somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিবেশ দূষণ নিয়ে আমাদের ভাবনা ও তিনটি প্রশ্ন ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে বিশ্ব মিডিয়ার প্রধান খবরটি কি জানেন? অতিমাত্রায় বায়ু দূষণের কারনে বেইজিং শহরে রেড অ্যালার্ট জারি। শুধু আজ নয়, প্রতিদিন পত্রিকা কিংবা টেলিভিশনের পর্দা খুললে অন্তত একটি খবর আপনি পাবেন আর সেটা হল বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। কার্বন নিঃসরণ কমান অথবা ক্লিন জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে অসংখ্য রিপোর্ট প্রতিদিনই চোখে পরে।
আমাদের দেশের খুব কম লোকই আছেন যারা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে ভাবেন। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এই মুহূর্তে সবার আগে যে বিষয়টি আসে সেটি হল পরিবর্তনশীল বা নবায়নযোগ্য জালানির ব্যবহার। আমাদের সমাজের কিছু সংখ্যক লোকের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা থাকলেও বেশিরভাগ লোকেরই নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে সুস্পস্ট কোন ধারনা নেই বললেই চলে। আর কারও যদি হালকা ধারনা থেকেও থাকে তাহলে তিনি বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেও এড়িয়ে যান কিংবা তর্কে যেতে চান না।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক লেখা/তর্ক হয়েছে। আমি বলবনা আপনি আমার যুক্তি মানেন। আমি শুধু তিনটা প্রশ্ন করব। উত্তর আপনি/আপনারা দিবেন। পরিশেষে বৈশ্বিক জলবায়ু কিংবা নবায়নযোগ্য জালানির গুরুত্ব নিয়ে দ্বিতীয়বার আপনার কাছে আর প্রশ্ন করার প্রয়োজন হবে না বোধ করছি। আপনার বিবেক বুদ্ধির বিচারে আপনি আমার চেয়ে যথেষ্ট সচেতন আর এ জন্যই আপনি আর আমি আলাদা সত্তার মানুষ। কিন্তু একটা জায়গাতে কিন্তু আমরা সবাই এক। সেটা কি জানেন? সেটা হল আপনার বা আপনার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়ে কিন্তু আমরা একেবারেই আপসহীন।
লেখা দীর্ঘ করবোনা, মূল কথা মানি আমার প্রথম প্রশ্নে আসি। আপনি কি জানেন প্রতি বছর পৃথিবীতে শুধুমাত্র পরিবেশ দূষণের প্রভাবের কারনেই প্রায় এক মিলিয়ন লোক মারা যারা যার এক তৃতীয়াংশই তৃতীয় বিশ্বের? এটা কি সন্ত্রাসবাদ যুদ্ধ কিংবা অন্য দুর্ঘটনার চেয়ে বেশী অমানবিক নয়? আপনার বিবেক কি বলে? প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১৯০০ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবাস্ব জ্বালানির দূষণের প্রভাবে মারা যাচ্ছে। সুন্দরবনের ট্যাংকার দুর্ঘটনার কথা হয়ত অনেকেই ভূলে গেছেন। সরেজমিনে গিয়ে একবার পারলে দেখে আসুন সেখানকার মানুষের জীবন কেমন যাচ্ছে? এর প্রভাব হয়ত দুই একদিন কিংবা মাস গেলে দেখবেননা। তবে যেদিন দেখবেন সেদিন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
এবার দ্বিতীয় প্রশ্নে আসি, আপনি কি বিশ্বাস করেন কয়লা, তেল কিংবা জীবাস্ব জ্বালানি ভবিষ্যতের জ্বালানি হিসেবে বহাল থাকবে? বাতাসে প্রতিনিয়ত কার্বন মনোক্সাইডের পরিমান বেড়ে যাওয়ার মূল কারন হল মাত্রাতিরিক্ত কয়লা ও জীবাস্ব জ্বালানির ব্যবহার। দীর্ঘদিন এই দূষণে থাকলে ফুসফুসের জটিল ক্যন্সার, শ্বাসকষ্ট সহ নানবিধ রোগের কারন এটি। ঢাকা শহর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর অন্যতম। কখনো ভেবে দেখেছেন কি কেন দিন দিন আমাদের হাসপাতালগুলোতে ফুসফুস ক্যান্সার, পাকস্থলির সমস্যা কিংবা চর্ম রোগীর সংখ্যা বাড়ছে? এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। তবে ঠিক এই মুহূর্তে এর প্রতিকার করা না গেলে যে আমরাই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সে বিষয়ে কোন দ্বিমত নিশ্চয়ই করবেন না। এখন সময় নবায়নযগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে একটি নিতিমালা বাস্তবায়নের। উন্নত দেশগুলো যাই বলুক না কেন তারা কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করছে অনেক আগেই। শুধুমাত্র ইউরোপের দেশগুলো তাদের প্রয়োজনের ৪৫ শতাংশ আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। আমাদের দেশে এটি এখন হয়ত অনেক বিলাসি চিন্তাভাবনা ভাবতে পারেন কিংবা অনেক ব্যবসায়ি হয়ত ভাবছেন আমার ব্যবসার বারটা বাজানোর জন্য এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলছেন। দেখুন এটি যেমন পরিবেশ বান্ধব ঠিক তেমনি সাশ্রয়ীও বটে। সে বিষয়ে না হয় আরেকদিন বলব।
আমার শেষ প্রশ্ন। এটিকে ঠিক প্রশ্ন না বলে আপনার মতামত যাচাইও বলতে পারেন। ধরুন আপনার সম্পূর্ণ আলাদা দুটি রুম আছে। প্রতিটি রুমই আধুনিক সব আসবাবপত্রে সজ্জিত। প্রথম কক্ষটিতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য গ্যাসোলিন জেনারেটর এবং দ্বিতীয়টিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি চালিত জেনারেটর। আপনাকে যেকোনো একটি রুমে টানা দুই ঘণ্টা দরজা বন্ধ করে থাকতে হবে এবং কোনভাবেই জেনারেটর বন্ধ করা যাবেনা, কোন মাস্ক ব্যবহার করা যাবেনা। আপনি কোন কক্ষে প্রবেশ করবেন?
হ্যা। উত্তরটা আমারও জানা ছিল। নিঃসন্দেহে আপনি দ্বিতীয় কক্ষটিতেই ঢুকবেন। আসলে আমাদের সবারই এখন দ্বিতীয় কক্ষের চিন্তাই করা উচিত। যেখানে দূষণের মাত্রা হবে নামমাত্র। সবুজ আর সুন্দর পরিবেশে খেলা করবে আপনার আমার ছেলেমেয়েরা। আসুন একসাথে সবুজের দ্বিতীয় দরজা খোলার আন্দলনে সামিল হই যা আমাদের সুন্দর সবুজ ভবিষ্যতের আহবান।
মূল ভাবনা আর্নল্ড শোয়ারজনেগার , ছবি -ইন্টারনেট।
বাংলান্তর ও পরিমার্জনঃ ফয়সাল কবির
পিএইচডি গবেষক, নেমাটোলজি বিভাগ
কুংপক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, দঃ কোরিয়া।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×