
সাত দিন আমি আমাদের গ্রামে ছিলাম। ভোটের খবর জিজ্ঞাস করতেই বিএনপির একজন বলল, বিএনপি ৯৯%, জামায়াত ১%, অন্যান্য ০%। এ তথ্য সঠিক হওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমার জানামতে গ্রামে অন্যান্য দলের ভোট আছে। ভোটের বিষয়ে জামায়াতের একজন বলল, জামায়াত ৮০%, বিএনপি ২০%, অন্যান্য ০%। এ তথ্যা সঠিক নয়। ৯১, ৯৬, ২০০১ সালে আমাদের গ্রামে ১ম, ২য় ও ৩য় ছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াত। যেসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রথম হয়েছে সেসব নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায় নাই। আমার অনুমান হলো সুষ্ঠ নির্বাচন হলে এবার আমাদের গ্রামে বিএনপি প্রথম, জামায়াত দ্বিতীয় ও আওয়ামী লীগ তৃতীয় হতে পারে।
বিএনপি করার কারণে যারা ১৬ বছর নির্যাতীত ছিল তারা পাকাপোক্ত বিএনপি হয়েগেছে। তারা স্পষ্ট করেই বলেছে তারা কিছুতেই বিএনপিকে ছেড়ে যাবে না। দূর্নীতিতে যারা বেশী বিরক্ত তারা জামায়াত হয়ে গেছে। তারা মনে করে জামা্য়াত দূর্নীতি করবে না। আওয়ামী লীগের প্রধান পুঁজি একাত্তর। এটার ভেঙ্গেই তারা এতকাল খেয়ে আসছে এবং সামনেও খাবে বলে আশা করছে।
আমার ক্যান্সার আক্রান্ত বেয়াইকে (মেঝ মেয়ের শ্বশুর)দেখতে গেলাম। ক্যামোতে তিনি এখন কিছুটা সুস্থ্যা। তাঁর আট হাজার মুরগির একটা খামারে তিনি ছিলেন। ২০০৯ সালের বিজয় উল্লাস করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ তাঁকে মেরে অজ্ঞান করে এবং তাঁর খামারটাও শেষ করে দিয়ে যায়।তারা তাঁর আরো দু’টি খামার শেষ করে দেয়। তাদের উদ্দেশ্য সহজ ছিল। তারপর কেউ কিছু করতে চাইলে যেন তাদেরকে কর দেয়। তারপর জনগণ এতকাল সরকার ও সরকারী দলকে কর দিয়েছে।সরকারী দলকে দেওয়া কর সামন্ত যুগের মত ছিল। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারে থাকলে এমন টাকা পায়সা হয়। হবেইতো সরকারী দল সামন্ত যুগের মত কর আদায় করলে তাদের টাকা পয়সা না হয়ে যায় কই? সরকারী দলের কর থেকে রেহাই পেতেই জনগণের একটা অংশ জামায়াত চায়। জামাইকে বললাম, এখন তবে কি হবে? জামাই বলল, তাদের এমপি প্রার্থী আমাদের ইউনিয়ন ওয়ার্ড সভাপতির যোগ্যতা রাখে না। তাকে জিজ্ঞাস করলাম সারা দেশের ভোটের ফল তবে কি হতে পারে? সে বলল, বিএনপি ১ম, ছাত্ররা ২য়, জামায়াত ৩য়, নির্বাচনে থাকলে আওয়ামী লীগ হবে ৪র্থ। বাস্তবে কি হবে সেটা জানতে হলে লাগবে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন।
আওয়ামী লীগ ভোটে না থাকলে তারা কাকে ভোট দিবে? একজন বলল, তাহলে তারা ভোট দিবে না। তাতে ৫০% এর কম ভোট কাস্ট হলে তারা বলবে যারা ভোট দেয় নাই তারা সবাই আওয়ামী লীগ। তাতে নির্বাচন প্রশ্ন বিঁদ্ধ হবে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে ভোটে রাখাই সঠিক কাজ। জনগণ খুনীকে ভোট দিলে কার বাপের কি? গণতন্ত্রের শেষ কথাই হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন।
আমার সিংহ শাবক যুবলীগের ভাগ্নেকে দেখলাম অতিশয় নিরিহ প্রাণী। তার চোখের সামনে দিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় বিএনপি-জামায়াত। এসব দেখে সে হাসে। এ হাসি বিস্ময়ের হাসি। সেটা হলো এত কাল সে কি দেখেছে, আর এখন সে কি দেখছে? সে যেন এখন কল্পণার রাজ্যে বাস করছে। তার যে নেতার ভয়ে বাঘে-মোষে একঘাটে জল খেয়েছে সে নেতার ঘরেই আগুণ দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। আর তাদের এমপি মহোদয় এখন আছেন কানাডার বেগম পাড়ায়।
একজন বলল, আওয়ামী লীগের জনসমর্থন এখন ৮০% হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির যে হাল করা হয়েছে তাতে এটা হলেও হতে পারে, কেউ কেউ এটা মনে করছে। ঘটনা এমন হলে সুষ্ঠ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



