বাঙ্গালীর প্রিয় উত্সব কোলকাতাবাসী কিভাবে উদ্যাপন করে তা দেখবার জন্য গতবছর দুর্গাপূজার সময় দিন পনেরো কোলকাতায় কাটিয়েছিলাম। অভিজ্ঞতা তিক্ত। ভীড় শুধু ভীড়। আমার ধারণা কোলকাতা ভারতের বৃহত্তম ভীড় নগরী।
সবচেয়ে আশ্চর্যের, মানুষের হাটবার কোন রাস্তা নেই। ফুটপাথগুলো সব তো হকারদের দখলে। মানুষের চলাফেরার ন্যূনতম কোন সুযোগ নেই।
যেখানে যত ফুটপাথ আছে সেখানে শুধুই হকার। এরা সবকিছু হকারি করে। নিত্য ও সাধারন ব্যবহার্য, সৌখিন ও বিদেশী, ফাস্ট ফুড থেকে হোটেল, চাইনিজ থেকে দক্ষিন ভারতীয়, কাঁচ থেকে পেতল কাঁসা, বেত ও বাঁশ থেকে কাঠ, লটারীর টিকিট থেকে পত্রিকা, লেবু জল থেকে ঠান্ডা পাণীয়, সেল ফোন, টিভি কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ, সব, সব কিছু। কাপড় চোপড় থেকে বিছানা বালিশ, পুলিশ থেকে কর্পোরেশনের পাহাড়াদার, গ্যারেজ থেকে বাসের টিকিট কাউন্টার, রাজনৈতিক দাদা থেকে এলাকার মাস্তান, মন্দির থেকে মসজিদ, দালাল থেকে মেয়েমানুষ, প্রেমিক প্রেমিকা, ফুল, ড্রাগ বিক্রেতা, সাট্টার পেন্সিলার, কি নেই? শুধু ভীড়, শুধু হকার, পথচারী এখানে ব্রাত্য। ফাঁকা কোন ফুটপাথ নেই। কর্পোরেশনের পাহাড়াদার, পুলিশ ও দাদারা মিলে প্রতিদিন ফুটপাথ বিক্রি করে চলেছে। দেখবার কেউ নেই।
আসলে কোলকাতা শহর অভিভাবকহীন। বিহার, ইউ পি থেকে দেশওয়ালী ভাইয়েরা প্রতিদিন রুটি রুজির খোঁজে কোলকাতায় আসছে। ফুটপাথ কিনছে। দেশওয়ালী ভাইদের হাত ধরে আস্তানা তৈরী করছে। যা হোক কিছু বিক্রি করছে। কোলকাতা বাড়ছে। ভীড় বাড়ছে, দূষণ বাড়ছে, বাড়ছে বেকার, বাড়ছে হকার, বাড়ছে ভোট, বাড়ছে পুলিশের তোলা, বাড়ছে কর্পোরেশনের পাহাড়াদারদের রোজগার। কমছে মানুষের হাঁটার জায়গা। হারিয়ে যাচ্ছে কোলকাতার ফুটপাথ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০০৭ দুপুর ১:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





