আমরা তৃতীয় প্রজন্মের মানুষ । আজকের এই তৃতীয় প্রজন্মে এসে আমরা কম্পিউটার পেয়েছি, পেয়েছি ইন্টরনেট, পেয়েছি প্রজন্মের সর্বাধুনিকতম আবিষ্কার ও প্রযুক্তি । এসেছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্ত । এসেছে রাজনৈতিক ধারার নিয়ম কানুনেরও পরিবর্তন। এত কিছুর পরও আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত ও বঞ্চিত।
এইটা আমি মানি যে, আমাদের বর্তমান সমাজ তাদের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিবস দিয়েছে, তাদের জন্য সরকার করেছে আইনের ব্যবস্থা । কিন্তু নারীরূপী একজন মানুষের নিরাপত্তা ও মানুষের মত বেঁচে থাকার অধিকার কি আমাদের নারীরা এখনও পেয়েছে।
এখনও আমাদের সমাজে একজন নারীকে অমানবিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়। যার কোন প্রতিকার হয়নি । তাদের ব্যাপারে অতীত থেকে যা চলে এসেছে এখনও তাই চলছে । সমাজ আজ তাদের জন্য শুধু আইন আর দিবসের ব্যবস্থায় করেছে এর থেকে বেশি কিছু নয়।
বর্তমান সময়ে শহরে বসবাস করা নারীরা হয়ত কিছুটা আধুনিক হয়ে নিজেকে সময়ের সাথে মানিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের সংখ্যাও হাতে গুনা কয়েকজন। গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থায় এখনও চলছে নারীদের উপর অমানবিক অত্যাচার । যার কোন বিচার নেই, নেই কোন শেষ।
একজন নারী যখন কোন পুরুষের লোলুপ দৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য সমাজের সমাজপতিদের করেছ বিচার প্রার্থনা করে, তখন সমাজপতিদের বিচারে একজন নিরাপরাধ নারীর শাস্তি হয় বেশি। বেশ কিছু দিন আগে কোন এক পত্রিকায় পড়েছিলাম, " কোন এক গ্রামে এক ধর্ষিত নারীর বিচার করতে গিয়ে সমাজ পতিরা সেই ধর্ষিতা নারীর মুখে চুন কালি মাখিয়ে, মাথা কামিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরানোর শাস্তি দিয়েছে আর সেই পিশাচ পুরুষটি অল্প কিছু মুচলেকা দিয়েই ছাড়া পেয়ে গেছে।..." হায়রে এটাই আমাদের সমাজ ব্যবস্থা। যেখানে আমরা শুধু মুখে নারী মুক্তির আন্দোলন করে করে মুখে ফেনা তুলে ফেলছি, আর তারই আড়ালে এক পৈশাচিক হিংস্র অত্যাচারীকে লুকিয়ে রেখেছি।
আগেকার সমাজ ব্যবস্থায় নারী চার দেওয়ালে বন্দি ছিল । যত অত্যাচার, সুখ- আনন্দ যাই তাদের ভাগ্যে ছিল তারা তা মুখ বুঝে সয়ে গেছে, এখনও যাচ্ছে। পার্থক্য শুধু এইটুকু যে, সেই সেময় তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের আপন জনদের মাধ্যমে অত্যাচারিত হয়েছে। আর এখন ঘর এবং বাহির সব জায়গাতে তারা অত্যাচারিত হয়ে যাচ্ছে ।
আমারা তাদের ঘরের সেই চার দেওয়াল থেকে বাইরে এনেছি ঠিক । কিন্তু ঘরের বাইরে তাদের জীবন আর সম্মানের নিরাপত্তা দিতে পারিনি।
সময় এসেছে আমাদের সেইসব চিন্তাধারা বদলানোর । সময় হয়েছে তাদেরও মানুষের মর্যাদা প্রদানের। সময় হয়েছে পক্ষপাতি বিচার ব্যবস্থা বদলানোর, ন্যায়-এর প্রতিষ্ঠা করার ।
সময় হয়েছে নারী পুরুষের পার্থক্যভুলে সবার একাত্ম হওয়ার।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





