এখন দিনগুলি অন্যরকম। বয়স, সময়, অনুভূতি সব বদলে যাচ্ছে। আগে আমরা রোজার চাঁদ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম, বড়রা যখন বলত" আজ চাঁদ না উঠলে ভাল হবে", কি যে রাগ হত ! আর এখন হলেও চলে, না হলেও নাই। আমাদের সময় আর অনুভূতিগুলি লুটপাট হয়ে গেল।
আমার মনে আছে, একবার রোজা ছিল আমের দিনে। আমার বাবা সবাইকে জোর করে সেহেরীতে আমদুধ দিয়ে মেখে ভাত খাওয়াতেন, খেতেই হত... না হলে রোজা রাখা বাতিল। ইচ্ছার বিরুদ্ধে খেতাম যা বলত তা, দুধ, আম, কলা । কারণ রোজা রাখতেই হবে নাহলে লাড্ডুগুড্ডু হয়ে যাব। সেহেরী খেতে উঠার সময় এমন ভাবে উঠতাম আস্তে আস্তে যেন আমার ছোট বোনের যেন ঘুম না ভাঙ্গে, তাহলে আমি একটা রোজা দিয়ে এগিয়ে যাব। সেও উঠলে এমনই করত...
কিন্তু আমি তেমন রোজা রাখতে পারতাম না, খাবারের সামনে গেলে খেয়ে ফেলতাম। আমি মনে হয় রোজা রাখা শুরু করেছি কলেজে পড়তে গিয়ে।
আর আমার অনেক দুস্ট ভাইটা যার অনেক মার খেয়েছি সে রোজা রাখত ঠিক কিন্তু তা ছিল নকল রোজা, লুকিয়ে খেয়ে ফেলত সে। আমার এই ভাইটা আমার অনেক আদরের, কিছুদিন আগে ওর জীবনে খুব কস্টের ঝড় বয়ে গিয়েছে। আমার যতবার মনে পড়ে এই কথাটা খুব কস্ট হয়, খুব। আমার ভাই, আমার আদরের ছোট্ট ভাই......
আমার আরেক ছোট ভাই মারা গিয়েছে সাত বছর বয়সে, তার কথা ভাবলেই অপরাধবোধ পেয়ে বসে। সেদিন দুপুরে আমি ওকে নিয়ে ঘুমাতে গেলে মনে হয় পুকুরে পড়ে যেত না......... থাকত আমাদের সাথে, আমাদের চার ভাই এর একজন হয়ে।
সব আগের মতই আছে, যত দিন যাচ্ছে মা বাবার ভালবাসা বেড়েই যাচ্ছে কিন্তু মন আর তেমন নেই। সেই উল্লাস আনন্দ নেই, কেন নেই? কেন বয়সের সাথে সাথে সব বদলে যায়?
আর ঈদ এ নিয়ে তেমন করে আর নতুন জামা কাপড়ের আনন্দ নেই, কেনা হয় শুধু। তবে এখনও যা ভাল লাগে তা হলে অনেক রাত করে বের হয়ে ঘুরে বেড়ানো, সব ভাই বোন মিলে...... এর মজাই আলাদা, এক এক করে সব শপিংমলে যাওয়া, কিছু উল্টাপাল্টা শপিং আর ফালুদা, আইসক্রীম, জুস খাওয়া।
আমরা এমন করি রোজা পঁচিশটার পর.. অপেক্ষা করছি কবে হব আমরা একসাথে, এজন্যই এখনও ঈদ এলে ভাল লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




