পৃথিবীর মানচিত্রে যতদিন বাংলাদেশ নামক দেশটির অস্তিত্ব থাকবে এবং ইতিহাসে আমরা বাঙালী জাতি হিসাবে স্বীকৃত থাকব, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যেমন অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন, তেমনি চির অম্লান থেকে যাবে স্বাধীনতার মহান বীর জনাব জিয়াউর রহমানের নাম। এ দজন মহান ব্যক্তিত্বকে সমালোচনার হাতিয়ার বানিয়ে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া করে দেশের পক্ষে কারো উদ্দেশ্য কোনদিন হাসিল হতে পারে না। বাংলাদেশের অভূ্যদয় এবং স্বাধীনতার পিছনে এঁদের অবদান এবং কৃতিত্ব অস্বীকারকারী প্রত্যেকে আমাদের প্রকাশ্য শত্রু। এদের থেকে আমাদের সবাইকে বিশেষতঃ নবীন সমাজকে সতর্ক থাকতেই হবে। চুলের রুপোলী ভাঁজ দেখে এদের ভেজাল অভিজ্ঞতা এবং ব্ক্তব্যের ফুলঝুড়িতে প্রভাবিত হলেই নবীন সমাজের পক্ষে প্রকৃত সত্যের সন্ধান পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। যদি বা কোনসময় সত্য মিলেও, ইট কুড বি টু.. লেট বাই দেন !
আজ আমরা যুদ্ধোপরাধীদের বিচার নিয়ে হৈচৈ করছি কিন্তু কখনও কি চিনতে পেরেছি সেই সমস্ত ভেজা বিড়ালদের যারা আমাদের সতর্কতার আড়ালে গোপনে শান্তিপ্রিয় বাঙালীর মনে বিভ্রান্তির বীজ ছড়াচ্ছে? টিভি খুললেই বিভিন্ন টকশোতে এই ধরণের ব্যক্তিদের আমরা দেখতে পাই! সুন্দর সুন্দর মিষ্টি মিষ্টি কথা ও মিথ্যে দেশপ্রেমের ভণিতায় বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের সরল মানুষের মগজ ধোলাইয়ের চেষ্টা চলছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাঙালী জাতির জনক। তিনি না থাকলে বাংলাদেশের জন্ম আদৌ হতো কিনা সন্দেহের অবকাশ থেকে যায়! একইভাবে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়াকালীন এই জাতির দুঃসময়ে যিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দেশের জনগনকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়ে বেতারে ঘোষণা দেয়ার মত সাহস দেখিয়েছিলেন, তিনি মেজর জিয়া। ঐ সময়তো অনেক বীরপুরুষ ছিলেন কিন্তু জিয়াউর রহমানের মত সত্যিকার সাহসী ছিলেন? তদান্তিন পাকিস্তান বাহিনীর একজন কর্মরত অফিসার হিসাবে, মেজর জিয়াউর রহমান যে ঝুকি নিয়েছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এর নজীর খুব কমই পাওয়া যাবে। এই মহান বীরপুরুষকে স্বাধীনতার আবেগ এমনভাবে প্রভাবিত করেছিল যে তিনি নিজ পরিবারকে সেনানিবাসে বিপদের মুখে রেখে আসতেও দ্বিধা করেননি! নিজ স্বার্থের উপরে উঠে জাতীয় স্বার্থকে বড় করে দেখতে পারাতেই তিনি এতটা সাহসী হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। এধরণের মটিভেশন শুধুমাত্র সেজনের মধ্যেই আসতে পারে যিনি বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার আদর্শে শতভাগ মটিভেটেড ছিলেন।
আজ আমরা বড়ই দুঃখের সাথে দেখতে পাই এই দুই মহান ব্যক্তিত্বকে নিয়ে কিভাবে দুইটি প্রতিপক্ষদল সমালোচনার ঝড় তুলতে এতটুকুও লজ্জাবোধ করেননা। কি অদ্ভুত আমরা এই বাঙালী জাতি!! নিজেদেরই দুই মহান ব্যক্তিত্ব অথচ নিজেরাই তাদের হেয় করতে সচেষ্ট। বড়ই দুঃখবোধ হয় যখন দেখি বাংলার সন্তানেরা তাদের পিতামাতাকে অস্বীকার করে। পিতামাতা এবং মুরুব্বীদের অসম্মান করে যে সন্তানেরা সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনা তার উজ্জল দৃষ্টান্ত আমরা এই বাঙালী জাতি।
আমাদের উচিত সব ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে একসঙ্গে দেশের হয়ে কাজ করে যেতে হবে। তার আগে প্রয়োজন দেশকে গৃহশত্রুমুক্ত করা। গৃহশত্রুমুক্ত আমরা যতদিন না হতে পারব, আমাদের উন্নতির আশাও ক্ষীণ। সঠিক জ্ঞানে জ্ঞানী না হলে আমরা এভাবেই প্রতারিত হতে থাকব। নবীন সমাজকে পড়াশুনা করেতে হবে, সঠিক ইতিহাস জানতে হবে, বিহ্যাভিয়ারাল সাইন্স-এর উপর দখল আনতে হবে। প্রবীণদের কাছে বেশী কিছু আশা করা ঠিক হবে না। তারা অনেক দিয়েছেন। এখন নবীন সমাজকেই হাল ধরতে হবে। মটিভেশনের ধারা পাল্টাতে হবে। স্বাধীনতাকে সমালোচনার উর্দ্ধে রাখতে হবে এবং পারতপক্ষে স্বাধীনতা নিয়ে টকশো বন্ধ করতে হবে। গালভরা বুলি ভূলে গিয়ে কাজে লেগে যেতে হবে। জাতির জনক এবং স্বাধীনতার বীরদের যোগ্য সম্মান দিতে হবে। আত্মসম্মানবোধ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সর্বোপরি সহনশীলতার চর্চা অব্যহত রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে দেশের শত্রুদের জন্য কঠোর ও উদাহরণমূলক শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। আর এভাবেই একদিন সত্যিকার সোনার বাংলা গড়ে উঠতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




