somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধু ফ্লাইওভার করলেই কি জ্যাম কমে যাবে ? না কমলে কইরা কি লাভ ?

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীর যানজট নিরসনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে উড়াল সড়ক। কিন্তু এসব উড়াল সড়ক যানজট নিরসনে কার্যত কোনো ভূমিকাই রাখছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সঠিক পরিবহন বা যোগাযোগ পরিকল্পনা না করে এসব উড়াল সেতু নির্মাণ শুধুই দেশের দেনা বাড়াবে।
ফ্লাইওভার বা উড়াল সেতুর সঙ্গে রাজধানীবাসীর পরিচয় মহাখালী ও খিলগাঁও উড়াল সড়কের মাধ্যমে। ১১৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম উড়ালসেতু নির্মাণ করা হয় মহাখালীতে। ৬৬৭ দশমিক ৭৮ মিটার দীর্ঘ এই উড়ালসেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় ২০০৫ সালে। এটি মহাখালী রেলক্রসিং থেকে বনানী পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে। উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেতগামী গাড়িগুলো মহাখালী রেলক্রসিংয়ের দীর্ঘ সিগন্যাল থেকে রক্ষা পেয়েছে এই উড়ালসেতুর কল্যাণে। কিন্তু গুলশান, বনানী, বাড্ডা রুটে চলাচলকারী পরিবহনের জন্য কোনো সুফলই আনতে পারেনি এটি। ফলে মহাখালী এলাকার চিরচেনা যানজট এখনো পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
একই বছর ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খিলগাঁও-বাসাবো উড়ালসড়ক খুলে দেয়া হয় যান চলাচলের জন্য। রামপুরা-খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া ও আশপাশের এলাকা থেকে মতিঝিল যাতায়াতের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই এতে। ফলে খিলগাঁও রেলক্রসিংয়ে দীর্ঘ যানজট রয়েই গেছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নেয়া তেজগাঁও-বিজয় সরণি উড়ালসড়কটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় ২০১০ সালে। এটি কার্যত কোনো যানজট নিরসন তো করেইনি, বরং বিজয় সরণিতে সৃষ্টি করেছে দীর্ঘ যানজটের।
খিলগাঁও, মহাখালী উড়াল সড়ক যেখানে যানজট নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াল সেতু ও সড়ক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। রাজধানীর সবচেয়ে বড় উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্থান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা।
হাজার হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক অনুদাননির্ভর এসব উড়াল সড়কও সেতু কতটুকু কাজে আসবে, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। তাদের অনেকেই মনে করছেন, এসব ফ্লাইওভার শুধুই দেনা বাড়াবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, “যেকোনো মেগাসিটিতে ফ্লাইওভার প্রকল্প যানজট নিরসনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে প্রকল্পগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রহণ করা হচ্ছে কি না। ট্রান্সপোর্ট মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প গ্রহণ করলে তা অবশ্যই ফলপ্রসূ হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তার সব কটিই ট্রান্সপোর্ট মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী হচ্ছে না।”

ইকবাল হাবীব বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে গ্রহণ করা এসব প্রকল্প দেখে মনে হয়, শুধু বৈদেশিক মুদ্রা খরচের জন্যই এগুলো করা হচ্ছে।”
এই নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, “আমাদের ভাবতে হবে, এসব ফ্লাইওভার কাদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর ওপর দিয়ে কোন ধরনের পরিবহন চলাচল করছে। আসলে এসব ফ্লাইওভার দিয়ে প্রাইভেট কার ছাড়া অন্য কোনো পরিবহন চলাচল করবে না। এর কারণ হচ্ছে, গণপরিবহনকে প্রতি আধা কিলোমিটারের কম দূরত্বে যাত্রী ওঠানো-নামানো করতে হয়। ফলে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে কখনোই এসব গণপরিবহন চলাচল করবে না। যদি দূরপাল্লার পরিবহন হতো তাহলে এসব ফ্লাইওভার ব্যবহার করা সম্ভব ছিল।”
ইকবাল হাবিব বলেন, “হিসাব করলে দেখা যাবে, মাত্র ১৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য এসব ফ্লাইওভার করা হচ্ছে। বাকি ৮৩ শতাংশ মানুষকে পোহাতে হবে দুর্বিষহ যানজট।”
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×