somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে প্রকাশ পেল ওনি নিজেই শুটকির হাটের দফাদার

১১ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাত্রাপালায় বিবেক বলে একটি চরিত্র থাকে, যে দৃশ্যের ফাকে ফাকে হঠাৎ করে উদয় হয়ে নৈতিকতার বুলি ছাড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনীতি নামক যাত্রাপালার মঞ্চে বিবেকের দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়েছিলেন দুজন মহারথী। তাঁরা হলেন বিদগ্ধ পার্লামেন্টারিয়ান বাবু সুরঞ্জিত এবং এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা জনাব ওবায়দুল কাদের। বিরোধীদের সমালোচনার পাশাপাশি তারা সরকারের নানা কর্মের সমালোচনায় মশগুল থাকতেন। সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্টরাও নানা মুখরোচক সংবাদ সংগ্রহের আশায় ওনাদের পিছন পিছন ঘুরতেন। বলাবাহুল্য, মহাশয়রা কখনই এ কাজে সংবাদপত্রের লোকজনদের বঞ্চিত করেননি। রাজনীতির মঞ্চের এই দুই বিবেকের সে সময়কালের অনেক মন্তব্য/বাণীই কষ্টিপাথরে খোদাই করে রাখার মতো। তবে বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট নয় বিধায় ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক তাঁদের অজস্র মন্তব্য/বাণীর মধ্যে কেবলমাত্র একটি বাণীই স্মরণ করতে চাই। দেশের শেয়ার বাজারের অবস্থা যখন চরম অবনতির দিকে তখন শেয়ার বাজার বিষয়ক এক জ্ঞানগর্ভ মন্তব্যে বর্তমানের রেলমন্ত্রী তথা তৎকালের বিবেক বাবু সুরঞ্জিত সেন বলেছিলেন, শুটকির হাটে বিড়াল চৌকিদার।

এরই মধ্যে বুড়িগঙ্গা দিয়ে অনেক পচা জল বয়ে বয়ে গেছে। সেই বহমানতার ধারায় ওবায়দুল কাদের, সুরঞ্জিত বাবুরা মন্ত্রী হয়েছেন। শাসক দলের অনেকেই এমনকি সরকার প্রধানও নাকি বলেছিলেন মূলত এই দুই বিবেককে চুপ রাখতেই নাকি এই পুরস্কার। যাহোক, যে কারণেই মন্ত্রীত্ব পাননা কেন সবাই আশা করেছিল শুটকির হাট হতে এরা এবার বিড়াল নামের চৌকিদারকে ঝাড়ু মেরে তাড়াবেন।

বিড়াল নামের চৌকিদারকে ঝাড়ু মেরে তাড়ানোর শপথ নিয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর পাঁচ মাস না যেতেই সুরঞ্জিত বাবুর সহকারী একান্ত সচিব, রেলভিাগের জিএম, একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা গভীর রাতে সত্তর লাখ টাকাসহ বিজিবির হাতে আটক হলেন। টাকাগুলো কোথা হতে এসেছিল, কোথায় যাচ্ছিল তা বুঝবার জন্য খুব বেশি জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে যেহেতু বিষয়টি এখনও তদন্তের পর্যায়ে তাই এটা নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবে মাননীয় মন্ত্রীর যাদের দিয়ে বা যেমনভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন তা অবশ্যই মন্তব্যের/সমালোচিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে।

মাননীয় মন্ত্রী তাঁর এপিএসের অপরাধ তদন্তের জন্য তারই পিএসকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কাজকর্ম বিবেচনায় পিএস আর এপিএসের মূলত একই গোয়ালের গরু। তাঁরা দুজনেই মন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্টাফ। পার্থক্য শুধু পিএস প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আর এপিএস হচ্ছেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত পছন্দে নিয়োগপ্রাপ্ত। দাপ্তরিক বিষয়সমূহ দেখার দায়িত্ব পিএস সাহেবের আর রাজনৈতিক বিষয়সমূহ এপিএস সাহেবের। তবে ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়ে একে অপরের উপর চরমভাবে নির্ভরশীল। দু'জনেই দু'জনের হাড়ির খবর জানেন। স্বার্থের কারণে দুজনের মধ্যে একটা বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক থাকে। মোটকথা, পিএস সাহেব যদি বড় ভাই হন তাহলে এপিএস সাহেব ছোট ভাই। কাজেই এক্ষেত্রে মন্ত্রী মহোদয় মূলত একই গোয়ালের বড় গরুকে ছোট গরুর দোষ খুঁজার জন্য নিয়োগ করেছেন। অপরদিকে জিএম সাহেবের অপরাধ তদন্তের জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন)-কে। যাদের দুজনের কর্মকান্ডও পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত এবং স্বার্থযুক্ত।

শুধু তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নয়, মাননীয় মন্ত্রী যে পরিবেশে তদন্তকার্য সম্পন্ন করতে বলেছেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলা যায়। তিনি বলেছেন তদন্তকালীন সময়ে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তারা অফিসকার্য চালিয়ে যেতে পারবেন। মন্ত্রী সাহেবের যুক্তি হচ্ছে যেহেতু তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও অপরাধ প্রমাণিত হয়নি তাই তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া সমীচীন নয়। ঠিক আছে আপনি তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা না নেন, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাদের স্বাভাবিক অফিসকার্য বা অফিসে আসা হতে বিরত রাখতে পারেন। কারণ তারা স্বাভাবিক অফিসকার্য করলে তাঁদের দ্বারা তদন্তকাজ বাধাগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনাটা সমবসময়ই থেকে যাবে।

মাননীয় মন্ত্রী শেয়ার বাজার বিষয়ে একসময়ে বলেছিলেন, শুটকির হাটে বিড়াল চৌকিদার। বর্তমানে ওনার এপিএস, রেলওয়ের জিএম ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার অপরাধ তদন্তে তিনি যে পদ্ধতি অবলম্বন করছেন তাতে বুঝা যায় শুটকির হাটে আসলে এখনও বিড়ালই চৌকিদার রয়ে গেছে। কে জানে মাননীয় মন্ত্রী নিজেই ঐ চৌকিদারদের দফাদার কিনা। সব সম্ভবের এই দেশে এটা অসম্ভব কিছুইনা।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×