সুপ্রিয় বিশ্ববাসী। প্রতিদিনের মতো আজও আমরা লাইভ কাভারেজ দিচ্ছি প্যালেস্টাইনে অনুষ্ঠিত বোমব্লাস্টিং খেলায়। আমি বলদ কি মুন জাতিসংঘের সভাপতি আপনাদের বিনোদনের সেবায় নিয়োজিত সর্বদা। আমার সাথে আছেন এই খেলার অন্যতম রূপকার ইজরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমেল পেরেজ। শিমেল ভাই সুপ্রভাত। আপনার দল ইজরায়েল অত্যন্ত সাফল্যের সাথে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
-ধন্যবাদ বলদ। এই খেলার প্রস্তুতি নিতে আমাদের দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়েছে। ফার্স্ট অফ অল আমি ধন্যবাদ জানাই আমার বাপ-মা ওবামা কে। উনার নামের মধ্যেই একটা মাধুর্য লক্ষ্য করবেন। ওবামা, বামা, বোমা... সত্যিই তিনি এই খেলার একজন ঝানু সমঝদার।
-সুধী দর্শকমণ্ডলী, যারা এইমাত্র খেলা দেখতে বসলেন, তাদেরকে গত পাঁচদিনের খেলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছি। প্রথম দিন ইজরায়েলের জঙ্গী বিমান অত্যন্ত সাফল্যের সাথে কিছু ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেয় এবং একজন কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে। এরপরের দিনগুলোতে খেলা একপেশে হয়েছে একদম। ইজরায়েলি সৈন্যরা অত্যন্ত সার্থকতার সাথে গণহত্যা চালিয়েছে।
-বলদ, ইজরায়েলের মূল শক্তি হচ্ছে টিম ওয়ার্ক, আর খেলাটির প্রতি একাগ্র সাম্যবাদী মনোভাব। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, বুড়ো, শিশু, গর্ভস্থ শিশু, অন্তঃস্বত্তা মহিলা কাউকেই কিন্তু ছোট করে দেখা হয় নি। বোমা, গুলি, বেয়নেট সবার কাছেই সমানতালে গেছে।
-সত্যিই প্রশংসনীয় আপনাদের ঐক্য শিমেল ভাই। এখন আমরা আজকের ম্যাচের লাইভ কাভারেজে চলে যাবো। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি শিশু তার মায়ের কোলে লুকিয়ে আছে জড়সড়ো হয়ে, পুরাতন একটা বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে। আকাশে উড়ছে বোমারু বিমান। চমৎকার গতিতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এগিয়ে চলছে। খুঁজে চলেছে তার শিকার। এখনো ১০০ হয়নি। খেলায় টানটান উত্তেজনা। এইমাত্র একটি বোমা ফেললেন। কিন্তু না! বোমাটি ভবনের বেসমেন্টে না লেগে তার পাশের বৃক্ষরাজিকে আক্রমণ করলো। হোয়াট এ ওয়েস্ট! শিমেল ভাই, একটি চমৎকার সুযোগ কিন্তু মিস হয়ে গেলো!
-হ্যাঁ বলদ। তবে আমি আশাবাদী, আমাদের টিম অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা খুব দ্রুত স্কোর করবেই। যেভাবে করেছিলেন এ্যারিয়েল শাউয়ার নেতৃত্বাধীন দল। তারা নিপুনভাবে ট্যাংক নামিয়ে পিষে দিয়েছিলো গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আমাদের এই যে সাম্যনীতি শিশু, মহিলা, পোয়াতি, আবালবৃদ্ধবনিতা সবার ক্ষেত্রে, তার অন্যতম রূপকার কিন্তু এই এ্যারিয়েল শাউয়া।
-খেলায় ফিরে যাই আবার। মেয়েটি চিৎকার করছে ভয়ে, তার মা তাকে পাখির পালকের মত আবৃত করে রেখেছে। তুমুল উত্তেজনাকর অবস্থা। আরেকটি ইজ্রায়েলি বিমান আসছে। চমৎকার গতি। নিপুন দক্ষতা। পাইলট বিচক্ষণতার সাথে পজিশন দেখে নিচ্ছেন... এবং বলতে না বলতেই! বো...ম! চমৎকার নিখুঁত নিশানা। একেবারে গুড়িয়ে দিয়েছে বেসমেন্টটা। আগুন জ্বলছে। স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত মা তার শিশুটিকে কোলে নিয়ে অন্য কোথাও যাবার চেষ্টা করছেন। শিশুটির নাক, কান আর গলা দিয়ে প্রচুর রক্ত ঝরছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যাবার সম্ভাবনা। পাইলট নিরিখ করছেন পজিশন। হয়তো বা আরেকটা বোমা ফেলবেন। এবং... চমৎকার মৃত্যু। রিপ্লে দেখুন আপনারা। অত্যন্ত সুন্দর একটি দৃশ্য। আহত খেলোয়াড় মা তার শিশুকে নিয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে একটি ইটের সাথে গোত্তা খেয়ে মুখ থুবরে পড়লেন, এবং শিশুটি মাথায় আঘাত পেয়ে পড়ে গিয়ে আর উঠলো না। আমরা থার্ড আম্পায়ারের কাছে যাচ্ছি শিশুটি আসলেই মারা গেছে কি না বুঝতে। অত্যন্ত উৎকণ্ঠার সময়। এবং... মৃত্যু! উল্লাসে মেতেছে গ্যালারি। গ্যালারিতে শুধু ইজরায়েলি সমর্থকরাই নেই, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে গান গাইছে আমেরিকা, ইউ এন, ইংল্যান্ড, এবং অস্ট্রেলিয়ার দর্শকেরা। অভাবনীয় দৃশ্য। আরব বিশ্বের সমর্থকেরা প্রথমে প্যালেস্টাইনকে সমর্থন দেবে বললেও তারা কোন পক্ষ না নিয়ে চর্বি জরজর পাছায় তেল মেখে খেজুড়ের বিচি ঢুকাতে ঢুকাতে খেলা উপভোগ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্যাটজ দা স্পোর্টিং স্পিরিট! রাস্তা দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে একজন প্যালেস্টাইনি বালক, তবে ইজরায়েল যেভাবে চেপে ধরেছে তাতে তার রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ইজরায়েল এবার খেলার ধরণ পরিবর্তন করার পথে। বোমারু বিমানের বদলে মাঠে নামলেন মর্টার শেল। দর্শকেরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানালো। ছেলেটি দৌড়ুচ্ছে, দৌড়ুচ্ছে, দৌড়ুচ্ছে, অত্যন্ত ক্ষিপ্রগতিতে। কিন্তু মর্টার শেল থেকে বাঁচতে পারলো না। তার মাথায় শেল ঢুকে কান দিয়ে বের হয়ে গেছে। রক্ত বেরুচ্ছে।, মগজের কোষ থেকে থিকথিকে ধুসর পদার্থ বের হয়ে আসছে। ছেলেটি পড়ে গেলো। কাঁপছে। এবং আরো একটি মৃত্যু। অভিনন্দন ইজরায়েল। এই ছেলেটির মৃত্যুর মাধ্যমে তাদের শতক পূর্ণ হলো। শিমেল ভাই আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন।
-আমি সত্যিই গর্বিত। আর প্রতিক্রিয়া রতিক্রিয়া যাই বলুন আমি আমার বাপমা ওবামার কাছে এজন্যে কৃতজ্ঞ।
-সত্যিই উনার পাছার পিচুটে মল অত্যন্ত সুস্বাদু। আমরা সৌভাগ্যবান যে এই অমৃতের সন্ধান পেয়েছি। তবে শিমেল ভাই, আপনার মলও কিন্তু অত্যন্ত সুস্বাদু। আমরা, জাতিসংঘের মহাসচিবেরা উত্তরাধিকার সূত্রে আপনাদের হেগো পাছা চাটার স্বাদ পাই। এটা আমাদের কাছে ভিটামিনের মতো। আমরা বৃহৎশক্তির পাছার মল চেটে উজ্জীবিত হয়ে ক্ষুদ্রশক্তির অপমানজনক মৃত্যু অবলোকন করে রাগমোচনের আনন্দ পাই। ফিরে আসি খেলায়। ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের আক্রমন আরো জোরদার হয়েছে। খুব দ্রুত লাশ পড়ছে। কেউ ঘাড় ভাঙা, কেউ রক্তস্নাত, কেউ পাথরচাপা, আবার কেউবা মাতৃগর্ভেই বিনষ্ট। এখন পর্যন্ত ইজ্রায়েলের স্কোর ১২১।
সুধী দর্শকমণ্ডলী, খেলা চলবে। গোলমাল করবেন না। আপনাদের মানবিকতার পায়রা আমাদের ডলার শ্বাপদ গিলে খেলবে। আমি, বলদ কি মুন ইজরায়েল এবং আমেরিকার পাছা চেটে বলবান হয়েছি। আপনারা কেন পিছিয়ে থাকবেন? সো, ভিউয়ার্স, স্টে টিউনড উইথ আস। আপাতত আজকের মত এখানেই বিদায়। আরো চমকপ্রদ এবং রক্তাক্ত মৃত্যু নিয়ে আমি অপেক্ষমান আপনাদের প্রদর্শন করাতে। খেলার কিন্তু এখনো অনেক বাকি। আমরা হৃষ্টচিত্তে অপেক্ষা করছি কখন সেরা দশ গণহত্যার তালিকায় এই চলমান খেলার নাম আসে...