রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারেন
মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ
মহামান্য রাষ্ট্রপতি একটি প্রতিষ্ঠান। সাংবিধানিক ক্ষমতার অধিকারী। তিনি সমালোচনার উর্ধে। রাষ্ট্রপতিকে কোন দলীয় ব্যক্তি বলা যাবে না।
রাষ্ট্রপতি লক্ষ্মীপুরের নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি এএইচএম বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন। রাষ্ট্রপতির মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ করার ঘটনাটি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদে বলা হয়েছে, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে এএইচএম বিপস্নবের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ঘোষণা করার ঘটনাটি এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে যেন এবারই প্রথম কোন রাষ্ট্রপতি মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। বিএনপি সরকারের আমলে কানাডা থেকে বিএনপিকর্মী ঝিন্টু নামের এক মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রপতির ৰমা ঘোষণা করানো হয়েছে। তখন যেমন রাষ্ট্রপতি তাঁর সাংবিধানিক ৰমতাবলে মৃতু্যদ-াদেশ মওকুফ করেছেন, এখনও তেমনি রাষ্ট্রপতি তাঁর ক্ষমতাবলে মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন। ভবিষ্যতেও রাষ্ট্রপতি তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামির দণ্ড মওকুফ করতে পারেন। রাষ্ট্রপতিকে দেয়া সাংবিধানিক ক্ষমতার বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা হলে তাঁকে অসম্মানই করা হবে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্ট কোন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দণ্ডাদেশ মৃত্যুদণ্ড বা যে কোন দণ্ড দিলেও রাষ্ট্রপতি তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে তা রদ করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত যদি কোন ব্যক্তিকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রদান করে তাহলে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তির পৰে রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা চেয়ে আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশে যতগুলো ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে তাদের পরিবার বা স্বজনদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুকম্পা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি অনুকম্পা সংক্রান্ত কাগজপত্র দলিলদস্তাবেজ দেখে যাকে অনুকম্পা করা প্রয়োজন তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন।
মনে রাখতে হবে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। দল থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি হয়ে যান নির্দলীয়। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি ঐক্যের প্রতীক। রাষ্ট্রপতিকে কোন ব্যক্তির সর্বোচ্চ দণ্ডাদেশ মওকুফ করার সাংবিধানিক অধিকার দানের বিষয়টি সম্প্রতি মিডিয়ায় সমালোচনা করা হচ্ছে। এ ধরনের সমালোচনা অনভিপ্রেত।
রাষ্ট্রপতির সাধারণ ৰমা ঘোষণার বিষয়ে নুরুল ইসলাম হত্যার ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পৰের প্রতিক্রিয়া প্রচার করা হয়েছে। উলেস্নখ্য, দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে নিম্নআদালত পর্যন্ত প্রতিদিনই মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন আসামিকে সাজা প্রদান করা হচ্ছে। আবার বেকসুর খালাস প্রদান করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রচার মাধ্যম তথা বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ যদি প্রতিনিয়ত এ ধরনের সমালোচনা করেন তাহলে দেশের বিচারব্যবস্থা তথা আইনের শাসন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়ার বিষয়ে এ নিয়ে যেমন মিডিয়াতে সমালোচনা করা যায় না, একইভাবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার এখতিয়ার নিয়েও সমালোচনা করা সঠিক নয়।
দুঃখের বিষয় নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি এএইচএম বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফের বিষয়টি যেভাবে প্রচারমাধ্যমে সমালোচনা করা হচ্ছে তাতে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে, যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ৰিত। এতে রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক রাষ্ট্রপতি। তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপনে সহায়ক হবে। রাষ্ট্রপতি ও তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা কারও পছন্দের বা অপছন্দের ওপর নির্ভর করে না। রাষ্ট্রপতির পদটি সাংবিধানিক পদ ও প্রতিষ্ঠান। সাংবিধানিক পদ ও প্রতিষ্ঠানের সম্মান অক্ষুন্ন রাখা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের পর্যায়ে পড়ে।
-ধিক্কার জানাই এই বিবেকহীন লোকটিকে। কিংবা প্রতিবন্ধী নয়তো!!!!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





