অরণ্যে পাখির চোখে- ৯: রিসাং ঝর্ণার জল ছুঁয়ে, আলুটিলা গুহার গহ্বরে
খাগড়াছড়িতে কেটে গেল একসপ্তাহর বেশী। এখনও দেখা হয়নি আলুটিলার রহস্যময়গুহা। দেখা হয়নি ঝর্ণাটিও। তখনও অবশ্যই দীঘিনালার বড় ঝর্ণাটি আবিস্কৃত হয়নি। আমি আর জুবেরী ছুটলাম গুহার দিকে। স্বভাবতই আমার আগ্রহই বেশী। জুবেরী এমনিতেই চাপা স্বভাবের মানুষ। তবে গাড়ি আমাদের নামিয়ে দিল ভুল জায়গায়। রিসাং ঝর্ণার দিকে যাওয়ার পথে। গাড়ি থেকে নেমেই একচোট গালি দিলাম চালককে। কিন্তু মুহুর্ত পরেই ভুল ভাংলো। বেচারা আমাদের নতুন একটি জায়গার সন্ধান দিয়েছে। রিসাং ঝর্ণার কথা আমরা জানতামই না। গাড়ি থেকে নেমেই পথের মুখে দুইটি পাকা দোকান। সেখানে বসে চা-সিগ্রেট খেলাম। তারপর হাটা পথে রিসাং র্ঝণার দিকে ছুটলাম। প্রায় দুই কিলোমিটার। পাহাড়ী উচু-নিচু পথ। পথেই দেখা হল একদল টহলরত সেনাসদস্যের সঙ্গে। তারা জানতে চাইলেন কোথায় যাচ্ছি। প্রখর রোদে হাটতে হাটতে আমরা পৌছুলাম রিসাং ঝর্ণার কাছে। ঝর্ণার নামতে হয় বেশ কিছুদুর। নামার আগেই কয়েকটি গাছকে ঘিরে পাকা বেঞ্চি বানিয়ে দেয়া হয়েছে পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য। তারপর পেছানো সিড়ি দিয়ে প্রায় দুইশ মিটার নামা। নামতে নামতে কয়েকবার থমকে চারপাশের সৌন্দর্য্য উপভোগ করলাম। শেষে ঝর্ণায় নেমেই হাতমুখ ধুয়ে নিলো জুবেরী। তারপর আমরা ঝর্ণার ক্ষীনধারাটির কাছে গেলাম। জলধারা যেখানে এসে পড়েছে সেখানে থেকে অন্তত ১৫মিটার অ™ভুতভাবে ধারালো পিচ্ছিল হয়ে কেটে গেছে পাথর। মনে হবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বেশকিছু ছবি তুললাম। তারপর ঝর্ণার উৎস দেখার লোভে দুইজনই উঠে পড়লাম উপরের দিকে। তবে উৎস আর দেখা হয় না। পানির ধারাটি নেমে আসছে আরও গভীর জঙ্গলের ভেতর থেকে। যেদিকে যাওয়ার সাহস ও সময় কোনটাই আমাদের নেই। তবে সেখানেই বসেই কিছুক্ষণ ধ্যান করলো জুবেরি। প্রায় ঘন্টা খানেক থেকে দুইজনই ফিরতি পথে সিড়ি ভাঙতে শুরু করলাম। আমি পাহাড়ী পথে অভ্যস্থ হলেও সে একটু কাচা। যদিও সুযোগ পেয়েই পাহাড়ে ছুটে সে। সিড়ি ভেঙ্গে বেঞ্চিতে এসে শুয়ে পড়লাম দুজনই। পূর্বদিকে দূর পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে গানও গাইলাম মনখুলে। কাছেই দেখি ডানদিকে (দণি-পূর্বদিকে) একটি পথ নেমে গেছে। সে পথের গোড়াতেই একটি বেল গাছ। আমি একটি বেল আর বেলগাছে শুকিয়ে ঝুলে থাকা কয়েকটি ধুন্দুলের জালি পাড়লাম।
ফিরতি পথে কিছুদুর আসতেই হাতের ডানপাশে কয়েকটি ত্রিপুরাবাড়ি। একটি বাড়ির সামনে বাঁশের বেঞ্চিপাতা দোকান। দোকানে বসে আছেন একজন মধ্যবয়সী ত্রিপুরা নারী। কান্ত জুবেরীকে নিয়ে সেখানে বসলাম। চা খেতে খেতে আমি খোলাগায়ে ওই ত্রিপুরা নারীর সঙ্গে ছবিও তুললাম। হাতে ধুন্দুলের জালি নিয়ে তার সঙ্গে চললো কিছুক্ষন দুষ্টামিও। দোকান থেকে বেরিয়ে আরেকটু আসতেই হঠাৎ চোখ আটকে গেল একটি পাতাঝরা গাছে। সেখানে ঝুলছে বেশকিছু ঘিলা শিম (তলোয়ার সদৃশ একধরনের পাহাড়ি শিম)। এ শিমগুলো নিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনেকগল্প-গাথা আর সংস্কার আছে। লোকজন এটিকে লক্ষীর উপচার হিসেবেই জানে। গল্প আছে- কেউ ঘিলা ফুল ফুটতে দেখলে সে রাজা-বাদশা হয়। অনেকে এটিকে ভাগ্যের বর হিসেবে ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখে। আমাদের বাড়িতেও একখন্ড আছে। ঢাকায় এ শিম দেখলে লোকে আর যাই হোক না হোক দারুণ মজা পাবে। কিন্তু অনেক বলার পরও ওই বাড়ির লোক সে শিম বিক্রি করতে রাজী হলেন না। রিসাং ঝর্ণার পথটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি রাস্তার যে জায়গায় এসে মিশেছে তার একটু আগে আবারও চোখ আটকে গেল। যাবার সময় আমরা উত্তেজনার বশে খেয়ালই করিনি পথের বাম পাশে এক অ™ভুত সুন্দর ফুল ফুটে আছে। মাটি থেকে কঞ্চি টাইপের ১০-১২হাত লম্বা একধরনের গাছে গোড়া থেকে আড়া ফুল ফুটেছে। এ ধরনের দৃশ্য দেখা যায় কাঠাল গাছের ক্ষেত্রে। কিছুকিছু প্রজাতির কাঠাল আছে যেসব গাছের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত কাঠাল ধরে। সেখানে দাড়িয়েও ছবি তোলা হল। খাগড়াছড়ি ফিরতে গাড়ির জন্য দাড়িয়ে আছি এমন সময় একটি পাহাড়ি যোয়ান একপাল গরু নিয়ে যাচ্ছে। গরুর গলায় কাঠের ঘন্টা। এ আরেক আশ্চর্য্যরে জিনিষ। এটা দেখে জুবেরী বেশ মজা পেল।
খাগড়াছড়ি ফেরার পথেই আলুটিলা। সেখানেই রহস্যময় সুড়ঙ্গ। রাস্তার দুইশ মিটারের মধ্যেই আনুমানিক ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে আকাবাকা সে সুড়ঙ্গ। দুইজন কেরোসিনের ভরা বাশের চোঙ্গার মুখে কাপড়ের ফিতা জ্বালানো ুদে মশাল নিয়ে সুড়ঙ্গে ঢুকলাম। সুড়ঙ্গে ঢুকতে হয় নীচের দিক থেকে আর বেরুতে হয় উপরের দিকে। কারণ পথে কয়েক জায়গায় উচু নিচু ধাপ পেরুতে হয়। সুড়ঙ্গের মুখেই ছবি তুললাম। তবে ভেতরে ঢুকতে আপত্তি করল জুবেরী। তার আপত্তি দেখে আমি ব্লাকমেইল করার হুমকি দিলাম। শেষে দুইজন সুড়ঙ্গের কিছুটা ঢুকেই গভীর অন্ধকারে ডুবে গেলাম। পায়ের নিচে হিমশীতল জল। তীব্র হাওয়া নিভিয়ে প্রায়ই নিভিয়ে দিচ্ছে দগদগে মশাল। অন্ধকারে রীতিমতো খাবি খাচ্ছি। একটু পরেই বাদিকের অল্পএকটু ঢুকেই আরও গভির অন্ধকারে পড়লাম। পরে কি বুঝে যেন বেরিয়ে ডানদিকে এগুলাম। এরই মধ্যে মশাল নিভে গেল। সেখানে দাড়িয়ে জুবেরী আমাকে বকাবকি শুরু করতেই পেছনে একটি আলোর রেখা দেখা গেল। দেখি পেছনে আরও কয়েকজন এগিয়ে আসছে। এবার তাদের কাছে মশাল জ্বালিয়ে কয়েকটি মশালের মোটামুটি ফর্সা হয়ে আসা পথে বাকিপথটুকু পার হলাম। সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে মনে হল কবরের নিঃস্তব্ধতার কথা। একটু আগে ভূমিকম্প হলেই আমরা চাপা পড়তে পারতাম এ সুড়ঙ্গে। রীতিমত শিহরিত দুইজন আলুটিলা স্টপিজে এসে বসলাম। সেখানকার বটগাছটির গোড়া পাকা করে বাধিয়ে দেয়া হয়েছে। সে পাকা গোড়ায় লেখা আছে কবিতার নানা পঙক্তি। সবগুলো পঙক্তিই খাগড়াছড়িতে কর্মরত সাবেক জেলা প্রশাসকদের। জুবেরী একচোট হেসে নিল। খাগড়াছড়ি আর আলুটিলা ডিসিদের কবিতা লিখিয়ে ছাড়ে। সেখানে বসেই কয়েকজন বুড়ো লোকের কাছে সুড়ঙ্গের নানা গল্প শুনলাম। একটি গল্প হচ্ছে- এককালে এ সুড়ঙ্গের মুখে আগের দিন কিছু চাওয়া হলে পরের দিন তা পাওয়া যেত। তবে নির্দিষ্ট সময় পরে তা ফেরত দিতে হতো। কিন্তু মানুষজনের বিশ্বাসভঙ্গের কারণে একপর্যায়ে তা বন্ধ হয়ে যায়। খাগড়াছড়ি ফিরে আমার সহকর্মী ইব্রাহীম আতকে উঠলো। বললো, সুড়ঙ্গের বাম দিকে গেলেই দফারফা হতো। তারা নাকি বাল্য বয়সে কয়েকবন্ধু ওই পথে হারিয়ে গিয়েছিলেন। পরের দিন সন্ধ্যায় দুর মাটিরাঙ্গার দিকে কোন এক জায়গায় একপথ দিয়ে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু সুড়ঙ্গটি সেখানেও শেষ হয়নি।
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।