিল, সার্টিফিকেট চিবুতে চিবুতে বের হয়েছে। মাঝখানে কিছু ট্যুর দিছে।এটাই পার্থক্য ৫ বছরে।
একাডেমিকাল জিনিস টা বাদ দিলে উপরের তলার বাসিন্দারা ছাড়া আমরা তলানির কেউ কেউ শিখেছি নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া, একাগ্রতা, ইস্পাত শক্ত চিন্তাধারা। আর বাকিরা হয়েছে আরো রিজেক্টেড, অলস এবং গিয়েছে হারিয়ে জীবনের গোলকধাধায়। প্রতিদিনই খবর পাই জীবনে হারিয়ে যাওয়ার গল্পের। অন্ধকার সময়ের ভিতরে পড়ে যাওয়ার। কেউ কেউ যে স্বপ্ন নিয়ে ১০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আংগিনায় পা দিয়েছিল তার ১০০ ভাগের ১ ভাগ নিয়েই খুশি হতে শিখেছে কিংবা শিখছে।
বাস্তবতার আগুন আমাদের পুড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।
এখন,আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখার সময় আমরা কি পুড়ে ছাই হয়েছি আদৌ নাকি পুড়ে আরো শক্ত হয়েছি? এই সাফারিং গুলো কি আমাদের জীবনের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছে? নাকি একগাদা হাই ফাংশনিং ডিপ্রেসড জেনারেশন তৈরি করেছে?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:০৬