somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রকমারী পণ্য কথা

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রকমারী পণ্য কথা

(এ এক গাবগাছ কথন আপনারা মনযোগ দিয়ে পড়ুন চিন্তার খোরাক পেয়ে যাবেন, এখানে স্পেইস (যদিও এই গাবগাছ চিপায় থাকতে ভালোবাসে) সৃষ্টির কথা বলা হবে, মুক্তচিন্তা, মুক্তবুদ্ধির কথা বলা হবে, তবে সব চেয়ে বেশী করে বলা হবে এক নতুন সৃষ্টি কর্তার কথা যার নাম মৌলবাদ। পাঠক পড়ুন আমার নতুন ঈশ্বর মৌলবাদের নামে)

ফালতু বিষয় নিয়ে আমি বাক্যব্যয় করিনা, এ সব বিষয় আমার গায়ে আচড়ই বসায় না, আমাকে উচ্চমার্গীয় চিন্তাশীল কিছু জিজ্ঞেস করুন তবে উত্তর পাবেন। আমার চারপাশে এতো স্থুল মানুষের ভীড় নিজের জ্ঞান ভান্ডার বিতরনের সুযোগই পাচ্ছি না। নিজের জ্ঞানের ওজনে হাঁটাচলাতেই মুশকিলে পড়ে যাই, তবে স্তস্থির কথা হচ্ছে সুযোগ যে একেবারেই পাচ্ছি না এও ঠিক না আমার দুয়েক জন ভৃত্য আছে আমার বাণী তারা লুফে নেয় আজকাল আমার জ্ঞান বিতরণ ভৃত্যকেন্দ্রিক হয়ে গেছে, একটা জিনিষ কখনো কখনো আমাকে লজ্জায় ফেলে দেয় চামচামি বিদ্যাতো আমি কখনো শিখিনি ভৃত্যরা যে কি করে চামচামি শিক্ষায় পারদর্শী হলো! মাঝে মাঝে মনে হয় কষে ওদের ..... লাথি দেই। কিন্তু পারি না পাছে ওরা মনক্ষুন্ন হয়ে আমাকে ছেড়ে চলে যায়, ভৃত্যরা চলে গেলে আমি ভিখেরি হয়ে যাবো, আমার জ্ঞান বিতরণের সামান্য সুযোগটুকুও হারিয়ে ফেলবো।

আমি আসলে স্পেইস সৃষ্টির জ্ঞান বিতরণ করতে চাই, মুক্তচিন্তা, মুক্তবুদ্ধির জ্ঞান বিতরণ করতে চাই, মুশকিল হচ্ছে বাংলামুল্লুকে স্পেইস কোথায়, ভিড়ে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা, আর মুক্তচিন্তা, মুক্তবুদ্ধি ধারণের ক্ষমতা বাংলামুল্লুকের কারো আছে বলে আমার মনে হয় না। তো অনেক চিন্তা করে আমি বাংলামুল্লুক ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেই। তো আমি ভাবি কোথায় যাওয়া যায় তখনকার দিনের একমাত্র চিন্তাশীল ও মুক্তচিন্তার দেশ রাশিয়া থেকে স্টালিনের (আমার মতে স্টালিন ভ্রাতাই সর্ব যুগের শ্রেষ্ট চিন্তক, ততদিনে অবশ্য মরে ভুত হয়ে গেছে) প্রেত্ত্বাত্তরা নিমন্ত্রন পাঠায়। আমি আমার নিজস্ব তিন পা নিয়ে উড়াল দেই, ওহ আপানাদের বোধহয় জানা নেই চিন্তাশীল ব্যক্তিরা একটু বিকলাঙ্গ হন, আমার আসলে দুই পা কিন্তু সাধারণ মানুষ থেকে একটু আলাদা প্রমাণের জন্য এক্সট্রা পা লাগিয়ে নেই। স্যরি শরীরে নয় মনে, আমি মনে মনে ভাবি আমি তিন পা ধারী, চার পায়ের চিন্তা করেছিলাম বটে, ভেবে দেখলাম গরু, মহিষ, ভেড়াগোত্রীয় না হয়ে যাই, শেষে এরা যদি আমার কাছে জ্ঞানের কথা শুনতে আসে (অবশ্য আমার ভৃত্যদের জ্ঞান এদের চেয়ে খুব একটা উন্নত বলে আমি মনে করি না)। এখানে আপনাদের একটু গোপন কথা বলি কাউকে বলবেন না যেন আমার ভৃত্যরাও কিন্তু আমাকে চতুস্পদীয়ই মনে করে সামনা সামনি বিগলিত হওয়ার ভাব দেখালেও আড়ালে আবডালে আমাকে আমার জ্ঞানকে দুপয়সার মূল্য দেয় না। আমি অবশ্য এ সবে মাথা ঘামাই না কে আমাকে গরু, গাধা (এখানে আরেকটা গোপন কথা বলি ঘাস আমার একটি অতি প্রিয় খাদ্য তো আমার ভৃত্যরা আমাকে ঐরকম ভাবলে খুব একটা মিথ্যা ভাবে না)বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার কাজ হচ্ছে জ্ঞান বিতরন আমার ভৃত্যদের মাঝে আজীবন আমি তা করে যাবো যতক্ষন না কেউ আমার মুখে হুফা লাগিয়ে না দেয়।

স্টালিনের দেশে আমি বড়ো আশাহত হই, মহান চিন্তক লেলিনের যোগ্যউত্তরসুরী স্টালিনকে আজকাল লোকে জুতোপেটা করে, স্টালিনের নাম শুনলেই টয়লেটের কথা সবার স্মরণে আনে। এমতবস্থায় আমি জ্ঞান বিতরণের সিদ্ধান্ত নিলে তারা তা ধারণ করতে পারে না, আমাকে ঘাড় ধরে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়। লেলিনের গ্রামের নদী ভলগার তীরে ভদ্‌কা পানের স্মৃতি আমাকে তড়পায়। মূর্খরা আমাকে চিনলো না লেলিনের মহান বিপ্লবকে এগিয়ে নেবার সব সম্ভাবনা আমার মাঝে ছিলো, হায় মূর্খ রত্ন না চেনার কারণেই আজ তোদের এতো দুর্গতি। একটু সুযোগ পেলে মাকর্স, লেলিন, এঙ্গেলর্স কে আমি ছাড়িয়ে যেতাম। আমার ভাবনা চিন্তা একটু হোচট খায় জ্ঞান বিতরণে ভাটা পড়ে। কিছু কাল গরু সম্প্রদায়ের সাথে লুকিয়ে থাকি তখনই ঘাস খাওয়ার কায়দা কানুন রপ্ত করি। কিছু দিন পর আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠি...

আবার আমি মাথা চাড়া দিয়ে উঠি গরু সম্প্রদায়ের সাথে বাস করার ফলে তাদের কিছু অভ্যাস বা শিং নাড়ানো আমার আয়ত্ত্বে চলে আসে। পাঠক, আমি বলতে চাচ্ছি গরু সম্প্রদায়ের সাথে থাকার ফলে আমার আসল ওজন আমি নিজে বুঝতে পারি, আমি বুঝতে পারি গরু জ্ঞান নিয়ে আমি কতটিকু এগোতে পারবো, গরু সম্প্রদায়ের পাশের ঘরে বাস করতো কয়েক ডজন শুকর ছানা ওদের সাথে মিশতে শুরু করি, ঘন্টার পর ঘন্টা কিভাবে তারা কিভাবে নর্দমায় কাটায় তা জানতে আগ্রহী হয়ে উঠি, ওদের নর্দমা ঘাটাঘাটি দেখে আমার মাথায় আইডিয়া খেলে যায়, আমি পেয়ে যাই আমার সঠিক লক্ষ্য, নিজের ওজন এবং দৌড়ের ক্ষমতা বুঝতে পেরে আমার পরিকল্পনা একটু বদল করতে হয়। আমি মনস্থির করি বাকী জীবন আমাকে প্রচুর নর্দমা ঘাটাঘাটি করতে হবে। লক্ষ্য স্থির করতে পেরে নিজের মনে নিজেই হেসে উঠি বাহ! এইতো জ্ঞানীর আসল কাজ কেউ পাত্তা না দিলে নর্দমা ছিটিয়ে দাও, মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দাও, অবিশ্বাস ছড়িয়ে দাও। যা কিছু ভালো, শুদ্ধ তাতে লাগিয়ে দাও নর্দমার বিষ্টা। এটা আমিই পারবো শুকর ছানাদের কাছ থেকে এ বিদ্যা ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলি।

আমাকে কর্মপন্থা স্থির করতে হয়, স্টালিনের দেশে আমি যখন যাই, তখন সমাজতন্ত্রের রমরমা অবস্থা, সমাজতন্ত্রের আপ্তবাক্য পুরোপুরি বুঝতে না পরলেও বিপ্লবের মূলা তখন আমাদের সামনে ঝুলিয়েছিল রুশীয় গর্দভরা (এখন গর্দভ ভাবি তখন ভগবান ভাবতাম।)। মূলার লোভে নিজের আব্বার কথা মনে না আসলেও রুশীয় আব্বাদের কথায় জান কোরবান করতে রাজী ছিলাম, রুশীয় আব্বারাই আমাদের পৌছাবে মঞ্জিলে মকসুদে। কিন্তু সে আশায় বিষ্টা ছড়িয়ে দেয় মার্কিন দালাল গর্বাচেভ(পরবর্তীতে স্টালিনের এই চামচার কাছ থেকেই বিশ্বাসঘাতকতার বিদ্যা শিখি)। এই হারামজাদা পেরেস্তাইকা নামক উদ্ভট এক তত্ত্বের উদ্ভাবন ঘটিয়ে আমাদের বিপ্লবের স্বপ্নে শুকর লাগিয়ে দেয়। আশাহত আমি গরুদের সান্নির্ধে পুণরায় শক্তি অর্জন করি, কর্মপন্থা আমাকে স্থির করতেই হয়।

খোঁড়া সমাজতন্ত্র নিয়ে আর এগুনো যাবে তা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি, বুঝতে পারি মেকী স্বপ্নের রঙ আসলেই শুয়রের বিষ্টা, স্যরি এ কথা নয়, আমার পূর্বেকার ঈশ্বর কালমার্কস বলেছিলো গনতন্ত্র সম্পর্কে এ কথা একদিন যে তার নিজের গায়েই বিষ্টা ছিটাবে উজবুকটা তখন তা বুঝতে পারেনি। তো আমার কর্মপন্থা কি হবে? সমাজতন্ত্র আর গেলানো যাবে না তাহলে? একটু চিন্তা করেই হো হো করে হেসে উঠি। নন্দন চর্চায় মেতে উঠলে কেমন হয় অর্থাৎ নন্দনের একটি শাখা সাহিত্য কুলষিত করার চেষ্টা করা যাক। আমি জানি আমার এ প্রতিভা আছে, আমি পারবো জল ঘোলা করা বিদ্যা ইতিমধ্যে আমার আয়ত্ব হয়ে গেছে। বাংলামুল্লুকে যে খুব একটা ফায়দা করা যাবে না তা নিশ্চিত হওয়ার পর আবার আমি উড়াল দেই। এবার পৌছি আমার পূর্বেকার জন্মের আব্বাদের দেশ বিলেতে। বিলেতে আমার দেশীভাইয়েরা আয়তনে/উচ্চতায় অতিক্ষুদ্র অনেকটা পিঁপড়ার মতো, কিংবা বলা যায় তাহারা ইঁদুর হইয়া থাকে। তো আমি পৌছে গেলাম, প্রথম কিছুদিন কেটে গেলে পানির গভীরতা পরিমাপে, ডুবে যাবার সম্ভাবনা যাচাই বাচাইয়ে। সাঁতার কিছুটা জানা ছিল এতেই চলবে পানিও খুব একটা গভীর নয়। একা সাঁতারে আরাম নেই ভেবে দুয়েকটা শিম্পাঞ্জি জুটিয়ে নেই পরবর্তীতে এরাই আমার স্থায়ী ভৃত্যে পরিণত হয়। স্থায়ীভাবে একটা অবস্থান গড়তে আমাকে অনেক কাঠখড় (স্যরি শব্দটা বিষ্টা হবে) ঘাটতে হয়। আপনাদের জানাবো আপনারা আমার পাঠক পাঠক মজানো আমি কিন্তু শিখে গেছি- তাই পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষা করুন
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×