somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গঃ 'ইংব্লিশে' লেখা বেস্ট সেলার বইয়ের জনৈকা সেলিব্রেটি লেখিকা ও তাঁর লেখার স্টাইল

০৫ ই মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হেড নোটঃ এটা আমার স্টাইল যে, প্রয়োজন ছাড়া আমি কারো নাম স্পন্সর করি না; এ পোস্টে বর্ণিত মূল লেখিকার নাম পালটে দিয়ে ‘সোনাবীজ’ ব্যবহার করা হয়েছে :)

বইমেলা শেষ হওয়ার কিছুদিন আগে জনৈক ফেইসবুকার তার এক স্টেটাসে এবারের একুশে বইমেলায় যাদের বই সবচাইতে বেশি বিক্রি হয়েছে তাদের ছবিসহ নাম শেয়ার করলেন। প্রথম ৫টা নাম আমার পরিচিত, কিন্তু শেষ নামটা অপরিচিত। তিনি একজন মেয়ে। ছবিতে তিনি খুব আকর্ষণীয় এবং সুন্দরী। নাম 'সোনাবীজ'। হাজার হাজার কবিলেখকের মধ্যে সবার নাম জানা কারো পক্ষে সম্ভব না; আমি ঐ স্টেটাসে একটা কমেন্টও দিলাম - 'সোনাবীজ'কে চিনতে পারলাম না। ঘটনা সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো।

গত পরশু অন্য এক ফেইসবুকারকে দেখি সোনাবীজের বইয়ের একটা পাতা শেয়ার করে তুমুল ক্ষোভ ঝাড়ছেন- এই কি বাংলা সাহিত্যের নমুনা!! আগ্রহ চেপে না রাখতে পেরে পাতাটি পড়ি। দেশে অভ্র আসার আগে আমরা ইংলিশ লেটারে বাংলা লিখতাম, যেমন valobese gelam shudhu taka poysa pelam na ইত্যাদি। ঐ লেখাটা ইংরেজিতে, কিন্তু ডায়লগগুলো ইংলিশ লেটারে বাংলায়, যেমন, As I entered the room, he stood up and came forward. 'Are apu, apni etodin kothay chilen?' I soft touched his head with my hands and say, ‘tumi to dekhi besh boro hoye gecho! Apuke bhule giyechile, tai na?’ He exclaimed and promptly said, ‘na na apu! Aponake ki kore bhuli? Apnake bhola jay?’ লেখার এমন উদ্ভট ধরন দেখে সত্যিই আমার গা জ্বলতে লাগলো। কিন্তু লেখাটায় কিছু একটা আছে, যা আমাকে টেনে ধরলো। আমি পড়তে থাকলাম। পড়তে পড়তে পাতার শেষে চলে এলাম, পরের পাতায় কী আছে তা জানার জন্য তখনো কিছুটা আগ্রহ জিইয়ে রইল।

এরপর সোনাবীজের ব্যাপারে আরো কিছু জায়গায় দু-একটা স্টেটাস দেখি এবং সবখানে সবাই ইচ্ছেমতো তার উপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। ইংরেজিতে বাংলা লিখছে? এটা কি ইংরেজি সাহিত্য, না বাংলা সাহিত্য, নাকি জগাখিঁচুড়ি সাহিত্য? জনৈক তারাপদ গুপ্ত বেশ বিশ্লেষণমূলক একটা স্টেটাস দিয়েছেন, সেখানেও সোনাবীজের নাম উঠে এসেছে। রবীন্দ্র-নজরুল-সৈয়দ শামসুল হকেরা কালজয়ী সাহিত্য রচনা করে গেছেন, তাদের বই কখনো বেস্ট সেলার হয় নি। উৎকৃষ্ট সাহিত্য কখনো জনপ্রিয় সাহিত্য হয় না, ওসব বই যত্রতত্রও বিক্রি হয় না। কারো হাজার হাজার বই বিক্রি হলেই যে তিনি সেরা লেখক, ইতিহাস কখনো সেই সাক্ষী দেয় না। সর্বাধিক পঠিত বই সেরা ক্লাসিক হলে রসময় মিত্রই হতেন সেরা লেখক। তেমনি, সোনাবীজের বই বেস্ট সেলার হলেও কালের গর্ভে এসব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে; এগুলো সাহিত্য নয়, 'অখাদ্য'। ‘আবর্জনা’। ‘বই নামের কলঙ্ক’। তারাপদ গুপ্ত তার চমৎকার যুক্তি-উপাত্ত দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সোনাবীজ-রূপাবীজ কোনো সাহিত্যিকই না। খামোখা তাদের বই এত বেশি হারে বিক্রি হয়েছে। তিনি আরো সন্দেহ করেছেন, এটা একটা অপপ্রচারও হয়ে থাকতে পারে। স্বার্থান্বেষী মহল হয়ত এই বেস্ট সেলার রাইটারের টাকা খেয়েই তাকে টপচার্টে উঠিয়ে দিয়েছেন। দুর্নীতিরও কিছু গন্ধ পাওয়া যায় এতে। দুদকের উচিত এই বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সাহিত্যেও দুর্নীতি ঢুকে গেছে; এখনই সাহিত্যকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, নইলে সাহিত্য মাঠেই মার খাবে।

শেষমেষ আজকে মৃদুল হাজারীর পোস্টে একটু ভিন্নমত দেখতে পাই। তিনি লিখছেন- ইংরেজি সাহিত্যে যদি বাংলা ঢুকে যায়, সেটা ইংরেজি ভাষার উপর বাংলার আগ্রাসন, ইংরেজরা তাতে ক্ষিপ্ত হতে পারেন, বাংলাভাষীরা কেন? আমিও দেখি, তাইতো! আজ যদি আমরা দেখতাম, ইংরেজ সাহিত্যিকরা ইংরেজি রচনায় ডায়লগ লিখছেন বাংলায়, তাহলে কি আমরা আনন্দ আর গর্বে লাফাতে লাফাতে কেঁদে ফেলে বলতাম না- হায়রে, এই দিনটার জন্যই আমরা এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম, দেখো দেখো, আজ বাংলা ভাষা ইংরেজিতেও স্থান করে নিয়েছে!! আমি এ ব্যাপারটা তারিফ করে একটা নাতিদীর্ঘ কমেন্ট লিখলাম সেখানে। মুহূর্তে আমার কমেন্টে কয়েকটা লাইক পড়লো, কয়েকজন আমার কমেন্টের উপরও কমেন্ট করলেন, হাহা রিয়্যাক্ট করলেন। আমার একটা ধারণা হলো, এ লেখিকা নিশ্চয়ই একজন সেলিব্রেটি হবেন। আগে থেকেই তিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন। তার ফ্যানপেইজে হয়ত কয়েক মিলিয়ন লাইক, শেয়ার আর কমেন্ট আছে। অর্থাৎ, আগে তিনি জনপ্রিয়, তারপর লেখিকা।

মৃদুল হাজারীর পোস্টে যারা কমেন্ট করলেন, তাদের সবার কাছেই সোনাবীজ অপরিচিতা। কেউ কেউ সোনাবীজের ব্যাপারে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করলেন, তেমনি কয়েকজন কিছু নেগেটিভ কথাও বললেন। ঠিক একই সময়ে ফেইসবুকে আরো কয়েকটা স্টেটাস দেখতে পাই সোনাবীজকে নিয়ে। ধীরে ধীরে আরো দেখতে পাই যে, আমার ধারণা একদম ঠিক ছিল- জানতে পারি সোনাবীজ একজন বিরাট ফেইসবুক সেলিব্রেটি ও ইউটিউবার। তিনি জন্ম থেকেই জ্বলজ্বল করছেন এবং প্রথম বইটি লিখেই বেস্ট সেলার রাইটার হিসাবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেন।

যেইনা জানলাম তিনি একজন ইউটিউবার, অমনি ইউটিউবে যেয়ে Sonabeej লিখে সার্চ দিলাম। ভরভর করে সোনাবীজের নামে অজস্র অসংখ্য থ্রেড এসে জড়ো হলো। প্রতিটা টাইটেল খুবই ইন্টারেস্টিং। তিনি ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিম করেছেন। তার একেকটা লাইভ স্ট্রিমে মিলিয়ন মিলিয়ন লাভ, লাইক রিয়্যাক্ট এবং অগুনতি কমেন্ট। সবই ভালোবাসায় টইটুম্বুর। আমি মুগ্ধ হলাম তার কথা বলার স্টাইল দেখে। তার কথা বলার স্টাইল ও অ্যাকসেন্ট শুনে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে তিনি ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রী, এমনকি পড়াশুনা ও বেড়ে ওঠাও হয়ত কোনো ইংলিশ কান্ট্রিতেই হতে পারে। তিনি ফ্লুয়েন্টলি ইংলিশ-বাংলায় কথা বলে যাচ্ছেন, বাংলা-ইংলিশ-হিন্দি গান গাইছেন, প্রচুর ন্যাকামি করছেন, ঢং করছেন, ফ্লায়িং লাভ-কিস ছুঁড়ছেন, আরো কত কী! তিনি সুন্দরী, স্মার্ট, আকর্ষণীয়া। তাঁর কথাবার্তায় অহংকারের তীব্র ঝাঁঝও লক্ষ করলাম- যেমন এক ভিডিওতে ইন্টারভিউয়ার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন – ‘গোল্ড অর ডায়মন্ড’- তিনি ঝটপট উত্তর দিলেন ‘ডায়মন্ড; আজকাল কেউ গোল্ড পরে নাকি?’ সম্প্রতি তার বিয়ে হয়েছে বলেও জানা গেলো। শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে কত্ত ভালোবাসেন ও আদর করেন, তাঁদের প্রশংসায় তিনি পঞ্চমুখ। তিনি শাশুড়িকে আন্টি ডাকেন; রান্নাবান্না তার ভালো লাগে না।

আমি খুব গানের পাগল, আপনারা জানেন। সেলিব্রেটিদের তো হাজারো গুণ বা কোয়ালিটি, বা এক্সট্রা অর্ডিনারি কোয়ালিফিকেশন থাকে- এ সেলিব্রেটির কি গানের জগতে কোনো ক্যারিশমা আছে? আমি আগ্রহ বশত Sonabeej songs লিখে সার্চ দিলাম। হ্যাঁ, একটা থ্রেড উঠে এলো। একটা মিউজিক ভিডিও। কভার সং। বাংলা এবং হিন্দি ম্যাশাপ। গানটা খুব সাধারণভাবে ভিডিও করা হয়েছে। একটা শাড়ি পরে সম্ভবত বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে গানের শ্যুটিং করা হয়েছে। কিন্তু গানটা শুনে আমি কনফিউশনে পড়ে গেলাম। কার কণ্ঠে লিপসিং করছেন সোনাবীজ? এই অনবদ্য কণ্ঠশিল্পীর নাম কী? আমি তো এমন কণ্ঠের জন্য আজন্ম বুভুক্ষু! আমি তো এ সুরের জন্য আজীবন পাগল দিওয়ানা! কণ্ঠশিল্পীর নাম খুঁজতে খুঁজতে শীর্ষস্থিত ২৮০০তম কমেন্ট থেকে পড়তে পড়তে নীচের দিকে নামতে থাকি, শেষমেষ পরিষ্কার হয়ে ওঠে- আরে, এ তো স্বয়ং সোনাবীজেরই কণ্ঠ! ও গড! এ ঝঙ্কৃত কণ্ঠস্বর স্বয়ং সোনাবীজের!! সোনাবীজ একজন কণ্ঠশিল্পী! এমন মাধুর্যময় যার কণ্ঠ, তার আবার লেখালেখির কী প্রয়োজন! দেবী, তুমি শুধু গান গাও, আর ইউটিউবে শেয়ার করো, আমি তোমার আজীবন ভক্ত।

তাঁর ভিডিও স্ট্রিম ও গান দেখে মনে হলো, তিনি হয়ত লেখালেখির জগতে আর বেশিদিন থাকবেন না; তিনি হবেন আমাদের আরেকজন নুসরাত ফারিয়া; আর কিছুদিন বাদেই তিনি হয়ত পাড়ি জমাবেন টালিউড, এমনকি বলিউড বা হলিউডেও। তিনি একজন মাল্টি ট্যালেন্টেড, যিনি অচিরেই সুপার স্টারে পরিণত হবেন।

ধুম ধুম ধম্পাসসসস!!!
আবেগের কথা ছাড়ুন। আমি গানের ভক্ত আপনারা জানেন। আর কিছু দিয়া না হলেও গান দিয়া আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবেন (দয়া কইরা চান্স নিতে যাইয়া কেউ কট খাইয়েন না)। এবার কিছু রুঢ় বিশ্লেষণ করা যাক।

সোনাবীজের বইটার মলাটে লেখিকার নাম ইংরেজিতে লেখা হলেও বইয়ের নাম লেখা ‘বাংলিশে’ – ঘোraর Deeম। ভেতরের কন্টেন্ট আবার পুরোটাই ইংরেজিতে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, কিছু কিছু গল্পের টাইটেল বাংলা শব্দের হলেও লেখা হয়েছে ইংরেজিতেই, যেমন Gaab Gaache Polatok Pakhi. সব থেকে মজার বিষয় হলো, তার লেখার ন্যারেশন পুরোটাই ইংরেজিতে, কিন্তু ডায়লগগুলো হলো ইংলিশ লেটারে বাংলা ভাষায়, যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেই হয়ত প্রশ্ন উঠতে পারে- এটা কোন ভাষার বই, বাংলা, নাকি ইংলিশ? আমি এই অপ্রচলিত, অভিনব ধারার নাম দিলাম ‘ইংব্লিশ’।

বেস্ট সেলার রাইটার হিসাবে সোনাবীজের নাম টপচার্টে উঠে এসেছে। এখানে সোনাবীজের দোষটা কী বা কোথায় তা একটু খতিয়ে দেখা দরকার। ইংরেজিতে লেখা বই একুশে বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে- এটা কি দোষ? ইংরেজি বই প্রকাশের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। ইংরেজি কন্টেন্টের মধ্যে বাংলা ডায়লগ, এটা কি তাহলে দোষ? কেন এটা দোষ হবে? এটা কেবল ইংরেজরাই দোষ হিসাবে ধরতে পারেন, তাদের ভাষায় বাংলা শব্দ ঢুকে যাচ্ছে বলে, আমাদের চেঁচাবার কী আছে? বইয়ের নামটা শুধু বাংলা আর ইংরেজি শব্দের মিশেলে লেখা, কিন্তু ওটা তো একটা ‘আর্ট’, বইয়ের নাম লেখার জন্য কত বিচিত্র শিল্প বা ক্যালিগ্রাফি ব্যবহার করা হচ্ছে, সোনাবীজের বইয়ের নামটাও একটা ক্রিয়েটিভির ফসল মাত্র।

সমস্যা টি কি এই যে, আমাদের ‘ক্লাসিক রাইটারের’ বই বিক্রি হচ্ছে না, অথচ কোথাকার কোন সোনাবীজ যা-তা লিখে বাজিমাত করে দিলেন! এটা তো স্রেফ ঈর্ষা ছাড়া আর কিছু না। মেলায় যাদের বই বিক্রি হচ্ছে না, অনলাইন অ্যাজেন্সিতে যাদের বইয়ের কেউ খোঁজ নিচ্ছে না, যাদের ই-বুক ডাউনলোড হচ্ছে না, তারা কি এই নিয়া ফেইসবুকে কম কান্নাকাটি করতেছেন? মেলায় কাটতি বাড়ানোর জন্য রাতদিন তো ফেইসবুক, পেপারে কম বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন না; সচিত্র, স-লিংক, নিজের ঢোল পিডাইতে পিডাইতে অনেকেই চামড়া ফাডাই ফালাইতেছেন, কেউবা মেলায় গিয়ে স্টলের সামনে দাঁড়াইয়া মাছের বাজারের মতো খদ্দের ডাকতেছেন, কেউবা পুশ সেল করতেছেন- এগুলো কেন করতেছেন? যাতে আপনার বইয়ের কাটতি বাড়ে, তাই না? কাটতি বাড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আপনার বইটা যাতে বেশি মানুষের হাতে যায়, যাতে অনেক মানুষ আপনাকে চেনে; এসব করে আমরা খ্যাতি পেতে চাই। খ্যাতি আসলে এক বিরাট ও বিপুল মোহ, যা পরিত্যাগ করা কঠিন। এই খ্যাতির মোহেই আপনি বই লিখছেন, বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, এবং অন্যরা যারা খ্যাতির শিখরে আছেন, তাদের নামিয়ে দাবিয়ে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়ে আপনিও ঐ শিখরে পৌঁছুতে চাইছেন। খ্যাতির জন্য আপনি খ্যাতিবান মানুষের সান্নিধ্যে যাচ্ছেন; খ্যাতিবান মানুষের সাথে ছবি তুলে ছাড়ছেন; খ্যাতি পাওয়ার জন্য অনেকে অনেক ন্যাক্কারজনক, চাতুর্যপূর্ণ কাজও করে থাকেন। সোনাবীজও খ্যাতির মোহেই সবকিছু করছেন, কিংবা তার মেধার গুণে খ্যাতি আপনাআপনিই তার পায়ের তলায় এসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আপনি সেই খ্যাতির যোগ্য নন বলে হীনমন্যতায় ভুগছেন আর খ্যাতিবানদের চৌদ্দ পুরুষের ছাল তুলছেন। আপনি লিখে রাখতে পারেন, আপনার নিজের খ্যাতির জন্য আপনি নিজেই একদিন সোনাবীজের গৃহে গিয়ে হাজির হবেন, তার সাথে সেলফি তুলবেন, ভিডিও ইন্টারভিউ নেবেন, পত্রিকায় তার ইন্টারভিউ ছাপাবেন। একসময় নায়লা নাঈমকে নিয়া ফেইসবুক দুনিয়া কত ট্রল করতো, মনে আছে? এখন তিনি বিরাট সেলিব্রেটি, শুধু ফেইসবুকেই না, বাংলা মুভিতেও। তার আপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা সেলফি তুলতে পেরে আপনি ধন্য হবেন।

সোনাবীজের দোষ কি এই যে, তিনি সেলিব্রেটি কেন? নাকি দোষ এই যে, তিনি তো এমনিতেই সেলিব্রেটি, আবার বই লিখে আসল লেখকদের ভাত মারতে গেলেন কেন? কিন্তু কেউ চাইলেই কি সেলিব্রেটি হতে পারেন? আমি ২০০৮ সাল থেকে ফেইসবুক ও ব্লগে আছি, আমি তো শ্রম কম দিই নি ফেইসবুক ও ব্লগে, কিন্তু সেলিব্রেটি তো হতে পারলাম না। আমার হাঁটুর বয়সী সোনাবীজ কীভাবে মাত্র অল্প ক’দিনেই সেলিব্রেটি হয়ে গেলেন!! নিশ্চয়ই তাঁর ভেতর এমন কিছু আছে, যা তাকে সেলিব্রেটি হতে সহায়তা করেছে। তিনি সুন্দর চেহারা নিয়ে লাইভ স্ট্রিমে যেভাবে আকর্ষণীয় বচনে রসোত্তীর্ণ বাক্যালাপ করেন, তাতে উঠতি বয়সের তো অবশ্যই, পরিণত বয়সের মানুষেরাও তার ফ্যান হয়ে যেতে পারেন অনায়াসেই। তিনি মাল্টি ট্যালেন্টেড হওয়ায় লাইভ স্ট্রিমিং, চ্যাটিং, মোটিভেশনাল ক্লিপস শেয়ারিং ছাড়াও লেখালেখি করেছেন বলে ধারণা করি। ফেইসবুক জমানায় লেখালেখি না করাটাই অপরাধ। ফেইসবুকিং করবা তাইলে কি দিয়া, যদিবা না-ই কিছু লেখো? তিনি যেভাবে বলেন, ওভাবে লিখে ফেললেই তা একটা 'লেখা' হয়ে যায়। 'হাই ফ্রেন্ডস! হাউ আর ইউ' স্টেটাসেই তো বৃষ্টির মতো লাইক আর কমেন্ট পড়তে থাকে। এভাবেই তিনি গল্পটল্প লেখায় হাতেখড়ি নিয়ে থাকবেন বোধ করি। তারই ফলস্বরূপ আজ তিনি মোস্ট সোল্ড বইয়ের মালিকিন। সোনাবীজের কোয়ালিটি আমার বা আপনার মধ্যে নেই বলেই আমরা সেলিব্রেটি নই, এটা মনে রাখলে আর অকারণ গাত্রদাহ ঘটবে না।

যে-কোনো শিল্পী, কবি বা লেখক অমরত্ব চান- তারা মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকতে চান। কেউ যুগ যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী বেঁচে থাকবেন, কেউ অল্প ক’দিনেই হারিয়ে যান, ঝরে পড়ে শুকিয়ে মাটির সাথে মিশে যান। এই সোনাবীজের ভেতর যদি সত্যিকার সাহিত্য থেকে থাকে, তবে পাঠকের মধ্যে অবলীলায় ছড়িয়ে পড়বে। আর যদি তার লেখা সারবত্তাহীন, অসাড়, সস্তা হয়ে থাকে, তার জন্য আপনাকে গলাবাজি ও কূটচাল করতে হবে না, উহা এমনিতেই সবার অজান্তে নিভে যাবে, আগামী পরশুই দেখবেন তিনদিন আগে যে সোনাবীজ বলে কিছু একটা ছিল, তা কেউ জানেই না।

সোনাবীজের এই ‘ইংব্লিশ’ ভাষারীতিটা আমার কাছে খুব ক্রিয়েটিভ ও চমকপ্রদ মনে হয়েছে। বাংলাদেশের সাহিত্যে এ স্টাইলটা অনায়াসেই একটা অভিনব ধারার সৃষ্টি করতে পারে, এর চমৎকারিত্ব উঠতি জেনারেশনের কাছে ব্যাপক হারে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, আমাদের কিছু ইংলিশ ম্যাগাজিনে অলরেডি এই 'ইংব্লিশ' স্টাইল প্রচলিত। তাহলে আর দোষ কোথায়? কেউ বলছেন, বাংলা একাডেমি এসব অনাচার বন্ধ করছে না কেন? বলুন, বাংলা একাডেমি কোন গ্রাউন্ডে এটা বন্ধ করবে? বন্ধ করার জন্য কিছু যৌক্তিক কারণ থাকা আবশ্যক, যেমন- এতে উস্কানিমূলক কোনো উপাদান আছে কিনা, কন্টেন্ট অশ্লীল কিনা, রাষ্ট্রবিরোধী বা ধ্বংসাত্মক কোনো বার্তা আছে কিনা, ইত্যাদি। সোনাবীজের বইতে কী আছে জানি না; এসব উপাদান থাকলে অবশ্যই বন্ধ বা বাজেয়াপ্ত বা অবৈধ ঘোষণা করা যেতে পারে। কিন্তু, ইংলিশ লেটারে বাংলা ভাষা ব্যবহার করার কারণে তা বন্ধ করতে হবে, তা কোনো যৌক্তিক কারণ হতে পারে না। আমাদের বাংলা লেখায় অহরহ ইংলিশ সেন্টেন্স, ইংলিশ প্যারাগ্রাফ ব্যবহার করে থাকি; ডায়লগও ইংরেজিতে লিখে থাকি। বেস্ট সেলার হইয়া গেছে- ক্লাসিক লেখা না পড়ে মানুষ এই ‘অখাদ্য’ কেন পড়লো, এটাকে এখন অপরাধের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। এটা হবে ঈর্ষার চরম প্রকাশ। সোনাবীজের ১ পাতা 'ইংব্লিশ' দেখে আমার কাছে অন্তত 'অখাদ্য' মনে হয় নি, তার চাইতে অনেক নিম্ন মানের ও দুর্বল লেখায় ভরপুর বইয়ের অভাব নেই। সুতুরাং, সাহিত্যগুণহীন বই বইমেলা থেকে প্রত্যাহার করা হলে হয়ত ৫০%-এর চাইতেও বেশি সংখ্যক বই কমে যাবে।

যে-কোনো বই পড়ার জন্য পাঠকের রুচি ও যুগের হুজুগও একটা বিরাট ভূমিকা পালন করে। আমার ছেলেমেয়েরা ইংলিশ ভার্সন/মিডিয়ামে লেখাপড়া করে। পল্লীগীতি হলো আমার সবচাইতে প্রিয় সঙ্গীত; আমি নিজে লেখালেখি করি; কিন্তু আমার ছেলেমেয়েদের কাছে বাংলা বা হিন্দি গান হলো সবচাইতে অপছন্দের গান; ওরা বই পড়ে খুব কম, যাও বা পড়ে, সব ইংলিশ রাইটারের বই; ওদের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইংলিশ মুভি, ইংলিশ গান আর গেইমস। এটা বললাম দু জেনারেশনের মধ্যে যে মনোগত পার্থক্য সেটা বোঝানোর জন্য। লেখিকা সোনাবীজও ঠিক ঐ ধরনের। অনেক ছেলেমেয়ে বাংলা লেখা ফ্লুয়েন্টলি পড়তে পারে না, বাংলা কথাগুলোও ইংলিশ লেটারে লিখে (রুনা লায়লা, এলিটা- এরা নাকি গানের কথাগুলো ইংরেজি লেটারে লেখেন); আমার ছেলেরাও এই ক্যাটাগরির। ওদের জন্য সোনাবীজের 'ইংব্লিশ' বইটা খুব আকর্ষণীয় হতে পারে। বাংলা পড়ার ঝক্কি নেই, কিন্তু লেখাটা পড়ে একই সাথে বাংলা ও ইংরেজির স্বাদ পেলো। শুরুতে সোনাবীজের এই 'ইংব্লিশ' স্টাইল সমালোচনার মুখে পড়লেও এখন ধীরে ধীরে তার পক্ষে মত গড়ে উঠছে। যারা পক্ষে বলছে তারা কিন্তু সোনাবীজের ঘরানার পাঠকই এবং এরা হলো লেটেস্ট জেনারেশনের পাঠক।

আমরা যদি মনে করি যে, সোনাবীজের বইটা ‘অখাদ্য’ বা ‘আবর্জনা’ কিংবা নিম্ন মানের বই, তাতে কোনো সাহিত্যগুণ নেই, তাহলে এ বই নিয়ে এত হৈচৈ করার কিছু নেই, যুগের হুজুগ কেটে গেলে এ বই এমনিতেই ‘ডাস্টবিনে’ নিমজ্জিত হবে। কিন্তু যদি এর উলটোটা হয়, অর্থাৎ, যদি দেখা যায় আগামীদিনের পাঠকেরা সোনাবীজের যে-কোনো বই গোগ্রাসে গিলে খাচ্ছে, তাহলে আপনাকে একটু নড়েচড়ে বসতে হবে বৈকি- পাঠক রুচি পালটে গেছে, বা পালটে যাচ্ছে, এবং এ পাঠকরাই আগামীর সাহিত্যিক, তাদের লেখাও এভাবেই গড়ে উঠবে। অর্থাৎ, আপনি যদি মনে করেন আপনি ‘উৎকৃষ্ট’ সাহিত্য রচনা করছেন, কিন্তু আপনার পুরো বইমেলায় মাত্র ১০টি বিক্রি হয়েছে, কিন্তু সোনাবীজের পঞ্চম সংস্করণসহ ৫০ হাজার বই বিক্রি শেষ, তাহলে সোনাবীজের সাহিত্যই ‘উৎকৃষ্ট’ সাহিত্য, বাজারে তারই চাহিদা আছে, পাঠকের মন আর মনন ঐরকমই। আপনি ভালো সাহিত্য লিখে বাংলা ভাষাকে উদ্ধার করে ফেলছেন- আপনি শুধু এ রকম একটা অলীক বিশ্বাসের উপর ভর করে আছে; আদতে আপনি নন, সোনাবীজই উন্নত সাহিত্য রচনা করছেন। আপনি এখনো অন্ধকারেই আছেন, আপনাকে বেরিয়ে আসতে হবে নতুন আলোর নতুন ধারায়। হয় আপনি নিজেকে বদলে সোনাবীজের মতো গড়ে তুলুন, অথবা যেভাবে আছেন, সেভাবেই বাস্তবতাটাকে মেনে নিন।

আরেকটা কথাও ভাবুন, আপনি যাকে ‘আবর্জনা’ বা নিম্ন মানের সাহিত্য ভাবছেন, এটা আপনার অ্যাসেসমেন্ট; এ ‘মানদণ্ড’ আপনার নিজের বানানো। সোনাবীজ বা সোনাবীজের যে পাঠকরা আছেন, তারা যে উলটো আপনার লেখাকেই ‘আবর্জনা’ বা ‘ডাস্টবিন’ বলে ছেঃ ছেঃ করছে না, এ ব্যাপারে কি আপনি নিশ্চিত? সোনাবীজ আর তার পাঠকেরা যে আপনার চাইতে অধিক ট্যালেন্টেড না, তার বইটা যে আপনার বইয়ের চাইতে উৎকৃষ্টতর না, সেটাই বা আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন? শুধু নিজের বিচার নিজে করলেই তো হবে না, অন্যের বিচারে আপনার অবস্থান কোথায়, সেটাও ভাবতে হবে। ওয়ার্ল্ড লিটারেচার যেমন আপনার পড়া আছে, তেমনি সোনাবীজ বা তার পাঠকেরও পড়া আছে। দিন যত যায়, মানুষ তত বেশি মেধাবী হয়। আপনি বেশি মেধাবী, নাকি আপনার বাবা বা দাদা? আপনি বেশি মেধাবী, নাকি আপনার ছেলেমেয়ে, বা নাতি-নাতনিরা? আপনার দাদা চড়তেন ঘোড়ায়, আপনি চড়ছেন প্লেনে- এক কথায় জবাব দিলাম। সুতরাং, নিজের লেখা নিয়া অতো হম্বিতম্বি না কইরা শান্ত হোন, নিজেকে চিনুন, অন্যকেও চিনতে থাকুন। আর, আমার এ লেখাটা আদ্যন্ত না পড়ে শুধু হেডিং দেখেই যে ধরে নিয়েছেন আমি সোনাবীজকে সাপোর্ট করছি, তা বোঝার জন্য একটু কষ্ট করে এ দীর্ঘ লেখাটার শেষ লাইন পর্যন্ত পড়ুন, আমি কী বলতে চাইছি তা বুঝতে চেষ্টা করুন, দেখবেন, আপনার লাফালাফি শেষ হইয়া গেছে।

গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা কথা বলার জন্য গলা খুশখুশ করতেছে। সাহিত্যের ‘জাত গেলো জাত গেলো’ বলে যারা গলা ফাডাই ফালাইতেছেন, আমি তাদের সাহিত্য গত ১৫-২০ বছর ধরিয়া দেখিতেছি। তাদের কোনো উঁচু জাতের সাহিত্য আমি এখনো পড়িতে পারি নাই; অনেকে তো সেই ১৫ বছর আগে যা ছিলেন, এখনো সেই বৃত্তেই ঘুরপাক খাইতেছেন আর নিজে ‘আমি কী হনুরে’ মনে কইরা সেলফি মাইরা বেড়াইতেছেন। অন্যের লেখা ‘অখাদ্য’ বলার আগে নিজের লেখারেও যে অন্যে ‘অখাদ্য’ বলে বেড়াইতেছে, সেটা ভেবে চোখে একটু লজ্জাশরম আনতে চেষ্টা করুন।

তাছাড়া, এমনিতেও স্বাভাবিক নিয়মেই ধীরে ধীরে পাঠক রুচি পালটাতে থাকে। আমরা এখন ইতিহাসের ফসিল হিসাবে চর্যাপদ নিয়ে গবেষণা করি, কিন্তু আনন্দ বা জ্ঞানা আস্বাদনের জন্য ক’জন চর্যাপদ পড়ি? বর্তমান জেনারেশন যে-হারে ফেইসবুকমুখো হচ্ছে, রবীন্দ্র-নজরুলকে তাঁদের মনোজগতে ঢুকিয়ে দেয়া খুব কষ্টকর। আর কষ্ট করে ঐ চেষ্টা না করাই ভালো মনে করি। এদের ভবিষ্যত এরা গড়ে নেবে। সাহিত্যও এদের ইচ্ছের আদলেই গড়ে উঠবে- ইংব্লিশ, হিন্দব্লিশ, বাংলিশ, বাংলার মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হবে, সেই ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে অনেক সোনাবীজ হারিয়ে যাবে, নতুন যুগের নতুন রবীন্দ্রনাথও গড়ে উঠবে। এ নিয়া এত চিল্লাপাল্লা, হা-হুতাশ করার দরকার দেখি না। হয়ত 'ক্লাসিক সাহিত্যের' ডেফিনিশনও পালটে যাবে- বর্তমানের রবীন্দ্র স্ট্যান্ডার্ড বদলে গিয়ে সোনাবীজের স্টাইলই হয়ে উঠতে পারে নতুন ধারার আইডিয়াল ক্লাসিক বাংলা লিটারেচার।

অতএব, নিজের মতো করে নিজের আনন্দে লিখুন। আপনিও যে টপচার্টে সোনাবীজের উপরে উঠবেন না, এইডা আপনারে কেডা কইছে?



বিঃ দ্রঃ এ লেখার ধরনটাও একটা ইশটাইল, আমার নিজস্ব। শুদ্ধ বাংলা পড়তে পড়তে যেখানে চাছাছোলা, সাধু-চলিত-আঞ্চলিক ভাষার দূষণীয় মিশ্রণ দেখবেন, বুঝবেন লেখক ওখানে রাগ, অনুরাগ বা আবেগ প্রকাশ করছেন, যেখানে লেখার স্বাদ একটা মাত্রা পায়। অন্য কেউ আবার এটা নকল কইরেন না।


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×