somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রলীগের কীর্তিগাথাঃ ২ - দেশী পত্র-পত্রিকা থেকে (এপ্রিল-জুন, ২০০৯)

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ ছাত্রলীগঃ সংবাদপত্র থেকে নেয়া তথ্য

বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরানো ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এদেশের সাধারণ মানুষের কাছে আজ এক আতঙ্কের নাম। ১৯৪৮ সালে অবিভক্ত পাকিস্তানে এই সংগঠনটি এদেশের মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্ররাই জাতির নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু এই ছাত্র সমাজ যখন হত্যা, রাহাজানি, লুটপাট, ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি, ভর্তি বাণিজ্য ও নানান ধরনের অন্যায়ের সাথে যুক্ত হয়, তখন পুরো জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। গত ২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮ নির্বাচনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ছাত্রলীগ এদেশে যে সীমাহীন অপকর্ম চালিয়েছে তা জাতির কাছে স্পষ্ট। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, এদেশের কর্তাব্যক্তিগণ ছাত্রলীগের অপকর্মকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার যে প্রবণতা দেখাচ্ছেন তা জাতিকে অন্ধকারের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে।

নীচে ছাত্রলীগের কীর্তিগাথার অল্পকিছু মাত্র তুলে ধরা হলঃ

ছাত্রলীগের কীর্তিগাথাঃ ১
================
এপ্রিল- জুন, ২০০৯

“ছাত্রলীগ করেই সন্ত্রাসী হয়েছি অস্ট্রেলিয়ার উচ্চশিক্ষাধারী দেবাশীষের বক্তব্য।”
‘সন্ত্রাসী ছিলাম না, ছাত্রলীগ করে সন্ত্রাসী হয়েছি। নেতার নির্দেশে খুন করেছি, চাঁদাবাজি করেছি। এখানে আমার দোষ নেই। শাহাদাত শীর্ষ সন্ত্রাসী হলে সে এখনো কিভাবে ছাত্রলীগের থানা সেক্রেটারী আছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি কেন? রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী মিরপুরের শাহাদাত বাহিনীর এক সদস্য অস্ট্রেলিয়া থেকে হিসাববিজ্ঞানে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী দেবাশীষ নামের ওই মেধাবী ছাত্রটি শাহাদাত বাহিনীর অপারেশন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। বনানীর ধাহমাছি ট্রাভেল এজেন্সিতে খুনের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে সে গ্রেফতার হয়েছে। এক বছর আগে দেবাশীষের ভাই সোহেলও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। সোহেলও শাহাদাত বাহিনীর একজন সক্রিয় ক্যাডার। দেবাশীষ বলেছে, নেতার নির্দেশে সে বাধ্য হয়েছে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি করতে। (নয়া দিগন্ত, ১৯/৪/২০০৯)

গত ২৯/২/২০০৯, দৈনিক ইত্তেফাক “ক্যাডারদের দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড বিব্রত” এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পেশ করে। যাতে বলা হয় “আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডারদের নীরব চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ও এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা ও লড়াই। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে নেতা-কর্মিদের শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশও দলীয় ক্যাডার বাহিনীর নিকট উপেক্ষিত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজের নির্দেশনাও একইভাবে উপেক্ষিত হয়ে আসছে। সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বিব্রত এবং সরকার হতাশ।”

গত ৩/৪/২০০৯, দৈনিক যায়যায় দিন “ছাত্রলীগের আগুনে পুড়ছে আ’লীগ” এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। যাতে বলা হয়, “নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে ছাত্রলীগ। বেশকিছু দিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের বিভিন্ন গ্রুপ নিজেদের একক আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে শাখা নেতাদের বয়সের ব্যবধান ও সুবিধাবাদী নেতাকর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণেই ছাত্রলীগের এ বেহাল দশা। ছাত্রলীগই এখন ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ হয়ে জড়িয়ে পড়ছে সহিংসতায়। ছাত্রলীগের এই আগুনে পুড়ছে আওয়ামী লীগও।”

গত ১২/৪/২০০৯, দৈনিক নয়া দিগন্ত “শাবিতে ছাত্রলীগের ৪ গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ১০: অস্ত্র উদ্ধার” এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যাতে বলা হয়, “সারা দেশে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি লাঞ্ছিত হয়েছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে উত্যপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শুক্রবার ছাত্রলীগের চার গ্রুপ দু’টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটালে ওই দিন গভীর রাতে শাবি’র দুই হলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। খেলাকে কেন্দ্র করে রাজু গ্রুপ ও আসাদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পৃথক এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।

“ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি নিয়ে হাইকোর্টের রুল”
ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজির ঘটনায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তিনটি টেন্ডার নিয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। দু’টি টেন্ডারের কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। (মানবজমিন, ১৩/৪/২০০৯)

“ছাত্রলীগের কোন্দলে ৬১ দিনে ৪ ছাত্রনেতা খুন দেশের ১৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।”
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত ৬১ দিনে সারাদেশে ৪ ছাত্রনেতা খুন হয়েছে ও আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এসব খুনের ঘটনায় সারাদেশে ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সর্বশেষ শুক্রবার বন্ধ হয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এসব ঘটনার নেপথ্যে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ভর্তিবাণিজ্য জড়িত বলে রিপোর্ট করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা। পুলিশ বলেছে, ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখাতে গিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার একজন যুগ্ম সচিব এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ডেসটিনিকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি অতীতের তুলনায় অনেক ভাল। (ডেসটিনি, ৫/৪/২০০৯)

“ঢাকা পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ৫ ঘন্টাব্যাপী সংঘষ”।
আবারো ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হলো। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রপের হামলা পাল্টা-হামলায় শিক্ষকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। (নয়া দিগন্ত, ২৮/৫/২০০৯)

“সাভারে তিন সহযোগীসহ ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার।”
ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফকরুল আলমসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাভারের হেমায়েতপুরের মোহাম্মদীয়া পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগের মামলায় গত সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ফকরুলের বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরক ও চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলঅ আছে। (প্রথম আলো, ৩/৬/২০০৯)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×