
সূরাঃ ৩১ লোকমান, ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৭। পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় আর সমূদ্র হয় কালি এবং এর সাথে আরো সাত সমূদ্র যুক্ত হয় তবু আল্লাহর কথা শেষ হবে না। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় আর সমূদ্র হয় কালি এবং এর সাথে আরো সাত সমূদ্র যুক্ত হয় তবু আল্লাহর কথা শেষ হবে না।সেই হিসাবে কোরআনে আল্লাহর আর কয় কথা লিখিত আছে? এখানে লিখিত আছে আল্লাহর প্রধান কিছু গুনাবলির পরিচয়।আল্লাহর ইবাদতের নিয়ম। আল্লাহর ইবাদত না করলে কি হবে সেই কথা। আল্লাহর ইবাদত করলে কি হবে সেই কথা। আল্লাহর নবিগণের কথা কোরআনে লিখিত আছে। আল্লাহর নবিগণের অবাধ্য লোকদের কথাও কোরআনে আছে। কোরআনে আর আছে আল্লাহর ওলীগণের কিছু কথা।
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ১ নং ও ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। বল, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
২। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।
সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ২৬ নং ও ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। তাতে সব বিলিন হয়
২৭। আর বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।
* আল্লাহর সবচেয়ে বড় গুণ হলো আল্লাহর গুণ অসীম সংখ্যক এবং এ অসীম সংখ্যক গুণ পরিমানেও অসীম। সেজন্য এসব গুণের কথা লিখে শেষ করা যায় না।অসীম পরস্পর আলাদা হতে পারে না বিধায় আল্লাহর অসীম পরিমানের অসীম সংখ্যক গুণ একে বিলিন হয়ে এক আল্লাহ হিসাবে বিদ্যমাণ। সৃষ্টির অসীম সংখ্যক উপাদানও আল্লাহতে অসীম পরিমাণে বিদ্যমাণ। সেজন্য বলা হয় তিনি অমুখাপেক্ষী। তারমানে সৃষ্টি করতে কোন কিছুর জন্য তাঁর কারো মুখাপেক্ষি হতে হয় না। তাঁর সত্ত্বাতেই তাঁর যাবতীয় সৃষ্টির উপায়, উপাদান ও উপকরণ বিদ্যমাণ।
নাস্তিকরা বলে সব কিছু এমনি এমনি হয়েছে আল্লাহ বলতে কিছু নাই। তাদের কথা স্ববিরোধী। কারণ সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহরও এমনি এমনি হওয়ার কথা। এমনি এমনি হওয়া বিধানে কি এ কথা বলা আছে যে এমনি এমনি সব কিছু হতে পারবে শুধু আল্লাহ হতে পারবেন না? যদি এমনি এমনি হওয়া বিধানে এমন কথা না লিখা থাকে তবে আল্লাহরও এমনি এমনি হওয়ার কথা। সুতরাং এমনি এমনি হওয়া বিধানেও ‘আল্লাহ নাই’ এমন কথা বলা মিথ্যা। সুতরাং নাস্তিকরা হলো মিথ্যাবাদী সম্প্রদায়।
নাস্তিকদের কথা অনুযায়ী এমনি এমনি কোন সসীম হওয়া সম্ভব নয়। কারণ সসীমের পূর্বে এর সীমা দাতা থাকতে হয়। এ সীমা দাতা হলো সসীমের তৈরী কারক ও সৃষ্টিকর্তা। সৃষ্টিকর্তা নিজ উপাদান ও উপকরণে সৃষ্টি করেন। কিন্তু তৈরী কারক সৃষ্টিকর্তার উপাদান ও উপকরণে তৈরী করেন। সেজন্য সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বলেছেন, সকল প্রশংসা তাঁর। কারণ তৈরী কারক তাঁর উপাদান ও উপকরণে তৈরী করে বিধায় সে প্রশংসা প্রাপ্য হবে না। সে পাবে তৈরীর পারিশ্রমিক। কেউ তার তৈরী জিনিস কিনবে অর্থের বিনিময়ে।কিন্তু তৈরী কারককে কেউ আল্লাহর ভাগের প্রশংসা প্রদান করবে না। আর তৈরী কারকও প্রশংসা পাওয়ার জন্য বসে থাকবে না। কারণ তার প্রাপ্য প্রশংসা নয়, বরং অনুগ্রহ তার প্রাপ্য। সে অনুগ্রহ তৈরী কারক আল্লাহর নিকট থেকেও পেতে পারে এবং বান্দার নিকট থেকেও পেতে পারে।
নাস্তিকদের কথা অনুযায়ী সকল অসীম এমনি এমনি হওয়া সম্ভব। কারণ অসীমের সীমা নেই বিধায় এরআগে এর সীমা দাতা থাকার দরকার নাই।আর সীমা দাতা না থাকায় কেউ সীমা দেয়নি বলে এমনি এমনি হওয়া সব কিছু অসীম হয়ে গেছে। আর সীমা দাতা না থাকায় কোন অসীম পরস্পর আলাদা না হয়ে একে বিলিন হয়ে একজন অসীম হিসাবে বিদ্যমাণ হয়েছেন। তিনি আল্লাহ। তাঁর সৃষ্টির যাবতীয় উপাদান, উপকরণ ও উপায় তাঁর মাঝে অসীম সংখ্যা ও অসীম পরিমাণে বিদ্যমাণ বিধায় তিনি যা খুশি সৃষ্টি করতে পারেন।তারমানে নাস্তিকদের এমনি হওয়া সব কিছু হলো আল্লাহর সত্ত্বার সব কিছু। এর বাইরে আর কিছু এমনি এমনি হওয়া সম্ভব নয়। অথচ নাস্তিকরা তাঁকেই বাদ দিয়ে আর সব কিছু এমনি এমনি হওয়ার কথা বলছে। সেজন্য আল্লাহর বিচারে এরা চরম মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত। আল্লাহ এদেরকে অন্তন্তকাল ধরে শাস্তি দিতে থাকবেন। কারণ আল্লাহর ক্রোধও অসীম।
যিনি সৃষ্টিকর্তা, তিনিই পালন কর্তা, তিনিই সংহারকর্তা। যারা এ একজনকে তিনজন বানায় তারাও মিথ্যাবাদী। পালনকর্তা ও সংহারকর্তা আলাদা হলেও তারা সৃষ্টিকর্তার সমান হতে পারে না। কারণ সৃষ্টিকর্তা অসীম এবং অসীম একাধীক হওয়া সম্ভব নয়। যারা সৃষ্টিকর্তার সমতুল্য বলে অন্য কাউকে বিবেচনা করে তারাও মিথ্যাবাদী। এদেরকেও আল্লাহ অনন্তকাল শাস্তি দিতে থাকবেন।
সৃষ্টিকর্তা অসীম। তাঁর স্ত্রী ও পুত্র তাঁর সমগোত্রিয় হিসাবে অসীম হওয়ার কথা। যারা সসীম কাউকে সৃষ্টিকর্তার স্ত্রী ও পুত্র সাব্যস্ত করে তারাও মিথ্যাবাদী।এদেরকেও আল্লাহ অনন্তকাল শাস্তি দিতে থাকবেন।
অসীমের আকার থাকে না। সকল আকার সসীম। যারা আকার সাব্যস্ত করে আল্লাহকে সসীম বানিয়ে বেইজ্জতি করে তারাও মিথ্যাবাদী।এদেরকেও আল্লাহ অনন্তকাল শাস্তি দিতে থাকবেন। আল্লাহর অঙ্গ আছে সেগুলোও অসীম। তবে আল্লাহ সৃষ্টির সমুক্ষে প্রকাশের জন্য আকার ধারণ করবেন। তার থেকেও দ্বীগন্ত বিলিন আলোর বিস্তার তাঁর অসীমত্ব প্রকাশ করবে। তিনি যে পায়ে গোছা উম্মুক্ত করবেন তার থেকেও দ্বীগন্ত বিলিন আলোর বিস্তার তাঁর পায়ের গোছার অসীমত্ব প্রকাশ করবে। আল্লাহ তো বলেই দিলেন তাঁর কথা লিখে শেষ করা যায় না। তারপরও তাঁকে অসীম না মানার কি কারণ থাকতে পারে? সেজন্য যারা তাঁর আকার, দেহ ইত্যাদি সাব্যস্ত করে তাঁর অসম্মান করে তাদের শাস্তি কাফেরদের মতই হবে।ঘটনা হলো আল্লাহর দেহ নাই তবে তিনি দেহ ধারণ করতে পারেন, তাঁর আকার নাই তবে তিনি আকার ধারণ করতে পারেন। তিনি যে রূপে দেহ ধারণ করবেন সে রূপে তিনি আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। তবে তাঁর দেহ থেকে দীগন্ত বিলিন আলোর বিস্তার আদম (আ.) থেকে তাঁকে আলাদা করবে। সেজন্য তিনি বলেছেন, লাইছা কামিছলিহি সাইউন- তাঁর দৃষ্টান্ত কেউ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



