অনির্বাণ ভূম
দাঁড়ায় সে সূর্যের ছায়ায়, আঙুলে খেলা করে দুপুরের মেঘ
ঘুমের শরীরে ফোটে রতিরেণুবেগ
আমি তার প্রিয় ভূমি, সুফলা জমিন
একাল-ওকাল সুখ দিই চিরদিন
তবু তার দেখি চোখ তারায় তারায় ওড়াউড়ি
সুফলা জমিনখানি অলখিতে খরদাহে পুড়ি
৩১ মার্চ ২০০৯
খুব ধীরে সে এগোয়
খুব ধীরে সে এগোয়
সন্ধ্যার সারসেরা পূবের তীর্থে অর্থী হতে হতে
পরিণেয় নদীর নাভিতে ডুবে গেছে ঝিমধরা দিন
তীয়রী নারীর হর্ষফলায় এখন শুধু ফালি ফালি ঢেউ
১৪ এপ্রিল ২০০৯
পুরুষ ও পাখি
পাখিপুরুষরা পুরুষপাখির মতোই কালে কালে পাড়ি দেয় সমুদ্রের আকাশ
পুরুষপাখিরা ডানা ভেঙে উড়াল থেকে ভূমিস্মাৎ হয়েছে শোনা যায় না
পাখিপুরুষরাও মাঝে মাঝে শৌর্য্যবীর্যে নারীদের ছাড়িয়ে যায়; তথাপি
ডালপালাহাড়গোড় ভেঙে পানিগর্ভে মজ্জিত হওয়াই তাদের নিয়তি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০
২৫ বছরের মৃতদেহ
একদা আমি তাকে ভালোবাসতাম। তাকে কাল আবার নতুন করে ভালোবাসতে গেলে আন্তরিক হাসিযোগে আমাকে গ্রহণ করলো। অন্তরঙ্গ আতিথেয়তা শেষে সে বললো, তোমাকে অভিবাদন, আজ আমার ২৫তম মৃত্যুদিবস।
১৫ মার্চ ২০১১
রাখি
একবার ভেবে দেখো আকাশলীনা,
তোমার এতটুকু মনে পড়ে কিনা -
মাইনী নদীর স্রোতে যেদিন দুপুরে ভাসিয়েছিলে চুল ও শরীর,
একঝাঁক উদ্ভ্রান্ত পাখি পলকে তাকিয়ে স্থির
পাক খেয়ে উড়ে গেলো পাহাড়ের মেঘে।
তখনো তোমাকে ডেকে ডেকে
অবিচল রোদে গান গায়, অথবা কাঁদে ঠিকানাবিহীন নিজ্ঝুম পাখি।
আমি তার আজও জানি না নাম; এবং ঠিকানা; অথচ দেখো, আমার মণিবন্ধে
নিয়ত উদ্ভাসে তার অনসূয়া ‘রাখি’।
২০ জুন ২০১০
তোমার জন্য
সব কবিতারই কিছু মানে হবে
এ ভেবে কখনো কবিতা লিখি নি
সব ইশারায় সাড়া দেবে তুমি
এমন করেও কখনো ভাবি নি
যখন যেভাবে শব্দরা আসে
ক্রোধ ও কান্না, প্রেম ও দ্রোহে
ওভাবেই ওরা ঠাঁই করে নেয়
আপন গুণ ও গন্ধ-আবহে
যা কিছু লিখেছি প্রেমের জন্য
হয়ত সবই তা নিরেট বর্জ্য
অশ্রু ফেলো না, যেদিন বুঝবে
তোমার জন্য এসব অর্ঘ্য।
১৬ অক্টোবর ২০১২
ঋণ
তুমি চলে গেছো, সেই বেদনার অমৃত-খনি থেকে
উঠে আসে চির-ফল্গুধারার কবিতারা একে একে
তুমি চলে গেছো, চলে-যাওয়া পথে সোনা ফোটে প্রতিদিনই
আমার সকল কবিতারা তাই তোমার কাছেই ঋণী।
১৭ অক্টোবর ২০১২
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২২ সকাল ৮:০৬