আমার গ্রামকে নিয়ে এর আগে বেশকিছু গানই লেখা হয়েছে, যদিও সেগুলো দেশের গান হিসাবে সারা বাংলার যে-কোনো গ্রামকেই বুঝিয়ে থাকে। এ গানটায় আমার নিজ গ্রাম ডাইয়ারকুমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ গানের প্রথম অংশ বা 'মুখ' লিখে (তখনো অন্তরা লেখা হয় নি, সুরও করা হয় নি) ২৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে ফেইসবুকে স্টেটাস দিয়ে বলেছিলাম, আমাদের গ্রামের যে-কেউ ইচ্ছে করলে গানের অন্তরা যোগ করতে পারেন। ছন্দ মেলানোর জন্য কষ্ট করতে হবে না, বিষয় বা গানের কন্টেন্ট গদ্যাকারেও সাজাতে পারেন। বাকি কাজ আমার। যেহেতু আমাদের গ্রামকে নিয়ে লিখছি, গ্রামের কারো অবদান এ গানটায় থাকলে সেটা আমার ভালো লাগবে বলে আমি ভেবেছিলাম। কিন্তু লিরিকের ব্যাপারে কারো কাছ থেকে কোনো কন্টেন্ট পাই নি, অবশেষে যথারীতি আমিই পুরো লিরিক লিখে ফেলেছিলাম। এরপর এ গানের উপর দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছিলাম, যা এখন সামান্য পরিমার্জন করে রি-পোস্ট করা হলো। আমি আপ্লুত হয়েছিলাম, যারা ব্লগে গানটি শুনেছিলেন, সবাই এর প্রশংসা করেছিলেন, যা আমাকে প্রভূত আনন্দ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছিল এবং এখনো দিচ্ছে।
গানটির মিউজিক এডিট করা হয়েছে। এডিটেড মিউজিকে এবার শেয়ার করা হলো।
এ ভিডিওতে আমাদের গ্রামের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ফেইসবুকে, যদ্দূর মনে পড়ে আমার গ্রামের মোঃ ফরিদুল ইসলাম, ইসলাম খান, বোরহান উদ্দিন এবং এনামুল হক আমাকে ছবিগুলো পাঠিয়েছিল। ওদের প্রতি ছবির কৃতজ্ঞতা রইল।
শহর থেকে দূরে নয়, আড়িয়ালের পাড়ে
মন যে আমার পড়ে থাকে ছোট্ট আমার গ্রামে
মায়ের মতোই মমতায় ভরা
গ্রামটি আমার
ডাইয়ারকুম তার নাম
ও ভাই সেই যে আমার গ্রাম
ও ভাই সেই যে আমার গ্রাম
বুক শীতল করা
সবুজে শ্যামলে
নয়ন জুড়ানো
আছে আমার
ছোট্ট একটি গ্রাম
আমার গ্রামের মাটির গন্ধ
এ গায়ে মিশে আছে
আমার গ্রামের মাটির গন্ধ
এ রক্তে মিশে আছে
দরদিয়া মুখগুলো সব
ঘুমে-জাগরণে
সদাই চোখে ভাসে
আমার সদাই চোখে ভাসে
গ্রামের কথা মনে হলে মন করে আনচান
পশ্চিমে আর পুবে যেন
দুইটি সহোদর
একটি বৃন্তে দুইটি পুষ্প,
দেখতে কী সুন্দর
আহা, দেখতে কী সুন্দর
সবুজ অঙ্গন মাঠটি আমার গ্রামবাসীদের প্রাণ
ও ভাই সেই যে আমার গ্রাম
ডাইয়ারকুম তার নাম
০৩ ডিসেম্বর ২০২২
কথা, সুর, মিউজিক কম্পোজিশন ও কণ্ঠ : খলিল মাহ্মুদ
মিউজিক কম্পোজিশন গাইড : বেবি লাবিব
গানের ইউটিউব লিংক : প্লিজ এখানে ক্লিক করুন - আমার গ্রাম
অথবা নীচের লিংকে ক্লিক করুন।
আমার কোনো এক পোস্টে জুল ভার্ন ভাইয়ের এক কমেন্টের উত্তরে সৃষ্টির আনন্দ বা বেদনা নিয়ে আমার মতামত লিখেছিলাম। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির বেদনা ছিল বলে জানা যায়। সৃষ্টির বেদনাটা কীরূপ বা কেন হয়, আমার জানা নাই। আমার কাছে সৃষ্টি হলো এক অভূতপূর্ব আনন্দময় ঘটনা। যে-কোনো সৃষ্টিতেই আমি উৎফুল্ল বোধ করি। আপনারা জানেন যে, আমি গান লিখি, সুর করি, গল্প, কবিতা, ছড়া, উপন্যাস, আর্টিকেল, কোনোকিছু বাদ রাখি নাই এবং সব ক্যাটাগরিতে আমার লেখার সংখ্যা বেশ প্রচুর
সৃষ্টির জন্য আমার মতে কিছু উস্কানি, প্রভাবক, অনুঘটক, ক্যাটালিস্ট বা Stimulation-এর দরকার। এসব থেকেই মনের ভেতর একটা প্লট সৃষ্টি হয়, যা একটা লেখা লিখতে উদ্দীপ্ত করে। কোনো উপলক্ষ ছাড়া আমি কোনো লেখা লিখেছি বলে মনে পড়ে না। কেউ লিখতে পারেন বলেও মনে হয় না।
আমার গ্রামকে নিয়ে কেন আমি গান বা কবিতা লিখি? কারণ, আমি গ্রামের ছেলে। দেশে-বিদেশে যেখানেই যাই না কেন, মনেপ্রাণে আমি গেঁয়ো, আমার মন পড়ে থাকে আমার বাড়িতে, বাড়ির পাশে চকে, খালে, আড়িয়াল বিলে, মাঠে-ঘাটে, কাদায়। গ্রামের মানুষের মুখ, আমার স্কুলের মাঠ, স্কুলের ক্লাসরুম, এগুলো সেই ৪০-৪৫ বছর আগে যেমন দেখেছি, আজও মনের পর্দায় অবিকল সেরকম ভাসমান। যখনই গ্রাম থেকে কেউ আসে, কোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়, কথা হয়, ফেইসবুকে যখন দেখি গ্রামের মানুষের ছবি, তাদের একেকটা সাফল্য আমাকে আবেগাপ্লুত করে, যেমন কষ্টে করে ব্যথিত।
এ সুরটা তৈরির পরও আমার কাছে খুব ভালো লাগে। ইন্টারেস্টিং হলো, একরাতে একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম। স্বপ্নের ভেতর আমি কাউকে বলছি, একটা লিরিক লিখে দিন। তিনি লিরিক লিখছেন না, কিন্তু স্বপ্নের ভেতরেই পুরা গানের সুরটা আমার তৈরি হয়ে গেছে। মনে হচ্ছিল, সারারাত আমি ঘুমের ভেতর সেই গানটা গেয়েছি। অদ্ভুত এক স্বপ্ন!
আগের পোস্ট : আমার গ্রাম
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


