somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

দীপু সিদ্দিক
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে। সাগর মহাসাগর পেরিয়ে অনেক দুরে এসে শত জটিল গবেষণা করলেও জন্মস্থানের সাথে নিয়তই নাড়ির টান অনুভব করে যাই। আর বাংলাভাষা যে মস্তিস্কের অনেকটা স্থান জুড়ে আছে, তা সহজেই অনুমেয়।

ভালবাসার গল্প (প্রথমাংশ)

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কৈশরের প্রেম বলেই হয়তো মনে ভীষণ দাগ থেকে গেছে। দাগ থেকে ক্ষত এবং অবশেষে ক্ষতটা মনে হচ্ছে ক্যান্সারে পরিণত হচ্ছে। যে ক্যান্সার আমার মানুসিক সকল শক্তিকে অবশ করে দিয়ে আমাকে জড় পদার্থে পরিণত করার পর্যায়ে এখন। আমি কি সত্যিই অনুভুতি শুন্য? হয়তো আমি তা’ই।
নুড়ি। আমার জীবনের সকল সৃষ্টি ও প্রলয়ের কারণ। কেমন আছে, আমি সত্যিই জানি না এখন। শেষ দেখা হয়েছিলো অনেক আগে। অন্তত ২০ বছর তো হবেই। মফস্বল শহরে ভালো রেস্তোরা বলতে গেলে এখনো পর্যন্ত হাতে গোনা। আমাদের ছোট শহরের বিখ্যাত ‘ইলিশ’ রেস্তরার সেই ঈদের পুনর্মিলনীতে সেই শেষবার নুড়ি’কে দেখলাম। দুই সন্তানের জননী। হাসিখুশি মুখের ১১ বছরের মেয়েটির উজ্বল চোখ আমাদের মহাজনি পাড়ার উত্তর কোনের সেই নুড়ি’র কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। আর ৮ বছরের ছেলেটি চুপচাপ চিংড়ি মাছের চপ খেতে খেতে মায়ের পাশে বশে সবাইকে দেখছিলো। সেই ঈদের পুনর্মিলনীতে নুড়ি ছিলো সাদাসিধে এক বিবাহিত মহিলা।
অবশ্য নুড়ি হয়তো সব সময়ে সাধাসিধেই ছিলো। সত্যিই কি তাই? যেই রাতে নুড়িকে ভেবে ভেবে সারা রাত মফস্বলের রাস্তা ছাড়িয়ে গ্রাম পর্যন্ত হেটেছিলাম, তখনতো ওকে সাধাসিধে মেয়ে মনে হয় নি। আমার কাছের বন্ধুরা অবশ্য নুড়ির ব্যাপারে খুব একটা জোড়ালো সমর্থন দেয়ও নি। বলেছিলো, মেয়েটা একেতো আমাদের একই ক্লাসে পড়ে, তার উপরে তেমন সুন্দরি না, বাপেরও তেমন পয়শাপাতি নাই, ক্লাসে ভাল রেজাল্টও নাই। কিসের জন্য এমন একটা সাধারণ মেয়ের জন্য মাথা গরম করছিস?’
কিন্তু গার্লস স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক বাতেন স্যারের বাসায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে যেদিন প্রথম নুড়ির অগোচরে চুড়ি করে ওর খাতার ভেতরে ‘প্রেমপত্র’ গুজে দিয়েছিলাম, তখন তো ওকে সাধাসিধে মনে হয় নি। অথবা পরের দিন পড়তে আসা অতি স্বাভাবিক চেহারার নুড়ি’কেও তো সাধাসিধে মনে হয় নি। সত্যি বলতে কি, নুড়িকে আমার কখনই সাধারণ মেয়ে মনে হয় নি। এখনও মনে হয় না। হয়তো ওকে সাধারণ মেয়ে ভাবতে মন চায় না।
বছর পেরিয়ে যেতে লাগল। মাঝে মাঝেই মন খারাপ করতাম। মাঝে মাঝে আমাদের পাড়ার সামনে দিয়ে নুড়িকে হেটে যেতে দেখে ফাঁকা দীর্ঘস্বাস ছাড়তাম। কলেজ শেষে বি.এ. পড়ার জন্য তিতুমীর কলেজে আসার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করলাম। হঠাৎ’ই একদিন আমাদের পাড়ার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া তাহের এসে একটি ইংরেজি বই দিয়ে গেলো। নুড়ির বই।
দুপুর আড়াইটায় করম চাচার চায়ের দোকানের কোনের দিকের একটি কাঠের পুরোনো চেয়ারে বসে চিড়কুটের মত কাগজটা আরেকবার পড়লাম। ‘আড়াইটার সময়ে করম চাচার চায়ের দোকানে আসতে পারবে কি?’- গুটি গুটি হাতে নুড়ির লেখা। কিছুটা ভয় আর আশংকা হচ্ছিলো। তবে খারাপ কিছু ভাবতে চাইলাম না। নুড়ি আসলো। একা। আমার সামনের চেয়ারটাতে বসলো। কোন দিকে তাকালো না।
৩০ সেকেন্ডের মত চুপ করে থেকে বলল ‘ছোটন, তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও?’
‘হুম, চাই’ আমি ঝট করেই উত্তর দিলাম। আমি বিষ্ময়ে থমকে গেলাম। কি বলব, ভেবে পেলাম না। হুট করেই বললাম ‘চা খাবে?’
‘নাহ্ !’ ও কিছুখন চুপ করে বলল ‘কে যে আবার কি বলাবলি করে’।
আমি কিছু বললাম না। বলার মত কিছু পাচ্ছিলাম না আসলে। ১ মিনিটের মত সময়কে অনেক দীর্ঘকাল বলে মন হলো। আমি ঘামছিলাম।
ও বলল ‘আমি যাই।‘ আমি উঠে দাড়ালাম। ও চলে গেলো। দুপুরের সময়ে চায়ের দোকানে কেউ হয়তো ছিলো না। করম চাচা দুই কাপ চা দিয়ে গেলো। (চলবে)



মধ্যাংশ-এর লিংক: Click This Link
শেষাংশ-এর লিংক: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×