
সবাই বলে, ছেলে ভালো তবে দোষ একটাই রাজনীতি করে। তাও আবার ছাত্রদল। মেয়ে বলল, ছাত্রলীগ করলেও তো হতো। আমি বললাম সব সাইড যখন ভালো তবে এ এক সাইড বাদ দাও। বিয়ের পাত্র সব সাইড মিলিয়ে পাওয়া যায় না।
বিয়ের পর মেয়ে বলল, আমি কিন্তু ছাত্রলীগ। জামাই বলল, একদা ছাত্রলীগ ছিলে, এখন ছাত্রদল। কারণ স্বামী-স্ত্রী দু’দলে বিভক্ত হয়ে রেষারেষি করা ঠিক না। আমি বললাম জামাই ঠিক বলেছে। মেয়ে আর কথা বাড়ালো না।
জামাই বলল, জিয়াউর রহমান থাকলে দেশ বহু আগে সিঙ্গাপুরের মত উন্নত হতো। আমি বললাম তারেক রহমান কি সে রকম? সে বলল, তিনি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছেন। একবার ক্ষমতায় গেলেই বুঝবেন তিনি কতটা উন্নত হয়েছেন। সে বলল, সুষ্ঠ ভোট হলে আওয়ামী লীগ দশ সীটও পাবে না। আমি বললাম ১৯৭৯ সালে কি সুষ্ঠ ভোট হয়ে ছিল? তাতে কিন্তু আওয়ামী লীগ ৩৯ সীট পেয়েছিলো।সে বলল, চব্বিশে বিএনপি ক্ষমতায় যাচ্ছে। আমি বললাম, দেখা যাক কি হয়? আশা করা ভালো, তবে অতি আশা করা ভালো নয়, প্রতিপক্ষ যখন আওয়ামী লীগ।
ছাত্রদল নেতার হস্তে কন্যা সম্প্রদান করলাম কেন? আসলে আমি আপাদমস্তক গণতন্ত্রী। সজন বৃন্দের বেশী ভোট সেদিকে থাকায় আমি আর অমত করতে পারিনি। যারা সেই দলের সাপোটার তারা বিয়েতে খুব উচ্ছসিত ছিলো। সরকারী দলের সজনেরাও দাওয়াত কবুল করেছে। বিদায় বেলায় জামাই বাবাকে বললাম দোয়া করি সফল হও। ক্ষমতায় গেলে খায়ের ভূইঞ্রাকে দিয়ে রাস্তাটা ঠিক করে দিও। রাস্তার যে বেহাল দশা, তাতে হাড়-মাংস এক হয়। তখন আর পদ্মার কথা মনে থাকে না। তখন মনে পড়ে নাপার কথা।
আওয়ামী লীগের এক পক্ষের দাবী অনুযায়ী অন্য পক্ষ তাদের দু’জন খুন করায় তাদের এক পক্ষ দৌড়াচ্ছে এবং অন্য পক্ষ দৌড়ুচ্ছে। তাদের পায়ের নীচের রাস্তার বেহাল দশার দিকে তাদের নজর নাই। আসামী পক্ষের ২ নং আসামী আমার নিকট আত্মীয়। বড় ভাইয়ের চাচাতো শালা। তো বড় ভাইয়ের চাচা শ্বশুরকে বললাম বেয়াই সাহেবের কি অবস্থা। তিনি আটক অবস্থায় আছেন সেটা আমি জানি। তো বেয়াই সাহেবের বাবা বললেন, আসামী তালিকায় জামায়াত শিবির ঢুবকে এবং তিনি ছাড়া পাবেন। তাঁর নিকট থেকে জানলাম বেয়াই সাব দু’কোটি বিরাশি লক্ষ টাকার বালি বিক্রি করেছিলেন। দেখা যাক বালির বাঁধ দিয়ে তাঁর খুনের মামলা ঠেঁকানো যায় কিনা। রাস্তায় পোস্টার দেখলাম প্রতিপক্ষ তাঁর ফাঁসি চায়। বেয়াই সাহেবের সাথে সাক্ষাতে আমার মনে হয়েছে তিনি অতিশয় ভদ্র এবং নম্র একজন মানুষ। আর যাঁকে খুনের মামলার ১ নং আসামী করা হয়েছে। আমি একদিন তাঁর ওয়াজ শুনেছি। তাঁর জ্ঞান-গরিমার নিকট আমার নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়েছে।
জামাইকে বললাম, বাবা এবার ক্ষমতায় গেলে একটু কারেন্ট দিও। সেবার একারণেই তোমাদের বিরোধী হয়ে ছিলাম। আসলে কষ্ট যখন ঘরে ঢুকে তখন ভালোবাসা পিছনের দরজা দিয়ে পালায়।
জামাই খুব করে আশ্বস্ত করে বলল, বাবা এবার আমরা ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ থেকে বেশী উন্নয়ন করব- ইনশাআল্লাহ। আমি বললাম বাবা, তাই যেন হয়। তোমাদের মাধ্যমে অভাগা জাতির কল্যাণ হোক। তবে শেখ হাসিনা খুব মেধাবী। চব্বিশে তিনি টিকেগেলে তোমাদেরকে আরো পাঁচ বছরের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। জামাই বলল, এবার আর তিনি টিকতে পারবেন না, তাঁর পায়ের নীচে মাটি নাই। আমি অবশ্য উঁকি দিয়ে দেখতে যাইনাই তাঁর পায়ের নীচে মাটি আছে কিনা। যদি তাঁর পায়ের নীচে মাটি থেকেই থাকে এবং আমার নয়া জামাই যদি সেটা না দেখে থাকে। তাহলে তাকে হতাশায় ডুবতে হবে। সময় বলে দেবে ঘটনা আসলে কি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



