বেগম খালেদা জিয়া নিরপেক্ষ লোককেও এক পক্ষে ভোট দিতে দেখেছেন। সেজন্য তিনি বললেন, শিশু ও পাগল ছাড়া কোন নিরপেক্ষ লোক নেই। তাহলে এখন তাঁর দল কোন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছে?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিরপেক্ষ ভাবা হতো। কিন্তু চাকুরীর বয়স বাড়িয়ে বিএনপি যখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে নিরপেক্ষ সরকারের প্রধান করতে চাইলো তখন আওয়ামী লীগ বলল, তিনি দলীয় লোক। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। তাহলে নিরপেক্ষ লোক কোথায় পাওয়া যাবে যার অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন হতে পারে?
বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে অনেক গুলো নির্বাচনের আয়েজন করেছে। তো তারা যেমন নির্বাচনের আয়োজন করেছিল তেমন নির্বাচনে তাদের অংশ গ্রহণে সমস্যা কোথায়? যেহেতু নিরপেক্ষ লোক নেই সেহেতু নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাওয়া যেতে পারে এবং এ সংক্রান্ত বিধি সংবিধান ভুক্ত হতে হবে। বিএনপি যদি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কামনা করে থাকে তাহলে এ সংক্রান্ত বিধিটিও বিএনপিকে বলতে হবে এবং সেই বিধি সংবিধানের অন্তর্ভূক্ত করতে বিএনপির আন্দোলন করতে হবে। বিএনপির আন্দোলনে সরকার যদি বিএনপির দাবী মানতে বাধ্য হয় তখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বিধি সরকার সংবিধান ভূক্ত করতে বাধ্য হবে। তখন সরকারের কথাও বজায় থাকবে। কারণ সরকার বলছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তো সংবিধানে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বিধি থাকলে সরকারের সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করতে আপত্তি থাকার কথা থাকবে না। অতঃপর সেই নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হলে তারা এর ফলাফল মানবে কি? বাংলাদেশে যারা নির্বাচনে পরাজিত হয় তারাই বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই।
ফখরুদ্দিন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আমি এক কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের কাজে যুক্ত ছিলাম। সেই কেন্দ্রের ভোট সুষ্ঠ হয়েছে আমি নিজে দেখেছি। তথাপি পরে শুনলাম নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নাই। ফখরুদ্দিন নাকি আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে দিয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্বাচন কালিন সরকার পরিচালনা করলেন, তাতে নাকি নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নির্বাচন কালিন সরকার পরিচালনা করলেন তাতেও নাকি নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। তাহলে কে নির্বাচন কালিন সরকার পরিচালনা করলে নির্বাচন সুষ্ঠ হবে?
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার আসলে কি সেটা আমার ঠিক বুঝে আসছে না। এমন যদি কেউ না থাকে তাহলে আমরা সেই ঘোড়ার ডিমের কথা কেন শুনছি? তথাপি বিএনপি বলুক কে নির্দলীয় নিরপেক্ষ? তাদের সে নির্দলীয় নিরপেক্ষ লোকটিকে যদি জনগণ নির্দলীয় নিরপেক্ষ মনে করে তাহলে জনগণ তার অধীনে নির্বাচনে ভোট দানের জন্য বিএনপির আন্দোলনে সামিল হলেও হতে পারে। এখন আসলে জনগণ বুঝতে পারছে না তারা কেন বিএনপির আন্দোলনে সামিল হবে? জনগণ সামিল না হওয়াতে বিএনপি একযুগের বেশী সময় ধরে সরকার বিরোধী কোন আন্দোলন দাঁড় করাতে পারছে না। আন্দোলনের যোৗক্তিকতা বুঝাতে না পারলে অবস্থা এমনটাই চলতে থাকবে। তবে সরকার দেশ পরিচলনায় অসফল হলে জনগণ একটা মোচড় দিতে পারে। তখন ভাগ্যক্রমে বিএনপির কপাল খুললেও খুলতে পারে। সেই সময়ের অপেক্ষা ছাড়া আমি বিএনপির আপাতত বেকার বসে ঝিমুনো ছাড়া কোন কাজ দেখছি না। শেখ হাসিনা সরকার এমন এক সরকার যা তাঁর বিরোধীদেরকে এক্কবারে বেকার করে ছেড়ে দিল! যাকে এক্কেবারে বোতল বন্দি বলা চলে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭