আমাদের বড় ছেলে সাইফ আল মাহমুদ পাইলট এবারের এস এস সি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডের ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে (ইংলিশ ভার্সন) জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে বাংলায় 'এ' এবং বাকি সবগুলো বিষয়ে 'এ+' পেয়েছে। সে আপনাদের কাছে দোয়াপ্রার্থী।
২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে পাইলট সবার বড়। পাইলটের পর ঐশী, আগামী বছর এসএসসি দেবে। সবার ছোটো ফারিহান আল মাহমুদ লাবিব এখন নার্সারিতে পড়ে।
বাবা হিসাবে আমার অনুভূতি তীব্র উত্তেজনাকর। আপনারা দোয়া করবেন আমাদের পরিবারের সবার জন্য।
পাইলট কীভাবে 'পাইলট' হলো!
পাইলটের ডাকনাম শুরুতে ছিল 'লাজিম', আমার মা রেখেছিলেন। সে লাজিম শব্দ উচ্চারণ করতে পারতো না- বলতো আজিম অথবা নাজিম। বয়স বাড়তে থাকে, কিন্তু নাম-উচ্চারণ কিছুতেই শুদ্ধ ও স্পষ্ট হয় না; কী করি!
৮ এপ্রিল ১৯৯৭। আইসিসি ট্রফিতে সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডকে ৭২ রানে হারিয়ে ওয়ার্ল্ড কাপ ৯৯-এ খেলা নিশ্চিত করে। আমি এ সেমি-ফাইনালের (ফাইনাল সহ) বল-বাই-বল স্কোর রেডিওতে শুনেছিলাম; আমার রেডিওতে স্পিকার লাগিয়ে সর্বোচ্চ ভলিউমে আমার জানালার কাছে ছেড়ে রেখেছিলাম- নিচে কাজ করছিল অনেক মানুষ, তাঁরাও যেন এ ধারাভাষ্য শুনতে পান। আনন্দে আত্মহারা। ঐ সময়ে আমি লাজিমকে ডাকি। ঐ স্কোয়াডে বাংলাদেশের সবগুলো প্লেয়ারের নাম লাজিমকে উচ্চারণ করতে বলি। লাজিম সবচেয়ে সুন্দরভাবে উচ্চারণ করে যে নামটা, সেটা হলো পাইলট। ব্যস, আমি লাজিমের ডাকনাম বদলে করে ফেলি পাইলট। বড় হবার পর অনেকেই পাইলটকে 'পাইলট' বলে ক্ষেপাতো বলে পাইলটের এ ডাকনামটা ভালো না-লাগা শুরু হতে থাকে, এবং নিজের নিক-নেইম 'সাইফ' বলে প্রচার করতে থাকে। আজকাল সাইফের বন্ধুরা ওকে সাইফ ডাকে, ওর মা-ও ডাকে সাইফ; আমি সহ বাকি সবাই ওকে পাইলট নামেই ডেকে থাকি।
ছবিতে পাইলট
গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে- দোহারে, পদ্মায়
পাইলটের মুসলমানীর সময় ওর মামা ওকে একটা লুঙ্গি কিনে দিয়েছিল। কয়েকদিন মাত্র পরেছিল, এরপর মাঝে মাঝে আমিই ওটা পরতাম গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পদ্মায় নেমেছিল লুঙ্গি পরে, এ ছবি আমি দেখলাম কয়েকদিন আগে
দুষ্টুমি
৩ ভাইবোন একসাথে। ২২ জানুয়ারি ২০০৮ সনের ছবি। ঐশীর জন্মদিন উপলক্ষে চট্টগ্রামের একটা রেস্টুরেন্টে
চট্টগ্রামের কইয়াছড়া টি-গার্ডেন
পাইলট একবার লাবিবকে জোর করে ওর আম্মুর সেলোয়ার-কামিজ পরিয়েছিল। বেচারা লাবিব অতিষ্ঠ হয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। ঘটনাটা ঘটেছিল ২০০৮ সনের ৩ সেপ্টেম্বরে সেবার আমরা কক্সবাজার সি-বিচে গিয়েছিলাম
ওদের ছোটো খালার জামাইর পাশে পাইলট এবং ফিরোজ মামার কোলে লাবিব।
লাবিব আমার ছবি তুলছিল, যখন আমি ওর ছবি তুলছিলাম
৩ ভাইবোনের ছোটোবেলার ছবি
২০০২
২০০২
২০১১
২০০২
যশোর, ১৯৯৯
মোংলা পোর্টের লঞ্চে করে সুন্দরবন অভিমুখী। ১৯৯৯।
২০০৮
রংপুর, ২০০৫। বিখ্যাত পার্কটির নাম যেন কী! ভুলে গেলাম
পাইলটের বয়স ৩-৫ দিন
পাইলট আমার হাতে
পাইলট ওর আম্মুর কোলে
পাইলট ওর নানির কোলে। পাশে ওর সেজ খালা
ড্রয়িং রুমে মডার্ন ম্যারাডোনা ফুটবল প্র্যাকটিস করছে
ঐশী দাঁড়াতে পারে না। পাইলট ওর হাত ধরে রাখছে
পেছনে যমুনা ব্রিজ
বি: দ্র: অনেকগুলো ছবি এ্যালবাম থেকে ক্যামেরায় নিয়ে পিসিতে ডাউনলোড করা হয়েছে। ফলে ওরিজিন্যাল কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে গেছে।
পাইলট যে কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক
পাইলটের প্রথম পছন্দ নটরডেম কলেজ। সবগুলো বিষয়ে 'এ+' না পেলেও সে ইংলিশ ভার্সনে পড়ছে বলে নির্বাচিত হবার সম্ভাবনা আছে। ১২ মে তারিখে পাইলটকে নিয়ে নটরডেম ও ঢাকা কলেজ ঘুরে এলাম।
পাইলটের ২য় পছন্দ রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজ।
ঢাকা কলেজের চারপাশ ঘুরে পাইলটের খুব মন খারাপ। এটা কোনো কলেজ হলো? এতো নোংরা কেন? জঙ্গলে ভরে গেছে! আমারও অনেক রাগ হলো- আমার প্রাণের কলেজ, গৌরবের কলেজ, বুক উঁচু করে যে-কলেজের নাম উচ্চারণ করে বলি- আমি ঢাকা কলেজের ছাত্র- সে কলেজের ক্ষয়িষ্ণু চেহারা দেখে খুব কষ্ট পেলাম। আমার ছেলেকে এ কলেজে পড়ানোর কতো সাধ ছিল- অথচ অবস্থা দেখে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম- একান্ত অন্য গতি না থাকলেই হয়তো শেষ পর্যন্ত আমার ছেলেকে ঢাকা কলেজে ভর্তি করাবো।
আপনারা প্লিজ দোয়া করবেন, পাইলট যেন ওর পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১২ রাত ১১:০৮