somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ ও তারপর

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারত-বাংলাদেশ হাই-টেম্পারেচার ম্যাচ শেষ। এখন পোস্টমর্টেম আর পরের ম্যাচের জন্য প্রতীক্ষা। বাকি সবার মত আমারও কিছু পোস্টমর্টেম আছে। পরের ম্যাচে কি কি হতে পারে সে নিয়ে কিছু বক্তব্যও আছে। ভারতের পরবর্তী ম্যাচ ইংল্যান্ডের সাথে, বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আয়ারল্যান্ডের সাথে। নিতান্ত খারাপ না খেললে বাংলাদেশের জেতা উচিত - ম্যাচটাও দিনরাতের নয়, অন্যদিকে ভারতকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হবে বলে মনে হচ্ছে।

টসে জিতে ব্যাটিং না নেওয়া নিয়ে বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন সাকিবের অনেক সমালোচনা হয়েছে। টস নিয়ে ফিল্ডিং নেবার ফলে আমার মনে হয় বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধাই পেয়েছে। একই মাঠে গতবছর বাংলাদেশ ২৯৬ রান ডিফেন্ড করতে পারে নি, শিশিরে বোলারদের গ্রিপ সমস্যায় ফেলেছিল। ভারতের বোলারদের এই সমস্যার কোনো প্রকোপ পড়েছে বলে মনে হয়নি, শিশিরও মাত্রাতিরিক্ত পড়েনি। তাও যেটুকু ছিল, স্লো পিচকে কিছুটা ব্যাটিং সহায়ক করে তুলতে সাহায্য করেছে। তাই রাতের দিকে বল পড়ে ব্যাটে ঠিকঠাক এসেছে।

বাংলাদেশের বোলিং এ রুবেল-কেই আমার সবথেকে ভাল লেগেছে - ওর হাতে স্লো বাউন্সার, স্লোয়ার, ইয়র্কার - তিনটে কাজের জিনিসই আছে, পেসও যথেষ্ট। স্পিনাররা আশাতীত শর্ট বল ফেলেছে, তারা তার খেসারতও দিয়েছে। আরেক পেসার শফিউল (রবি শাস্ত্রীর সইফুল) জোরে বল করতে গিয়ে প্রায়ই হাফভলি দিয়েছে, যে ভুলটা পরে শ্রীসান্থও করেছে। ফলে দুজনেই ওভারপিছু দশের ওপর রান দিয়েছে। এই পিচে পেসারদের কিভাবে বল করা উচিত তা দেখিয়েছে মুনাফ - স্লোয়ার আর লেগকাটার/অফব্রেককে মূল অস্ত্র করে চারটি উইকেট পেয়ে গেছে মুনাফ। শেহবাগের ব্যাটিং নিয়ে বলার নতুন কিছু নেই - তাও এবারের ইনিংসটা অনেক সংযমী। চমৎকার লেগেছে ভিরাট কোহলির ব্যাটিং। সিঙ্গলস নিয়ে খেলে, কিন্তু দরকারে মারতেও পারেন কোহলি। গত এক-দু’বছরে ভারতের সেরা আবিষ্কার।

এরপরে পরের ম্যাচ। ভারতের উচিত শ্রীসান্থের জায়গায় কোনো স্পিনার খেলানো - সেটা চাওলা বা অশ্বিন - যে হোক না কেন। কেভিন পিটারসনেরা কিন্তু এরকম বোলিং পেলে ছেড়ে কথা বলবে না। এমনিতে হরভজনের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাফল্যের খতিয়ান দেখে মনে হয় অশ্বিন বেটার চয়েস, আবার দলে স্পিন ভারসাম্য দিতে লেগস্পিনার চাওলাকে দরকার পড়বে। ব্যাটিং-এ আপাতত কোনো এক্সপেরিমেন্টের দরকার পড়বে না।

বাংলাদেশ ব্যাট ভাল করলেও বেশ কিছু প্রশ্ন আছে ব্যাটিং নিয়ে। প্রথমত, লোয়ার অর্ডার হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল, যদিও আলাদা কোন চাপ ছিল না তাদের ওপর। নাঈম আর মাহমুদুল্লাহকে অবশ্য এক ম্যাচ দেখেই ছেঁটে ফেলা অনুচিত হবে - তবে তাদের একটু বেশী দায়িত্ব নেওয়া উচিত। টপ অর্ডার ঠিকই আছে - ইমরুলের কাছ থেকে এই খেলাটাই আশা রাখব - তামিম আর সাকিবের কাছ থেকে বড় ইনিংস দেখার অপেক্ষায় আছি। কিন্তু বোলিং নিয়ে আমি একটা সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য অনুরোধ রাখব।

১৯৯২ সালে নিউজিল্যান্ড ঘরের মাঠে স্লো পিচ তৈরী করেছিল ও চারজন স্লো-মিডিয়াম পেসার বল করাত। বোলিং ওপেন করার জন্য যেহেতু একজন পেসার ছিল, অন্যপ্রান্তে ওপেন করত দীপক পটেল - যে কিনা স্পিনার। সাকিবের সাম্প্রতিক সাক্ষাতকারে মনে হল সে শফিউলকে প্রথম কয়েক ওভারে বল করানোর জন্যই দলে রেখেছে - যেটা খুব একটা কাজের নয়। রাজ্জাক যদি ছয় ওভারের পর থেকে বল করতেই পারে কেন প্রথম ওভার থেকেই নয় - সেক্ষেত্রে শফিউলের জায়গায় শুভকে খেলানো যেতে পারে।

তবে, আয়ারল্যান্ডকে হেলাফেলা করা মনে হয় উচিত হবে না। আয়ারল্যান্ড প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৭৯ তুলেছিল, তাও ড্যানিয়েল ভেত্তোরি সেই ম্যাচে বল করছিল। তবে তারা স্পিন ভাল খেলবে বলে মনে হয় না। আয়ারল্যান্ডের দলে ডকরেল নামে উদীয়মান এক স্পিনার আছে, কিছু ভাল পেসার আছে আর ব্যাটিং লাইন-আপ মোটামুটি ভাল। ব্যাটিং এ পোর্টারফিল্ড, ওব্রায়েন, জয়েস ভাল - বোথা ভাল অলরাউন্ডার। এই পিচে বোথা আর ডকরেল ছাড়া বাকিদের সফল হওয়ার কথা না। তবে হ্যাঁ, পরে যদি আয়ারল্যান্ড ব্যাট করে তাহলে সকালে বাংলাদেশ সমস্যায় পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করে রান তুলতে সমস্যায় পড়তে পারে, আয়ারল্যান্ড সুইং বোলিং ভালই করে। তাই এখন বাকি চিন্তা ছেড়ে বাংলাদেশের জয়ের রাস্তায় ফেরার চিন্তাই করা উচিত।

লেখাটা কফি হাউসের আড্ডায় একইসাথে প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৩৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×