আধুনিক কবিতার প্যাটার্ন কীরূপ হবে, সে ব্যাপারে আপনাদেরকে
কিছু জ্ঞানগর্ভ পরামর্শ দিচ্ছি। আপনারা অনেকেই হয়ত জানেন,
আগের দিনে কবিতার লাইনগুলো সমান থাকতো, কিংবা
দুই লাইন, বা তিন, চার লাইন পর পর
একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্নে লাইনগুলো সাজানো হতো। কিন্তু
অধুনা, মানে আধুনিক কবিতায় লাইনগুলো সচরাচর সমান থাকে না।
যদিও এটাও কোনো সুনির্দিষ্ট স্টেটমেন্ট না, তবু মূল কথা যেটা
তা হলো, যারা কবিতা পড়েন, তারা কোনো একটা লেখা পড়ার আগে
প্যাটার্ন দেখেই বুঝতে পারেন, এটা কবিতা, কিংবা গদ্য।
একটা কবিতা কখন কীভাবে সার্থক কবিতা হয়ে গেল, তা বলা মুশকিল
কোনটা সার্থক কবিতা, তা নিয়েও অনেক বিতর্ক বা আলোচনা
হতে পারে। ধরুন, আমার এই বিশ্ববিখ্যাত কবিতাটা
আজ যদি বিশ্ব সোশ্যাল মিডিয়ায়
ভাইরাল হয়ে যায়, তবে এটা একটা কালজয়ী কোবতে হয়ে যাবে।
বিশ্বকবি খলিল মাহ্মুদের নাম তখন আকাশে বাতাসে
আছাড় খাইতে খাইতে পাতাল পর্যন্ত ছড়াইয়া পড়িবে।
'চারদিকে একি শুনি, সোনাবীজের জয়ধ্বনি' শ্লোগানে পৃথিবী
প্রকম্পিত হবে। তখন আবার একদল অবশ্যই বের হয়ে এসে
অপবাদ দিয়া বলবে- 'ভুয়া বিশ্বকবির আবির্ভাব, ফুটানি বেশি, ভাবের অভাব'।
বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো উঁচু মানের কবি নাই। তাই, কিছু
উঁচু মানের কবি সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যেই এই গাইডলাইন প্রণয়ন
করে জনস্বার্থে ফেইসবুক ও ব্লগে প্রকাশ করিলাম। আপনারা পড়িবামাত্র
৪২০জনকে শেয়ার দিন। যারা শেয়ার দিবেন, তারা হাতে হাতে ফল
পাইবেন। যারা অবিশ্বাস করে ইহা অবহেলা করিবেন, তারা হাতে হাতে
ফল পাইবেন না। শুধু ঘুম থেকে ওঠার পর দেখবেন আপনার
ঘুম ভেঙে গেছে। এবার কবিতা লিখুন। প্রয়োজনে পরামর্শের জন্য
০১২৩৪৫৬৭৮৯০১১ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করুন।
এটাকে যারা রম্য কোবতে হিসাবে ট্রিট করবেন, তাদের জন্য এবারে
কিছু সুগভীর বার্তা জুড়ে দিতে হচ্ছে। জীবনে কখনো গালি, অর্থাৎ বকা,
অর্থাৎ, শুদ্ধ ভাষায় ‘ভর্ৎসনা’ খাবার অভ্যাস গড়ে তুলবেন না। কেউ
আপনাকে একটা বকা দিলে আপনার শরীর জ্বলে যায় যদি, তবেই
আপনি মানুষ। কারণ, কেন বকা খেলেন, ভবিষ্যতে যাতে আর বকা
না খেতে হয়, আপনি তখন সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলবেন। অন্যদিকে,
বকা খাওয়াকে যদি নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাস মনে করেন,
তাহলে আপনি একটা ইডিয়ট। এরকম ইডিয়টরা মসজিদে ছেঁড়া জুতা চুরি
করে গণপিটুনি খেলেও লজ্জা পায় না। লজ্জা না পেতে না পেতে
একসময় তারা বড়োচোর হয়, তারপর হয় ডাকাত, তারপর ধর্ষক হয়;
খুনি হয়; জেলহাজতও তখন তাদের কাছে শাস্তি মনে হয় না।
একজন মানুষ কত বকা খেতে পারে, বলেন তো? কেউ কেউ
দিনের পর দিন বকা খেয়েই যাচ্ছে, খেয়েই যাচ্ছে, তার চোখে কি
একরত্তি লাজলজ্জাও নেই? একটা মানুষ কীভাবে এতটা বেহায়া
এতটা খাটাস হতে পারে?
কোনটা সাহসিকতা, আর কোনটা ছ্যাঁচড়ামি- পার্থক্য বুঝতে চেষ্টা করুন।
দূর থেকে, আড়ালে আবডাল থেকে ট্রাম্প আর পুতিনকে গালি দেয়ার নাম,
কিংবা পুলিশ বা আর্মির গায়ে ঢিল ছুঁড়ে মারাকে সাহসিকতা বলে না।
তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে আপনার লুঙ্গি ভিজে যায়, এটা সবারই জানা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াকে সাহসিকতা বলে।
মুখের উপর উচিত কথা বলার নাম সাহসিকতা।
কাউকে অযথা প্রশংসা করবেন না। ইডিয়টদের কখনো প্রোমোট করতে নেই,
তাহলে দেখবেন, সেই ইডিয়টরাই একদিন আপনার মাথায় মুগুড় ভাঙছে।
ইডিয়টরা কখনো নিজের ভুল বুঝতে পারে না। গোয়ার্তুমিকে এরা
আধ্যাত্মিক ধর্ম মনে করে। এদের মুখে কেউ প্রস্রাব করে দিলেও
এরা লজ্জিত হয় না, পরমুহূর্তেই ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করে।
কেউ কেউ বড্ড চাটুকারিতা করে বেড়াচ্ছে। এরাও খাটাস।
ওদের টুটি চেপে ধরুন। এসব চাটুকারিতা বা তোষামোদি ইডিয়টদের
লাগামহীন ও বেপরোয়া করে তোলে। কারণ, ইডিয়টরা তোষামোদিকে
সত্যভাষণ মনে করে; অথবা তোষামোদি তারা ভালোবাসে বলে দুধকলা
দিয়ে এদের পোষে।
এই যে, এতক্ষণ যেটা পড়লেন, এটা কবিতাও না, গদ্যও না। তাহলে
এটা কী? রম্য? আমি আর কী বলবো, আপনারাই বলুন এটা কী
হয়েছে, আর এভাবেই লিখতে থাকুন। আর, এ থেকে যদি কোনো নির্যাস
উদ্ধার করতে পারেন, তা কাজে লাগান। শুভেচ্ছা সবার জন্য।
০৩ এপ্রিল ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫১