somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসহিঞ্চু বাংলাদেশ, আমাদের ভবিষ্যৎ কোনদিকে?

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ আজ এক নতুন সংকটের মুখোমুখি। হাজার বছরের পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা নিয়ে যে জাতি গৌরবময় ইতিহাস তৈরি করেছিলো তা আজ হুমকির সম্মুখীন। পরস্পর সংক্্ষুদ্ধ এই অবস্থায় আমার শুধু এটাই মনে হচ্ছে বাংলাদেশ কি তবে ইরাক, সিরিয়া বা আফগানিস্তান এর মত পরস্পর লড়াইরত অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে? আমাদের শান্তিপ্রিয় যে সহাবস্থান এর ঐতিহ্য আমরা হাজার বছর ধরে গড়ে তুলেছিলাম তা কি নষ্ট হয়ে যাবে? ইরাক, সিরিয়ার মত আমার দেশেও মানুষ অনিরাপদ থাকবে?


বিশ্বের অন্যান্য সকল দেশের চাইতে বাংলাদেশ এর ব্যপারটা ভিন্ন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ পরস্পরের কাছাকাছি এসে দেশ বা রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করেছে কিন্তু বাংলাদেশ এর অধিকাংশ মানুষ এর সংস্কৃতি এক। তারা অধিকাংশইঈ বাংলায় কথা বলে, একই খাবার খায়, একই সংস্কৃতি এর ঐতিহ্য কে লালন করে। এইদেশে অধিকাংশ মুসলিম আর হিন্দু প্রত্যেকেই ধর্মপ্রাণ হওয়াই পরস্পর সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে তাদের নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি লালন পালন করেছে। কখনো কোন সমস্যা তৈরি হয় নি। রাজনৈতিক বিভিন্নতা ছিল তবে তা কখনোই দেশকে এতটা অনিরাপদ করেনি।


কিন্তু হঠাৎ সব যেন উল্টে যাচ্ছে শত বছরের আবহমান বাংলাদেশ আজ পুরোপুরি বদলে গেলো। যুদ্ধাপরাধ এর বিচারকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধীদের প্রতি নিপীড়ন, বিরোধী মতের প্রতি দলন পীড়ন, ক্ষমতার উগ্র বহিঃপ্রকাশ দেশে এক নয়া ফ্যাসিবাদ এর জন্ম দিলো। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর সব কিছুতেই পাকিস্তান এর হাত আবিস্কার করে "জঙ্গী" দমনের বুলি আউরে গেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠি। বিরোধী দলগুলোর প্রতি ফ্যাসিবাদী আচরণ এর ফলে বিরোধী দলগুলোর রাজপথে বাধ্য হয়ে আন্দোলন এর নামে সন্ত্রাস করতে থাকে। চারিদিকে জঙ্গী আবিস্কার এর ধুয়া তুলার ফলে বাংলাদেশ ক্রমেই অসহিঞ্চুতার দিকে পা বাড়াই।


আজ সরকার যখন অসহিঞ্চুতার পথ ধরলো ঘৃণার নিয়ম মেনে বিরোধীদলও অসহিঞ্চুতার পথ ধরলো। জামায়াতে ইসলামি কে দমন এর জন্য ধর্মনিরেপেক্ষতার নামে নাস্তিকতা কে প্রণোদনা দেওয়া হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আই ওয়াশের আন্দোলনে তাদেরকে গণজাগরণ মঞ্চের সুচনা করতে দেওয়া হলো। এরপর আমরা দেখতে পায় গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদী বিভক্তির রাজনীতি শুরু হলো। ক্রমে ক্রমে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ, ভারতের দালাল-পাকিস্থানের দাল, নাস্তিক -আস্তিক সহ নানা শ্রেণীতে মানুষ কে বিভক্ত করা হলো। এবং তখনই বাংলাদেশ ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের দিকে যেতে থাকে কারন হাজারো বিভক্ত জাতি কখনো এগিয়ে যেতে পারে না। আর হিফাজত এর প্রতি ক্রাকডাউন, আর হিফাজত কতৃক সকলকে নাস্তিক ট্যাগ দেওয়া। বিরোধী দলকে জঙ্গী উপাধি দিয়ে ক্রসফায়ার আর রাজপথে গুলি করে আর বিরোধী দলের রাজপথে সন্ত্রাস এই আগুনে ঘি ঢেলেছে মাত্র। আর রাজনীতিতে কখনো শুন্য স্থান থাকে না তাই গনতান্ত্রিক পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়াই অসহিঞ্চুতার পথ তৈরি হয়েছে। যার ফলাফল আজ চারিদিকে জঙ্গী ভুত সত্যে পরিণত হয়েছে।


আমাদের সবচাইতে বড় দুর্ভাগ্য মনে হয় স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরেও আজো একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি থেকে বিভক্ত জাতিতে পরিণত হওয়া। আজ বাংলাদেশে ভারতপন্থী অনেক খুজে পাওয়া যাবে আবার পাকিস্তানপন্থী ও একেবারে বিরল নয়। কিন্তু বাংলাদেশ পন্থী হয়ত পাওয়া যাবে না। সত্যি বলতে কি বাংলাদেশ এর আজ প্রয়োজন বাংলাদেশ পন্থী মানুষ। সকল মত পার্থক্য ভুলে নিজেকে বাংলাদেশী মনে করে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সংকটের সমাধান করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে অসহিঞ্চুতা কখনোই ভাল কিছু দেয় না। বরং আরেকটা অসহিঞ্চুতার জন্ম দেয় মাত্র। আপনি যখন আপনার বিরোধী কে পাকিস্তান এর দালাল বলে তার অধিকার কে অস্বীকার করছেন তখন সেও আপনাকে ভারতের দালাল নাস্তিক বলে ভারতে পাঠাতে চাইবে। তখন এই দুস্কৃতিকারীরা এর সুযোগ নেবে এটাই স্বাভাবিক। আর যেকোন কিছুতে শুধু বিরোধী দলকে দায়ী করতে কাজ শেষ করাটা খুব ভালো উদাহরণ তৈরি করবে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×