কেউ অপেক্ষা করে না
সময় চলে যায়, দক্ষিণের হাওয়া উড়ে যায়
উত্তরের দেশে, হিমাচলে;
যার জন্য অপেক্ষায় ছিলে, সকাল থেকে দুপুর
দুপুর থেকে সন্ধ্যা, তোমার একটু দেরি হলে
সে আর একমুহূর্ত দাঁড়ায় নি, লেশহীন, ভ্রূক্ষেপহীন চলে গেছে,
একবারও মনে হয় নি তার, তার জন্য সারাটা দিনই
কাটিয়ে দিয়েছ তুমি।
কেউ অপেক্ষা করে না সুহৃদ, তোমাকে ফেলে
সবাই চলে যাবে, যার যার কাজে
করলা জানে না - সে কত তিতা,
বিষধর জানে না - তার ছোবলে জীবন ঢলে পড়ে
আবার, বাতাস জানে না, অম্লজানে সে
জীবন বাঁচিয়ে রাখে। হরিণ জানে না, বাঘও জানে না
ওদের নাম হরিণ বা বাঘ - নামগুলো আমরাই দিয়েছি।
মানুষ জানে না, কী এক মহান গ্রন্থ সে নিজে – যাকে
পাঠ করে জীবনের সবচাইতে বড়ো শিক্ষা লাভ করে থাকি।
মানুষেরই শুধু অহঙ্কার থাকে - পশুদের নয়, পাখিদের নয়
মানুষই শুধু ভাবে, আমিই সেরা, অন্যের চেয়ে
অন্যকে পায়ে দলে, মানুষই শুধু উপরে ওঠে
নিজের সুখই আরাধ্য যাদের,
তারা আর কেউ নয় – মানুষই তারা
মানুষ এমন – কে তাকে কতখানি দিয়েছে, সে-হিসাব
রাখবে কদাচিৎ, হয়ত-বা ভুলেই যাবে, অথচ কাকে সে
ক’রত্তি করেছে দান,
পাই পাই লিখে রাখবে প্রতিটা হিসাব।
যার জন্য দিনের পর দিন দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকেছ
লাভ-ক্ষতি, পূর্বাপর কিছুই না ভেবে,
একদিন তোমার সামান্য দেরি হলে
বিরক্তিতে জ্বলে উঠবে সে – ‘ধ্যাত্তোরি,
এভাবে কি বসে থাকা যায়?’
যাকে তুমি অঢেল সাঙ্গ দিয়েছ, নির্মোহ প্রেমে, ব্রজ-বিহারে,
একদিন তোমাকে এক-দণ্ড দিয়েই বলবে –
লিখে রাখো, আজ আমার পুরোটা দিনই
মাটি হলো তোমার পেছনে।
জীবনকে শিখতে হলে মানুষকে পড়তে শেখো। পড়তে শেখো
নিজেকেও। নিজকে চিনলেই চিনবে পরকে। মানবগ্রন্থই
পৃথিবীর সেরা গ্রন্থ; এবং অতি অবশ্যই জটিলতম।
তোমার জন্য কেউ দাঁড়াবে না পথিক, আপন আপন পথে
সকলেই চলে যাবে অভীষ্টের সন্ধানে
যাদের জন্য অপেক্ষায় থাকো, তাদের তুমি চেনো নি কখনো
তারা মানুষ, নিরেট মানুষ, যারা শুধু স্বার্থটাই বোঝে,
‘মানুষ’ বোঝে না তারা।
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




