somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'মাটির দেহ' - মিরোরডডলের বিবেচনায় আমার সেরা দুটি গানের একটি; অন্যটি 'ঘরের মানুষ'

০৬ ই মে, ২০২২ বিকাল ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আর আমার বিবেচনায় আমার সেরা গান ৫টি হলো রাজকুমারী - ও আমার সহেলিয়া, তুমি কোথায় আছো, সেই তুমি চলে গেছো - কণ্ঠ মেহেদী, যত চাই ভুলে যেতে - কণ্ঠ প্রকাশ এবং শহরের অলিগলি, যত রাজপথ। এগুলোর উপর ব্লগে পোস্টও লেখা হয়েছে, যা যথাক্রমে রাজকুমারী, তোমার জন্য সন্ধ্যগুলো গন্ধে মেখে রাখি - তুমি কোথায় আছো?, শহরের অলিগলি, যত রাজপথ, যত চাই ভুলে যেতে, সেই তুমি চলে গেছো। যদিও আমার লেখা আমার প্রিয় গানগুলোর নাম এখানে উল্লেখ করেছি, তবু বলে রাখা ভালো, নিজের কাছে আসলে সবগুলোই সমান। যেমন, এখন যখন তালিকা করতে যাচ্ছি, মনে হচ্ছে এই দিশেহারা মেঘ, এই পথ ধরে আমি হেঁটে গিয়েছি, এই তো আমি এসেছি কাছে, আমি এই শহরের পথে পথে হাঁটি - তালিকা করতে গেলে সবগুলো গানই চলে আসে।

নিজের সৃষ্টি থেকে নিজের সেরা নির্বাচন খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেজন্য, পাঠক বা শ্রোতারাই হলেন শ্রেষ্ঠ বিচারক।

মনে মনে ভাবছিলাম, আমার সেরা ৫-৭টা গান নিয়ে একটা অ্যালবাম করা যায় কিনা। মনে মনে শিল্পীর নামও ভাবছি। আমার বেশিরভাগ গানই স্যাড টিউনের, অর্থাৎ, বিরহের গান। জীবনে ছ্যাঁকা খাইছিলাম, মনে হয় সেইজন্য :) আমার পছন্দের গান সারাজীবনই দুঃখের গান (এটা অবশ্য ছ্যাঁকা খাওয়ার আগে থেকেই :) )। তো, অ্যালবাম যদি বের করিই, আমি প্রেফার করবো স্যাড গানগুলোকে সিলেক্ট করতে, যদিও সাথের লোকজন হয়ত মিক্সডের কথাই বলবেন।

কিন্তু, একটা অ্যালবাম বের করার জন্য প্রথমত একটা বাজেটের দরকার, দ্বিতীয়ত এর জন্য আছে অনেক হ্যাসেল। দৌড়াদৌড়ির সময় নাই।

যাই হোক, ধান ভানতে অ্যালবামের কথা বলে লাভ নাই। ওটা আদৌ হবে কিনা, তাও জানি না। এই ইউটিউবের যুগে অফিশিয়াল অ্যালবাম পাবলিশ করার যৌক্তিকতাই তো দেখি না। গাছে কাঁঠাল, তলায় প্লেট হাতে বসে থেকে অযথা সময় নষ্ট। তবে, শিল্পীদের দিয়ে একটা একটা করে গান গাইয়ে রিলিজি করা যায় কিনা, সেই কথাও ভাবছি।


এবার শিরোনামে আসি।

এর আগে, খালি গলায় গাওয়া 'মাটির দেহ মাটিই হইব' গানটির ভার্সন-১ এইখানে এবং ভার্সন-২ এইখানে আপলোড করা হয়েছিল। আমার এলাকার চঞ্চল মাহমুদ দোহারী ভাইয়ের গলা বেশ দরাজ এবং তার গাওয়া আধ্যাত্মিক গান, বিশেষ করে লালন গীতির আমি একজন বড়ো ভক্ত। চঞ্চল ভাইকে একদিন 'মাটির দেহ' ও ঘরের মানুষ গানদুটোর লিরিক ও সুর পাঠিয়ে বললাম গেয়ে দেওয়ার জন্য। তিনি দুটো গানই অতি আন্তরিকতার সাথে গেয়ে আমার কাছে পাঠালেন। চঞ্চল ভাইয়ের খালি গলায় গাওয়া গানটি এইখানে আপলোড করা হয়

ফার্স্ট ইম্প্রেশন ইজ দ্য এভার লাস্টিং ইম্প্রেশন। আমার নিজের লেখা গান নিয়ে অজস্র পোস্ট রয়েছে এবং আমার গানের বড়ো শ্রোতা, সমালোচক বলতে গেলে এক এবং একমাত্র মিরু। যদিও আরো কয়েকজন ব্লগার প্রায় নিয়মিতভাবেই গানের পোস্টে ঢুঁ মেরে থাকেন, যাদের মধ্যে মরুভূমির জলদস্যু ভাইয়ের নামটাই সবার আগে বলতে হয়। তো, আমার নিজের লেখা গানের সাথে মিরুর প্রথম পরিচয় হয়েছিল 'মাটির দেহ' এবং 'ঘরের মানুষ'-এর সাথে। অনেক বারই তিনি বলেছেন, এ দুটোর মতো আমার আর কোনো গান নেই। সঙ্গীতে বিরাট ট্যালেন্ট মিরুর এই কমেন্ট আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দেয় - অন্তত তার কিছুটা মনের মতো হলেও দুটো গান আমার আছে।

মাটির দেহ মাটিই হইব - ০৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে গানটা লেখা হয়েছিল, সামহোয়্যারইন ব্লগে। ঠিক মনে নেই, তবে অন্য কারো একটা পোস্টে কমেন্ট আকারেই লেখা হয়েছিল বলে মনে পড়ে। আর এ গানের সুর তৈরি হয়েছে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে। সুর তৈরির ব্যাপারটা খুব মজার ছিল। মাঝে মাঝেই আমার এমন হয় যে, আমার প্রিয় গানগুলো আমি একনাগাড়ে অনেকদিন গাইতে থাকি, গুন গুন করে, গলা ফাটিয়ে, পিসিতে কাজ করার সময়, কিংবা অন্য কাজ করার সময়, বা টিভি দেখার সময়, বিশেষ করে খেলা দেখার সময়। সেই গান গাইতে গাইতে একসময় নিজেই খেয়াল করে দেখি, গানটি আর এর অরিজিন্যাল সুরে নেই, অর্থাৎ, সুরটার উপর আমার এত অত্যাচার হয়েছে যে, মূল সুর থেকে আমি ছিটকে বাইরে চলে গিয়েছি। ব্যাপারটা হাস্যকর। কিন্তু, এই অন্যসুরগুলো সবসময়ই কর্কশ হয় না, কখনো-বা সুরেলা এবং শালীনও হয়ে থাকে। এ গানের সুরের ব্যাপারে যা ঘটেছিল - আমি রহমান বৈয়াতীর 'মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি' গানটা গাইছিলাম। এ গানটায় আমি একটু ভেরিয়েশন আনার চেষ্টা করছিলাম ২য় লাইনে (সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে - এই অংশে)। সেই ভেরিয়েশনের একটা ক্যাজুয়াল রেকর্ডও করা হয়েছিল। এবং এই ভেরিয়েশন থেকে এক সময় দেখি, সম্পূর্ণ আলাদা একটা সুরই হয়ে গেছে। খুঁজতে খুঁজতে দেখি, আমার এই লিরিকের সাথে সুরটা মিলে যায়। ব্যস, গানটা হয়ে গেল। শুরুতে এটাকে 'মাটির দেহ' নামে কবিতা আকারে আমি ট্রিট করে আসছিলাম। এখন অবশ্য গানের লিরিক ও কবিতা দুই ফরম্যাটেই থাকবে।

সুরের প্রথম ভার্সনটা গাইতে গাইতে ওটাতেও একটা ভেরিয়েশন তৈরি হয়ে যায়। ফলস্বরূপ, একই গানের সুর হয়ে যায় দুটো।

এবার 'মাটির দেহ' গানটির দুটো ভার্সনই নতুন করে গেয়ে মিউজিক যোগ করে আপলোড করেছি। আর চঞ্চল ভাইয়ের আগে গাওয়া গানটির উপর মিউজিক যোগ করেছি।

আমি আবারও জোর দিয়ে বলে নিই। আমি গান গেয়ে থাকি মূলত সুরটাকে ধরে রাখার জন্য, কারণ, আমি সুর তৈরি করি, এ সুর ধরে রাখার জন্য একটা মাধ্যমের দরকার, সেটা আমি নিজেই। কাজেই, কেউ গান শুনে দয়া করে আমার নিজের গলার বিচার করবেন না। বিচার করবেন সুর এবং লিরিকের।

এখানে যে কথাটা না বললেই নয়। চঞ্চল ভাই আমার সুরে না গেয়ে তিনি নিজের সুরে গানটি গেয়েছেন। তিনি মূলত লালন গীতি গেয়ে থাকেন। তার গাওয়া আমার গানটি আমি তন্ময় হয়ে শুনি, এতটা মুগ্ধ।

এবার, আমার নতুন করে গাওয়া দুটি গান এবং চঞ্চল ভাইয়ের গাওয়া গানটি শেয়ার করা হলো নীচে।

এই মাটির দেহ মাটিই হইব, ভার্সন-১। আমার কণ্ঠে



এই মাটির দেহ মাটিই হইব, ভার্সন-২। আমার কণ্ঠে



এই মাটির দেহ মাটিই হইব। চঞ্চল মাহমুদ দোহারী




লিরিক :

মাটির দেহ মাটিই হইব
মাটিই হইব বিছানা মন
সময় কালে মনা তুমি
মাটির দিকে ফিরা চাইলা না

মাটি তোমায় আহার দিল
মাটি দিল বৃক্ষফল
ও মন রে
মাটির কাছে কত দেনা
তার তো খবর নিলা না

আয় রে মনা আদম সোনা
মাটির কথা শুনতে আয়
সময় থাকতে চিনে নে তুই
কোথায় তোর মোকামখানা

৬ এপ্রিল ২০০৯

কথা : খলিল মাহ্‌মুদ

সুর : খলিল মাহ্‌মুদ - ভার্সন-১ ও ভার্সন-২

সুর : চঞ্চল মাহমুদ দোহারী - তার নিজের গাওয়া গানটা - সুর - চঞ্চল মাহমুদ দোহারী

এই পোস্টটা মিরুর উদ্দেশে নিবেদিত। মিরু আর কেউ না, তাকে চিনতে শিরোনাম দেখুন :)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৩
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×