somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভার্চুয়াল রা(ড়া)জাকার নিধন , বাস্তব প্রেক্ষিত ও আমার ব্যাক্তিগত মিশন

২৪ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ব্লগের পাঠক থাকার পর যখন ব্লগার হিসাবে রেজিস্ট্রেশান করেছিলাম, তখন একান্তই ব্যাক্তিগত ব্লগিং করার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে নিয়েছিলাম । (মনে হয় এখনো আমার পোস্টগুলি অনেকটাই ব্যাক্তিগত কথন, অনেকটা নিজের জন্য লেখা টাইপের।

ব্লগীয় মিথস্ক্রিয়ায় আমার মধ্যে প্রথম যে পরিবর্তনটি আসে , সেটা হচ্ছে কোন কিছুকে সোজাসুজি না দেখা । আমি বলবো এটা আমার নেতিবাচক অভিযোজন। যদিও সবকিছুকে আগে যেভাবে সোজাসুজি দেখতাম দুনিয়াটা ওইরকম সোজা না।

দ্বিতীয় পরিবর্তন টা আসে রাজাকার/নব্য রাজাকারদের নিয়ে। ঘৃণার স্তরে চলে যায় সেটা । আগে ছিলো চরম অপছন্দ আর আশংকিত অনূভুতি। বাস্তব সমাজে নব্য রাজাকার/রাজাকার রা কিন্তু এতো বেশী আক্রমনাত্নক প্রকাশপ্রবণ নয় (তারা জানে গোল্ডফিসের স্মৃতির এই জাতির এক চক্কর কিন্তু পার হয় নাই)। অনেকটাই রক্ষনাত্মক এড়িয়ে যাবার অভ্যাস মুক্তিযুদ্ধ , আমাদের আকাঙা আর চেতনার প্রশ্নগুলোতে।

ব্লগে এই রাজাকার / নব্য রাজাকারদের প্রতিরোধ দেখেছি, স্যালুট জানাই যারা অপরিসীম ধৈর্যের সাথে
অনেক তথ্য প্রমান জড় করে এই প্রতিরোধে রসদ জুগিয়েছেন। ফ্যানাটিক একঘেয়ে অপযুক্তির কিছু ল্যাদল্যাদা নব্য রাজাকারের আচরণে বিরক্ত হয়ে অনেককে গালাগালিতে ও যেতে দেখেছি। এটাকে কোন অর্থবহ সমাধান ভাবি না, কিন্তু বিরক্তি আর ধৈর্যের সীমা কোথায় গেলে এই আচরণে বাধ্য হন তারা তাও বুঝতে পারি।

কিন্তু আমি আশংকিত এই ভার্চুয়াল জগতেই এদের প্রতিরোধ করে আমাদের আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর দেখে। হ্যাঁ , এই প্রতিরোধ ও প্রয়োজন, এই কিন্তু শেষ নয়।

ছোটবেলায় চট্টগ্রামের টাইগারপাসে ফুঁলকুড়ি আসর করতাম, তারপর এলাকার শিবিরের সিনিয়র ভাইদের সাথে প্রচুর কথাবার্তা হতো। ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের পরিবার আওয়ামীলীগবিরোধী হবার কারনে তাদের হয়ত ধারণা ছিলো আমাকে ‘ওয়াশ’ করা যাবে। (তারা জানতো না আমার পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা কয়জন এবং আওয়ামীলীগকে চরম অপছন্দ করলেও বঙ্গবন্ধুকে আমরা কি পরিমান শ্রদ্ধা করি )। পরবর্তিতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়েছি চট্টগ্রাম কলেজে। তখনকার শীর্ষ প্রায় সব শিবির নেতার সাথেই আমার যোগাযোগ ছিলো ব্যাক্তিগতপর্যায়ে। মুজিবর রহমান মঞ্জু , আলমগীর মোহাম্মদ ইউসুফ
এই পর্যায়ের আমাকে ভালোভাবেই চিনতেন, যথাক্রমে এলাকার ভাই ও পারিবারিক ভাই হিসাবে।


ব্লগারদের জন্য জানিয়ে রাখি, শিবিরের এইসব প্ল্যান-মেকার রা এই ব্লগের মাথামোটা ব্রেইনোয়াশড ল্যাদল্যাদা কিছু প্রপাগান্ডার এর মত না , তারা তাদের কাজে যথেষ্ট স্মার্ট এবং জানে কিভাবে কি করতে হয়। (বিশাল পোস্ট হয়ে যাবে , তাই এটা সংক্ষেপে একটি আশংকার সঙ্কেত দিলাম।)

সুতরাং শুধু ভার্চুয়ালে রাজাকার / ড়াজাকার তাড়িয়ে আমরা খুশী থাকবো?


আমরা যারা এই ‘বেজন্মাদের’ (এই দেশে জন্মে এই দেশের মূলকে অস্বীকার করে এই অর্থে) প্রতিরোধ করতে চাই, বাস্তবতা হলো তাদের সংঘটিত হওয়াটা অনেকটাই কঠিন। নানা মত, নানা প্ল্যাটফর্মের মানুষকে এই একটি ইস্যুতে একীভূত রাখার অমানুষিক শ্রম কে দেবে?

তাহলে কি আমরা বসে থাকবো?


না । ব্যাক্তিগতভাবে আমি বসে থাকবো না। যেদিন থেকে এই বেজন্মাদের সুক্ষ আর ভয়াবহ ওয়ার্কপ্ল্যান বুঝতে পেরেছি আমার ধর্মবিশ্বাসকে ব্যাবহার করে আমার অস্তিত্বকে ধধংস করার, সেদিন থেকেই ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত যেসব শিবির সমর্থক ছিলো তাদের ফিরিয়ে আনার মিশন নিয়েছিলাম। ঘন্টার পর ঘন্টা তর্ক করতাম , এমনকি শিবিরের কর্মপদ্ধতি নিয়েও। যা যা তথ্যপ্রমান জানতাম সব আপ্রাণ ব্যাবহার করতাম। (ইস তখন যদি ব্লগের ডকুমেন্টগুলো থাকত! বা থাকতো ‘ফিরে দেখা একাত্তর’ এর মত কোনো সংকলন!)

সফলতার হার? ত্রিশ থেকে চল্লিশ শতাংশ। তাই বা কম কিসে ? সেটি ছিলো আমার একান্তই ব্যাক্তিগত মিশন। এর মাঝে সবচাইতে বড় সাফল্য ছিলো , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের এককালীন প্রধান পাঁচ নেতার মাঝে একজন কে ( আমার এলাকার বড় ভাই) বুঝাতে পারা। অবশ্য ধর্মপ্রাণ এই মানুষটির যুক্তিবোধ প্রখর ছিলো বলেই হয়তবা এত উপরে থেকেও থেকে আদর্শিকভাবে সরে এসেছেন। (ভাইয়া শীঘ্রই রাজাকারদের ওই ব্যাংকটির চাকরি ছেড়ে আরেকটি ব্যাংকে জয়েন করবেন, তার ভাষায় – ‘পরিপূর্ণ মুক্তি’ )।


সামনের নির্বাচনে যদি ‘না’ ভোট থাকে তাহলে ভোট দেবো । (কেউ কি নিশ্চিত করবেন না ভোট আছে কিনা? ) নাহলে না। কারণ কোন দলই আমার পছন্দের তালিকায় নেই।

তবে আমি আমার ব্যাক্তিগত সেই মিশনটি আবার শুরু করছি। পেটের দায়ে দৌড় আর কর্পোরেট ক্রীতদাসত্বের ফাঁকে এ আমার ব্যাক্তিগত অভিযান । প্রাথমিকভাবে টার্গেট করেছি আটজনকে। তিনজন কে মনে হচ্ছে একটা সরল রেখায় নিয়ে এসেছি । আগামী নির্বাচনে ভোট দেই আর না দেই ‘বেজন্মাদের’ ভোট যদি আটটা হলেও না কমিয়েছি আমি। সবার সমর্থন চাই, পরামর্শ ও চাই। বলতে চাই আপনারা যদি পারেন , আপ্নারাও কিছু করুন। শুধুই ভার্চুয়াল যুদ্ধ নয়। তবে প্রচন্ড ধৈর্য আর সহ্যক্ষমতা নিয়েই নামতে হবে।

যুদ্ধ চলবেই, নানা রুপে ... ... ... ...।










সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫১
৩৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×