somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১১৫

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[পূর্বকথা - কৃষ্ণের কথা মত অর্জুন সরস্বতীর তীর থেকে সুভদ্রাকে হরণ করলেন...যদুবীররা ক্রুদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করল ... সুভদ্রা অর্জুনের সারথি হলেন...যদুবীররা পরাস্ত হতে লাগল ..... এ সংবাদ বলরাম শুনে কৃষ্ণের উপর অভিমান করতে লাগলেন... ]

বলরামের সহিত শ্রীকৃষ্ণের কথাঃ



দূত পুনরায় জোড়হাতে বলে –হে যদুনাথ, নিঃশব্দ রয়ে গেলেন কেন! আজ্ঞা করুন আমি এখন কি করি! কুমাররা আমায় বার্তার কারণে পাঠালেন! যাদব প্রধান মহাবীর কামদেব যিনি তিনলোকে অব্যর্থ তাঁর ধনুর্গুণ তিলতিল করে কাটা গেছে। একটিও আর অস্ত্র নেই, তূণও শূন্য। শাম্ব, গদ, সারণ প্রমুখ যতবীর যাদবরা আছেন, কারো তনুই অক্ষত নয়। কারো ধ্বজা কাটা গেছে, কারো বা সারথি, কারো রথ নষ্ট হয়েছে-সে এখন পদাতি। কারো অস্ত্র, ধনুর্গুণ কিচ্ছু নেই। সবাইকে একা অর্জুন জয় করেছেন। এখন আপনারা অস্ত্র, রথ, অশ্ব সব পাঠাবার ব্যবস্থা করুন। আপনি চলুন বা দেবকীপুত্র কৃষ্ণ চলুক সব স্বচক্ষে দেখে আসবেন। কুমারদের পক্ষে অর্জুনকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। অর্জুনও স্নেহ করে কুমারদের প্রাণে মারেন নি। তাই প্রভু, তারা এখনও পরান নিয়ে বেঁচে আছেন।

গোবিন্দ বলেন –আমি অর্জুনকে চিনি। তাকে পরাজিত করার মত পৃথিবীতে কাউকে দেখি না। আজ এমনকি ইন্দ্র, যম, কুবের, বরুণ, পঞ্চাননও পার্থকে জিততে পারবেন না। কুমাররা তাঁর কাছে শিশু , তারা আর কি করবে! তুমি সত্যই বলেছ পার্থ তাদের প্রাণে মারবেন না। তাঁর সাথে যুদ্ধ করা উচিত নয়। সে তো অন্যায় কিছু করেন নি! শাস্ত্র মতে ক্ষত্রিয়ধর্মে বলপ্রয়োগ করে বিবাহের প্রশংসা আছে, যেখানে কন্যার সম্মতি আছে। ধনঞ্জয়ের দোষ দেখি না।
আমাদের ভগিনীর কাজটাও দেখুন। অর্জুনে যদি তাঁর মন না থাকত, তবে সে অশ্ব চালাত কেন! তবে ধনঞ্জয় কি আপনার মহিমা জানেন না! আপনি এখনই গিয়ে তাঁর গরিমা খর্ব করতে পারেন। তবে পার্থকে জীবন্ত ধরা সম্ভব নয়। অনেক চেষ্টা করে তাকে প্রাণে মারতে হবে। পার্থকে হত্যা করলে সুভদ্রাও প্রাণ ত্যাগ করবে। বলুন দেবতা তাতে কি কর্ম সাধন হবে!
এমন অবস্থায় আমার মত যদি সবাই আজ্ঞা দেন তো জানাই। আপনার প্রিয়ম্বদ কেউ অর্জুনের কাছে যাক। প্রিয় বাক্যে কুন্তীকুমারকে তুষ্ট করে ফিরিয়ে আনুন। এখনই তাকে এনে ভদ্রাকে তাঁর হাতে সমর্পণ করুন। এতে সবার মঙ্গল হবে। লোকসমাজে সম্মান থাকবে। আমার মনে আর কিছুই আসছে না।

কৃষ্ণের এত কথা শুনে হলধর বলরাম ক্রোধ সংবরণ করে বলেন –আমাকে আর জিজ্ঞেস করছ কেন! তোমার মন যা চাইছে তাই কর। তোমার মনে যা আছে তাই হবে। তোমার অন্যথা আর কে করতে পারে। তখন যদি তোমার কথা মেনে নিতাম, তাহলে এখন আর আমায় এমন লজ্জায় পরতে হত না।

এরপর বলরাম সাত্যকিকে ডেকে বলেন –আপনি এখনই আমার প্রতিনিধি হয়ে অর্জুনের কাছে গিয়ে তাকে মধুর বচনে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনুন।
এই বলে সাত্যকিকে রথে চড়িয়ে যুদ্ধ স্থলে পাঠালেন।

আদি পর্ব মহাভারতের বিচিত্র উপাখ্যান, কাশীরাম দাস কহেন, সাধুজন সদা করেন পান।
......................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
......................................
আগের পর্ব:

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১১৪ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×