শিক্ষকবান্ধব সরকারের একি কাণ্ড!
আমাদের দেশের বেসরকারি শিক্ষকরা নানাভাবে অবহেলিত ও নিগৃহীত। বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা যা পাওয়া যায়, তা খয়রাতির শামিল। তার ওপর যদি পূর্ববর্তী মাসের বেতন পরবর্তী মাসের শেষে পাওয়া যায়, তাহলে কি দুরবস্থার মধ্যে পড়তে হয়, তা কি শিক্ষকবান্ধব হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়া এই সরকার একবারও ভেবে দেখেছে? যে সরকার নানাদিকে, নানা খাতে দান-অনুদানের নামে টাকা খরচের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে, তার কার্পণ্য কেবল বেসরকারি শিক্ষকদের মাসিক অনুদান দেয়ার বেলায়! এর পেছনে রহস্যটা কী? মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের স্বার্থরক্ষার মানসে আলাদা বেতন কমিশন গঠনের কথা বলেছিলেন। তারও কোন আলামত দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু সরকারি অনুদান দেয়ায় অনাকাক্সিক্ষত এই বিলম্ব বেসরকারি শিক্ষকদের ক্রমেই হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে।
বর্তমানে যে হারে দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হচ্ছে, তাতে সীমিত আয়ের শিক্ষকদের জীবন ধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়ছে। বাড়ি ভাড়া ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে ভদ্রভাবে দিনাতিপাত করাটাই এখন তাদের কাছে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সঠিক সময়ে বেতন না পাওয়ায় অনেককেই সুদখোর মহাজনের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে; চেক বা স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা আনতে হচ্ছে চড়া সুদে। বেসরকারি শিক্ষকদের এই অসহায়ত্বের বেদনা রাখার জায়গা কোথায়?
অনেক আশা-ভরসা নিয়ে মহাজোটকে জয়যুক্ত করেছিল দেশবাসী, যার বিশাল একটি অংশ এই শিক্ষক সমাজ। আর কে না জানে, শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী এই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে। শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার বিভিন্ন উদাহরণ টেনে বর্তমান সরকার নিজেদের শিক্ষকবান্ধব সরকার বলে পরিচয় দেয়। এ সরকার যদি শিক্ষকবান্ধবই হবে, তাহলে দুর্দশাগ্রস্ত বেসরকারি শিক্ষক সমাজের কথাই তো সর্বাগ্রে তাদের ভাবা উচিত ছিল। তাদের দুঃখ-দুর্দশা আর হতাশা-বেদনার মূল্যায়ন করা উচিত ছিল। আমরা এখনও আশাবাদী, বর্তমান সরকার অচিরেই বেসরকারি শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বিরাজমান সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে আন্তরিক হবে। তাদের হতাশায় ডুবে যেতে দেবে না; হতাশার গহ্বর থেকে অগ্ন্যুৎপাত ঘটুকÑ এটাও চাইবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




