মমতাময়ী
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
- রিয়া, ওই রিয়া, ওঠ না মা। তোর স্কুল আছে না আজকে?????
-হুম...
-ওঠ না, কয়টা বাজে জানিস? ৭.৩০ এ তোর বাস আসবে আর এখন বাজে ৭.১৫
-কি???????
পড়িমরি করে উঠে পড়ে রিয়া। উঠেই তাড়াহুড়া লাগিয়ে দেয় সে। আর মায়ের উপর তো তার হাজারটা অভিযোগ। মা তোমায় বললাম না আজ একটু আগে ডেকে দিতে,উফফ কি যে করো না তুমি...............
-আরে বাবা সেই ভোর ৬ টা থেকে তোকে ডাকছি আর তুই তো উঠতে এতক্ষন লাগালি, বুঝি না বাপু এত ঘুম তোরা কোথায় পাস ...
প্রতিদিনই এগুলো শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে ও। তাই এখন আর কিছুই শুনে না। জানে একটু পরই মা আবার যেই কি সেই ।
মা আমার ব্যাগ এ পানি আর টিফিন টা ভরে দিয়েছতো ?? মা আমার আজকে ৫০ টাকা লাগবে কিন্তু, অন্তুর জন্মদিনের গিফট কিনতে হবে। মা কাল কিন্তু নতুন জামাটা আনোনাই,আজকে কিন্তু নিয়ে আসবা। মা আমার টেবিল এর উপর ঘড়িটা আছে,এনে দেওনা প্লিজ। মা আমি আসি, স্কুল ছুটির পর কিন্তু কোচিং আছে,আমি একবারে বিকালে বাসায় ফিরবো।
এত কথা বলে স্কুল বাস ধরার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ কি মনে হতেই পিছনে তাকিয়ে দেখি মা ছাতা নিয়ে আসছে। ইসস মাকে আমি কতই না কথা শুনাই......
স্কুল বাস এ উঠে মার দিকে শেষবারের জন্য একবার তাকাই, দেখি আমার মমতাময়ী মা উৎকণ্ঠিত দৃষ্টিতে আমার দিকেই চেয়ে আছে। আমি জানি, বিকালে আমি বাসায় ঢোকার আগ পর্যন্ত এমন উৎকণ্ঠটায় তার দিনটা কাটবে।
স্কুল-কলেজ এর গণ্ডি পেরিয়ে ভার্সিটির অদম্য সেই লাইফ। অতঃপর একদিন আমিও কারোর প্রণয়ী, কারো মা। আমার কাছেও তাদের কত আবদার।
উপরের কথাগুলো আসলে আমাদের প্রতিদিনেরই কিছু টুকরো কথা। ওটা শুধুই উদাহরণ। কিন্তু এই উধাহরণই বাস্তবে কত পরিচিত একটি জীবনচিত্র।
কত শত আবদারই না আমাদের এই মমতাময়ী মায়ের কাছে। কত প্রেরনার উৎস তিনি। সব বিপদে তার মায়াভরা কোলটি আমাদের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠে। আমাদের জন্য তার কত সাধ আহ্লাদ তিনি হাসি মুখেই বিসর্জন দেন। সন্তানের প্রয়োজনেই তিনি কখনও কোমল আবার কখনও রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন।
আল্লাহ্র কি কুদরৎ, তিনি এই পরম মমতাময়ীর পায়ের নিচেই আমাদের মত শত শত সন্তানের জান্নাত রেখেছেন। তবুও আমরা কত তুচ্ছ কারণে কিংবা অকারণে এই মাকে কষ্ট দেই। নিজেও বুঝি না তার মনেও আমদের কথাগুলো শেলের মতই বিঁধে।
কাল বিশ্ব মা দিবস। আমরা শুধু এই দিনটিতে নয়, সামনে আরও যত দিন আসবে, প্রতিদিনের জন্য প্রতিজ্ঞা করি, আমরা আমাদের মাকে আর কষ্ট না দেই। তুচ্ছ কিছু কারণে তার চোখের জল না ঝরাই, তাকে ব্যথা না দেই, তার উৎকণ্ঠার কারন না হই।
মা তোমায় অনেক ভালোবাসি মা। আমার সকল অপরাধকে তুমি ক্ষমা করে দিয়ো মা। আর একটা কথা এই যুগের কোন মাকে যেন কখনই কোন বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়। তার অপরূপ মমতাময় দিককে আমরা যেন যতনে আগলে রাখতে পারি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তোমাকে লিখলাম প্রিয়
আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন