তাই আনন্দের এই ফল্গুধারায় লিখতে বসেছি। আনন্দের অনেক কয়েকটি কারন ও আছে।

প্রথমত ঈদ, দ্বিতীয়ত নির্বাচন, তৃতীয়ত বিজয়ের মাস -বিজয় দিবস।
এবার ঈদ আসছে এমন এক সময়ে যাতে চাকরি জ়ীবি বিশেষ করে সরকারি চাকুরে রা এদিক ওদিক করে প্রায় ন দিন ছুটি কাটাবেন । কোরবানির গরুদের বাজার মুল্যের বাড়ছে। সরকার ও বর্ডার ভাল ভাবে গার্ড দিয়ে রেখেছে যাতে গরুদের মুল্য মধয়বিত্তদের আওতার বাইরে থাকে। বরাবরের মত শেষ মহুর্তে হয়ত খুলে দিবে । তাই আমি ও বসে আছি গরু না কিনে । দেখি গতবারের মত সস্তায় গরু পাওয়া যায় কিনা।
এবার গরুর বাজার যে খুব গরম হবে বলার অপেক্ষা রাখে না । কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে যারা গতবার জেল হাজতে বসে ছিলেন তারা সবাই মোটামুটি এখন বাইরে। জনগনের টাকায় আবার তারা বাজারের সেরা গরুটা নিয়ে রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাবেন । আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব ।এভাবেই আমরা দেখতে শিখেছি, দেখে আসছি। আমাদের শোষক শ্রেণী এভাবেই আমাদের দেখতে চান। গণ মানুষের টাকা দিয়ে ওনারা ফুর্তি করবেন, প্রাসাদ বানাবেন আর ক্ষেত্র বিশেষে জনগনের অজুহাত দিবেন । এরি মধ্যে তারা নির্বাচনী প্রচারনার জন্য দলের নেতা কর্মীদের গরু কিংবা গরু কিনা র টাকা বিলাচ্ছেন । গন সাধারনের টাকায় তারা নির্বাচন করবেন এবং তাদের টাকা তারা মেরে দিবেন এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদেরি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করবেন... আমরা কতখানি সহনশীল জাতি!!
জিনিস পত্রের উর্ধগতির কারনে এবার অনেকে হয়ত কোরবানি দিতে পারবেন না। এখন আমার মনে হয় কোরবানির জন্য নতুন ফোতোয়া আসা উচিত। গরুর জন্য সাত ভাগের ক্ষেত্রে ১৪ ভাগ শরিক। ছাগল সাত জনে মিলে একটা, আর মুরগিকেও কোরবানির আওতায় আনা।
কোরবানি যেহেতু সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে তাই আমাদের সামর্থ্যের সূচকের দিক বিবেচনা করে কোরবানির পদ্ধতি ধার্য্য করা উচিত।
এবারের গরুর হাট এখন পর্যন্ত জমেনি। তবে মহিলারা সুপার মল গুলো জমিয়ে রেখেছেন । আমরা যারা ঢাকায় থাকি তাদের জন্য কোরবানির ঈদ তথা যে কোন অনুষ্ঠান ই বিড়াম্ব্বনা বয়ে আনে। অনেকে বলেন অনুষ্ঠানের আনন্দে তা অবশ্য ম্লান হয়ে যায় । কোরবানীর আগে গরু কেনা যতখানি কষ্ট দায়ক , কেনা গরু কোরবানী পর্যন্ত লালন পালন তারচেয়ে অনেক বেশী যন্ত্রনার উদ্রেক ঘটায়। অনেকটা আমাদের বর্তমানের জেল খানা গুলোর মতন। দেশের কোথাও কোন উন্নতির ছোয়া লেগেছে কিনা সেটা পরিক্ষার বিষয়। কিন্তু ঢাকা জেল খানা সহ দেশের অন্যান্য জেল খানা গুলো আমাদের নেতা কর্মীদের বাস যোগ্য করার জন্য যে অভূত পূর্ব সংস্কার সাধিত হয়েছে তা গত ৩৭ বছরে হয়েছে কিনা তা জেল অধিবাসীরা ভাল বলতে পারবেন । তবে আমাদের চোখে তা পরেনি । কিন্তু সেই জেল খানায় ওনাদের রাখা যে কত মুস্কিল তা জনগন হারে হারে বুঝতে পারছেন । প্রতিদিন এই সব নেতা দের জেল কোড ভাঙ্গার বিচিত্র সংবাদ আমাদের কানে আসছে( ছবিসহ)। এতেই কি তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট ফুটে উঠে না । উদাহরন ।ফালু । আমরা কাদের নির্বাচিত করি দেখুন । গনতন্ত্রদের প্রধান কথা For the people and By the people. কিন্তু একটি অশিক্ষিত জনগোষ্টির জন্য এটা কতখানি প্রযোজ্য ? আমাদের রাজনীতি বিদরা রাজনতি বিদ দের যে চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলো এ দুবছরে তুলে ধরেছেন সে গুলো অনেক খানি চতুষ্পদ গরুর সাথে মিলে । গরুকে যেমন ছেড়ে দিলে অন্যের ধান খেয়ে ফেলে তাকে তখন খোয়ারে দিতে হয় , আমাদের রাজনীতিবিদ রাও ছেড়ে দিলে অন্যের ধন খেয়ে ফেলে তাই তাদের জন্য উপযুক্ত খোয়ারের ব্যবশস্থা করতে হয় । কিন্তু জেল খানার উন্নয়নে তাদের অবদান সাধারন হাজতি রা কখোনি ভুলবে না । আর কোন খানে নির্বাচিত না হোক , দূর্নীতিবাজরা জেল খানায় ভোট গ্রহন হলে ঠিকই নির্বাচিত হবেন ।
আহা কি আনন্দ জেল হাজতে!! কিংবা ভি আই পি হাসপাতাল এ।
এবার আনন্দে আছেন দুই পেশাজীবি সম্প্রদায়। এক আইন জীবি আর এক ডাক্তার।
আইন জীবিদের রাজনৈতিক বক্তব্য আমরা সাড়াবছর জুরে টিভিতে দেখেছি। সবচেয়ে অবাক লাগত তখন যখন তাদের প্রচন্ড চাপাচাপি করে এক লাইনে কেমেরার সামনে দাড়াতে দেখে । কি নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা । শুধুমাত্র কি ক্যামেরার সামনে নিজের চেহারা দেখানো? না কি এই ছবি দেখিয়ে ভবিষ্যতের রাস্তা পরিষ্কার করা । একজন আইন জীবি যখন সুপ্রিম কোর্ট কিংবা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলেন তখন জানতে ইচ্ছা করে এখন কি আদালত অবমাননা হয়না ? আইনের প্রতি যদি আইনজীবিদের সন্মান না থাকে তবে সাধারন মানুষদের আইনের আওতায় আনা কি যুক্তি সংগত? প্রথম দিকে মনে হত আর যাই হোক দেশে র মানুষের একটা আশার স্থল আছে । কিন্তুদু বছর পর আইনের ফাক গলে সবাই ধোয়াঁ তুলসি পাতা হতে দেখে আমাদের ওই আশায় গুরে বালি । আমাদের আইন জীবিদের নির্লজ্জ আস্ফালন দেখে সত্যি ভয় হয় আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে । গরীব দের কি বিচার পাওয়ার সুযোগ কোনদিনি আসবে না ?
ডাক্তার সাহেব রা এবার যে জ্ঞানের প্রদশনি আর চারত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দিলেন তা দেখার সুযোগ পৃথিবিতে অন্য কোন দেশের লোকদের হবে কিনা জানি না তবে তাদের ধন্যবাদ আমাদের সে সুযোগ করে দেয়ার জন্য ।
বিদেশ ছাড়া কোন চিকিৎসা যে দেশে সম্ভব না তা তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার বাম কান আর ডান কান কোন তা যে সত্যিকারের খারাপ তা তার জন্য নিয়োজিত চিকিৎসকের বক্তব্য আর মিডিয়ের কল্যানে জনগনের মনে হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে ।তারেক জিয়ার আছাড় সমাচার আরো মজার। কোথায় ্যেন পরেছিলাম ওনার বেন্ডেজ দিক পরিবর্তন করে।
নৈতিকতা বিবর্জিত আইন জীবি , ডাক্তার এর পর আসল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । নিজ দলের রাজনৈতিক লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ব্যবহার করা এবং এটাকে সতস্ফুর্ত বলে অভিহিত করা । আমার প্রথমে মনে হয়েছিল ঐ ব্যক্তির কথাই ঠিক। কিন্তু পরবর্তিতে নেত্রীর পাশে তার ছবি দেখে আমার ঘুম ভাঙ্গল ।
এবারের আসল আনন্দ যেটা আমরা গত ৩৭ বছর ধরে পালন করে আসছি তা হল আমাদের বিজয় দিবস। এবারের টা আরো গুরুত্ব পূর্ন। কারন এই দু বছরে রাজাকারেরা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হয়ে গেছে। যে দেশ টির জন্মে তাদের বাধা ছিল সেই দেশের ক্ষমতায় আজ তারা বীরদর্পে সমাসীন । তারা এই প্রথম স্বাধীনতার পরে জনসমক্ষে মুক্তিযোদ্ধার পিঠে লাথি মেরেছে । এবং আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একজন মুক্তি যোদ্ধা হয়েও কোন ব্যবস্থা নেন নি ।
এত আনন্দের মাঝে ঈদকে তাই আসুন আমরা সাদরে গ্রহন করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




