
‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। এটা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাগণের শ্লোগান। যারা ‘জয় বাংলা’ বলে না তাদের শ্লোগান ছিল ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’। মুক্তিযুদ্ধকে যারা গন্ডোগোল বলে, তাদের দৃষ্টিতে গন্ডোগোলে এখানে পাকিস্তান মৃত্যু বরণ করায় এখানে এখন আর ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলার সুযোগ নেই। কারণ মুর্দাকে হাজার বার জিন্দাবাদ বললেও মুর্দা আর জিন্দা হবে না। আর গন্ডোগোলে যেহেতু পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হয়ে গেছে সেহেতু এখন থেকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ এর বদলে এখানে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলতে হবে।
‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বিরোধীদের অনেকে মুক্তিযুদ্ধকে চুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাকে চুক্তিযোদ্ধা বলে। সুতরাং তাদের পক্ষে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বলা সম্ভব নয়। তাদের একজনের মাথায় নাকি পেরেক ঢুকিয়ে শহীদ করার সময়ও সে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বলে নাই। তাদের দলে কিছু মুক্তিযোদ্ধা কাকের লেজে ময়ূর পুচ্ছের মত কাকের শোভা বর্ধন করছে। এদিকে কিছু সহজ-সরল নাগরিক সেই সব দলকে মুক্তিযোদ্ধাদের দল মনে করে ভুল করছে।
তাহলে মুক্তিযোদ্ধাগণ সেই সব দলে কেন আছেন? তাঁদের দিলে দেশ প্রেমের সাথে আত্মপ্রেম ছিল। আত্মপ্রেমের স্বার্থ হাসিলে তারা সেই সব দলে আছে। আর স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে তারা তাদের প্রিয় শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ ছেড়ে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলছে।
বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষনের শেষ কথা ছিল ‘জয় বাংলা’। সেই ভাষনেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ছিলেন। তারপর তিনি ক্ষমতার অপেক্ষায় ছিলেন। ক্ষমতা হাতে পেলে তিনি জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সাংবিধানিক ভাবেই বাংলাদেশ স্বাধীন করতে পারতেন। কিন্তু পাকিস্তান সেই সহজ পথে না হেঁটে যুদ্ধের পথ বেছে নেয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তাদের আত্ম সমর্পনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন বাংলাদেশ যখন আবার আত্মনির্ভর শীল হওয়ার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তখন স্বাধীণতা বিরোধীরা আবার সক্রিয় হয়। বাংলাদেশে কোন সমস্যা হলেই তারা বলতে থাকে পাকিস্তান থাকাই ভালো ছিল। কিন্তু পাকিস্তান এখন অতীত। বর্তমানে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামই প্রকৃত সংগ্রাম। আর সেই সংগ্রামের শ্লোগান হলো ‘জয় বাংলা’। যারা এ শ্লোগান মানে না তারা বাংলাদেশকেও মানে না।
পুজার বেদীতে সিজদা করা হয় বলে আল্লাহকে সিজদা করা যাবে না ঘটনা এমন নয়। অনুরূপ পুজারী জয় শব্দ বলে বিধায় নামাজী জয় শব্দ বলতে পারবে না এটাও কোন কথা নয়। এটা বাংলা ভাষার একটি শব্দ যার বিপরীত শব্দ পরাজয়। জয় যে বলতে চায় না সে দিব্যি পরাজয় বলে। পরাজয় বলতে তার সমস্যা না হলে জয় বলাতে তার সমস্যা কেন হবে? তার তো মূল সমস্যা জয় শব্দ মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত। সেজন্য এ শব্দ তার সহ্য হয় না। আর সেজন্য সে এ শব্দ ঘৃণা করে। আর এ ক্ষেত্রে সে ইসলামকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। যদিও তার ধারণার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


