somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ শুভ নববর্ষ জাতীয় উৎসব

১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এসো সকলে রাখো হাত এই মুক্তির বৈশাখ


গতকাল চৈত্র’র শেষ সূর্য ডুবেছে। বসন্ত আর বছরের শেষ দিনটি নিয়েছে বিদায়। কালের অতলে গত বছর হারিয়েছে সুখ-দুঃখের পাহাড় নিয়ে। ১৪১৬ বাংলা এখন শুধুই ইতিহাস। এবার এসেছে নতুন বছর ১৪১৭ বাংলা। দোয়ারে এসে ডাক দিয়েছে আলোক রশ্মিময় নব দিন। বলছে, এসো সকলে রাখো হাত এই মুক্তির বৈশাখে। আজ ভোরের কুসুম রাঙা সূর্যটা বাঙালির মনে ছড়িয়ে দিয়েছে অন্যরকম এক আমেজ। আজ পহেলা বৈশাখ আমাদের জাতীয় উৎসব। আজকের এই শুভ মহেন্দ্রক্ষণে প্রতি প্রত্যেক বাঙালি আনন্দ উচ্ছাসে মেতে উঠেছে। বর্ণিল আলোকচ্ছটায় মাতোয়ারা হয়েছে বাঙালি জাতি। আবহমানকাল থেকে বাঙালির জাতীয় জীবনে নববর্ষ আনন্দময় নতুন বছরের প্রত্যাশায় উদযাপন হয়ে আসছে। পুরনো বছরের দিন যাপনের কষ্ট-গ্লানি মুছে ফেলে সংযোজন বিয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় শুভ নববর্ষ। আজ সারাদিনব্যাপী বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই কালজয়ী গান গাইবে বাঙালি। গাইবে- ‘এসো এসো, এসো হে বৈশাখ, তাপস নিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা দুর হয়ে যাক, যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি, অশ্র“ বাষ্প সুদুরে মিলাক, মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিøানে শুচি হোক ধরা, রসের আবেশ রাশি শুষ্ক করি দাও আসি, আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাখ মায়ার কুঞ্জটিজাল যাক দুরে যাক’। কিংবা ব্যান্ড মিউজিকের তালে তালে নেচে গেয়ে উঠবে। গাইবে তারা ‘লেগেছে বাঙালির ঘরে ঘরে একি মাতম দোলা, লেগেছে সুরেরি তালে তালে হৃদয় মাতন দোলা, বছর ঘুরে এল আর এক প্রভাতি, ফিরে এলো সুরের মঞ্জুরী, পলাশ শিমুল গাছে লেগেছে আগুন, এ বুঝি বৈশাখ এলেই শুনি, মেলায় যাইরে, মেলায় যাইরে। আজ বর্ষবরণ উৎসব প্রথম বারের মতো সরকারিভাবে পালন করা হবে। নববর্ষ জাঁকজমক ভাবে পালনের জন্য সরকারি পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হবে। শিশু-কিশোর, তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী, পুরুষ-মহিলা ও আবাল বৃদ্ধ বনিতা আজ নতুন বছরের নব সূর্য’র আলোয় আনন্দ উচ্ছাসে উদ্ভাসিত হয়ে ফুটবে। মুখে অমৃত স্বাদ এনে খাবে পান্তা ভাত ও মাছের রাজা ইলিশ। নানা রকম মিষ্টি, দই, খই, চিড়া, কলা, জিলাপি খাওয়ার ধুম পড়বে। বাহারি রঙের বৈশাখী পোষাক পড়ে দলে দলে ঘুরে বেড়াবে বাঙালিরা। কাসি, ঢোল, করতাল সহ নানা বাদ্য বাজনা বাজিয়ে নেচে গেয়ে আকাশ-বাতাস রাঙিয়ে তুলবে সবাই। নানা ধরনের পসরা সাজিয়ে দোকানীরা হালখাতা উৎসব পালন করবে। আজ সরকারি ছুটির দিন। এদিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠান মালা প্রচার করবে। দেশের সংবাদপত্র সমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
পৃথিবীর সব দেশেই নববর্ষকে ঘিরে নানা ধরনের উৎসব পালন করা হয়। প্রত্যেক জাতিরই নিজস্ব আর একটা নববর্ষ পালনের রীতি আছে। আমাদের পহেলা বৈশাখ তেমনি একান্ত বাঙালির নববর্ষ। বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখ, বৈশাখের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ। এদিনেই আমরা পালন করে থাকি আমাদের প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। প্রত্যেক বাংলাভাষী এদিন বলেন ‘শুভ নববর্ষ’। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে এদিন নতুন আরেকটা বছরের জন্য শুভ কামনা বা শুভেচ্ছা জানানো হয়। নতুন আরেকটা বছরকে বরণ করে নেওয়া হয় নানা রকম উৎসব ও আনন্দের মধ্য দিয়ে।
ইংরেজিভাষীরা যেমন নববর্ষের প্রথম দিন ১ জানুয়ারিতে পালন করে হ্যাপি নিউ ইয়ার, আরবিভাষীরা পালন করে মহররমের প্রথম দিনে ‘নওরোজ, তেমনি বাংলাভাষীরা বৈশাখের প্রথম দিন পালন করে থাকে ‘পয়লা বৈশাখ’। তবে পয়লা বৈশাখ আর বাংলা সন, এসব কিন্তু বাংলা শব্দ নয়। বাংলা সনের ‘সন’ শব্দটা আরবি, পয়লা বৈশাখের পয়লা শব্দটা ফারসি, পয়লা বৈশাখে উদযাপিত ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের উৎসব হালখাতা শব্দটি মুসলমানি। পয়লা বৈশাখ উদযাপনের সময়কাল প্রায় ৪৫০ বছরের পুরনো। দিল্লির সম্রাট আকবর ৯৬৩ হিজরি, ২ রবিউসসানি, রোজ শুক্রবার, ইংরেজি ১৪ এপ্রিল ১৫৫৬ সাল থেকে পয়লা বৈশাখ পালনের রেওয়াজ শুরু করেন। ওইদিন সম্রাট আকবরের সিংহাসনে অভিষেক হয়। সে দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য সম্রাট আকবর তাঁর সম্রাজ্যে সর্বত্রই হিজরি সনের পরিবর্তে সৌরবৎসর পালনের সিদ্ধান্ত নেন। কিভাবে দিনটির ক্ষণ শুভ হবে তা গণনার জন্য রাজসভার অন্যতম নবরতœ সদস্য ও রাজ জ্যোতিষী আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজীর উপর দায়িত্ব পড়ে। সিরাজী অতি সূক্ষ্মভাবে হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে চান্দ্রমাসের সঙ্গে সৌরমাসের সামঞ্জস্য বিধান করে সৌরমাস পালন রীতির প্রচলন ঘটান।
নিনেভে, ব্যাবিলনে নববর্ষ উদযাপিত হতো আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। সেটি ছিল সে দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় উৎসব, চলত ১১ দিন ধরে। ইরানের নওরোজ নববর্ষের উৎসবও যথেষ্ট প্রাচীন। চীন, ভিয়েতনাম, লাওসেও আছে এ ধরনের নববর্ষ পালনের উৎসব। লাওসে নববর্ষের উৎসব যে দিনটিতে শুরু হয় সেটি ঠিক আমাদের পয়লা বৈশাখ। সেসব দেশের পঞ্জিকাও বেশ পুরনো। তবে এ দেশে সম্ভবত ‘আমানি’ নববর্ষের আদিম অনুষ্ঠান। আমানি অর্থাৎ আপপানীয় আমাদের নববর্ষ পালনের আদি ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এ দেশের মানুষ তখন আমানি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নববর্ষ পালনের প্রস্তুতি নিত। সে ঐতিহ্য এখন রূপান্তরিত পান্তাভাত খাওয়ায়। চৈত্রসংক্রান্তির দিন দিবাগত রাতে কৃষক গৃহিনীরা হাঁড়িতে অল্প পরিমাণ অসিদ্ধ চাল রেখে দিত। এই হাঁড়ির পানির মধ্যে একটি কটি আমপাতাও রেখে দিত। পয়লা বৈশাখে সূর্য উঠার আগে সবাই ঘুম থেকে উঠে সেইে ভেজা চাল খেত আর গৃহিনী হাঁড়ির মধ্যে রেখে দেওয়া আমপাতা পানিতে ভিজিয়ে সবার গায়ে সে পানি ছিটিয়ে দিত। লোকবিশ্বাস যে এতে সারা বছর ঘরে শান্তি বজায় থাকবে।
তখন এ দেশে হিজরি সাল প্রচলিত ছিল। কিন্তু ফসল তোলার ঝামেলার কারণে বাংলা সনের প্রবর্তন করেন সম্রাট আকবর। তো সেই হিজরি বছরটিকে ঠিক রেখেই নতুন একটি বর্ষপঞ্জি চালু করা হয়। দুনিয়ায় দুই ধরনের ক্যালেন্ডারের প্রচলন আছে, চান্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষ। সূর্যকে মানদন্ড ধরে সৌরবর্ষের দিনের হিসাব হয় আর চান্দ্র বর্ষের দিনের হিসাবে মানদন্ড ধরা হয় চাঁদকে। খ্রিষ্টাব্দ, বঙ্গাব্দ হচ্ছে সৌরবর্ষ। আর হিজরি হচ্ছে চান্দ্রবর্ষ। সৌরবর্ষের চেয়ে ১১দিন ছোট চান্দ্রবর্ষ। হিজরি ৯৬৩ থেকে বঙ্গাব্দ শুরু বছর থেকে এ পর্যন্ত পেরিয়েছে (১৪৩-৯৬৩)=৪৬৮ বছর। প্রতিবছর ১১ দিন হিসেবে ৪৬৮ বছরে দিনের পার্থক্য (৪৬৮দ্ধ১১)=৫১৪৮ দিন। মানে (৫১৩৭/৩৬৫)=১৪,০৭৩৯ বছরের পার্থক্য। কাজেই এবার হিসাবটা মিলল? বঙ্গাব্দের ১২ মাসের নামকরণ করা হয়েছে নক্ষত্র মণ্ডলে চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে। আর মাসের এ নামগুলো নেওয়া হয়েছে সূর্যসিদ্ধান্ত নামে জ্যোতিবিজ্ঞানবিষয়ক একটা প্রাচীন গ্রন্থ থেকে।
মাসের নাম যে নক্ষত্রের নামে
বৈশাখ বিশাখা
জ্যৈষ্ঠ জ্যেষ্ঠা
আষাঢ় উত্তরাষাড়া
শ্রাবণ শ্রবণা
ভাগ্র পূর্বভাদ্রপদ
আশ্বিন আশ্বিনী
কার্তিক কৃত্তিকা
অগ্রহায়ন (মার্গশীর্ষ) মৃগশিরা
পৌষ পুষ্যা
মাঘ মঘা
ফাল্গুন উত্তরফাল্গুনী
চৈত্র চিত্রা
নববর্ষ পালনের এই প্রথাও কিন্তু সম্রাট আকবর শুরু করেন। নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার উৎসব শুরু করেন তিনি। তবে তাঁর সময় মাসের প্রতিটি দিনের আলাদা নাম ছিল। ৩০ বা ৩১ দিনের একটা মাসের প্রতিটি দিনের আলাদা নাম। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যদি আমাদের চলতে হতো, তাহলে এতগুলো দিনের নাম মনে রাখতে হতো, মুখস্ত করতে হতো স্কুলের পরীক্ষার জন্য। তবে আমাদের এই ঝাক্কি থেকে বাঁচিয়েছেন সম্রাট আকবরের নাতি সম্রাট শাহজাহান। তিনি দিনগুলোকে সপ্তাহে ভাগ করে বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের নাম দিনগুলোর নামকরণ করেন। আর পাশ্চত্য ক্যালেন্ডারের মতো রবিবারকে সপ্তাহের প্রথম দিন হিসেবে ঘোষণাও করেন। সূর্য দেবতা রবির নামানুসারে রবিবার, সোম বা শিব দেবতার নামানুসারে সোমবার, মঙ্গল গ্রহের নামানুসারে মঙ্গলবার, বুধ গ্রহের নামানুসারে বুধবার, বৃহস্পতি গ্রহের নামানুসারে বৃহস্পতিবার, শুক্র গ্রহের নামানুসারে শুক্রবার এবং শনি গ্রহের নামানুসারে শনিবার রাখা হয়েছে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা : ঢাকায় বৈশাখী উৎসবের আরেকটি উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পয়লা বৈশাখ সকালে এ শোভাযাত্রা বের হয়। শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চারুকলায় এসেই শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ফুটিয়ে তোলা হয় গ্রামীণ জীবন। অংশ নেয় বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হয় পয়লা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ এই মঙ্গল শোভাযাত্রা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন : পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে র‌্যালি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, পাঁচ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, পহেলা বৈশাখ সকাল ১০টায় নগর ভবন থেকে র‌্যালি শুরু হবে। সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং নাগরিকবৃন্দের অংশ গ্রহণে র‌্যালিটি চৌহাট্টা পয়েন্ট হয়ে ভিআইপি সড়ক দিয়ে সারদা স্মৃতি ভবনে গিয়ে শেষ হবে। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে সারদা হল সংলগ্ন সুরমা নদীর তীরে। এতে প্রতিদিন বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকবে।
আনন্দ লোক: রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আনন্দলোক এর বর্ষবরণ উৎসব আজ শ্রীহট্ট সংস্কৃত কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে নববর্ষকে বরণ করা হবে। ‘ফিরে চল মাটির টানে শীর্ষক বর্ষবরণ উৎসব চলবে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। দিনব্যাপী এ উৎসবে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা সিলেট বিভাগীয় শাখা, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ সিলেট জেলা শাখা, নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ, গীতিবিতান বাংলাদেশ, সংগীত পরিষদ, তারুণ্য, দ্বৈতস্বর, পাঠশালা, রেডিও এনাউন্স ক্লাব, সিলেট ললিতকলা একাডেমি, নৃত্যশৈলী, নৃত্যাশ্রম, সুর ও বাণী, রূপসী বাংলা। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে সংগীত পরিবেশন করবেন সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, শুভ প্রসাদ নন্দী মজুমদার, কবিতা রায়, মহাদেব ঘোষ, ছায়া কর্মকার। সারা দেশের মতো বৈশাখী উৎসব পালনে সিলেট নগরী ও সেজেছে বর্ণাঢ্য সাজে। .............. বর্ণিল হয়ে পুরো সিলেট নগরী। সরকারি ও বেসরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।
সিলেট জেলা প্রশাসন : প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে বাংলা নববর্ষ ১৪১৭ উদযাপনের জন্য সিলেট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলা কালেক্টর অফিস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিতব্য বর্ষবরণ উৎসবে রয়েছে সকাল ৭টায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য পরিবেশন করবে সিলেটের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীবৃন্দ। নববর্ষের দিন অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কারাগার হাসপাতাল, এতিমখানায় ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার পরিবেশন, সমাজসেবা অধিদপ্তরে শিশু পরিবারের শিশুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দীদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ওসমানী জাদুঘর প্রদর্শনী ও শিশু একাডেমির উদ্যোগে ১৬ এপ্রিল চিত্রাঙ্কন গল্পবলা ও লোকসংগীত প্রতিযোগিতা।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র: পহেলা বৈশাখ ও বর্ষবরণ উপলক্ষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। নগরীর জিন্দাবাজারস্থ রাজাদের জাদুঘরে সকাল ৮টা থেকে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সিপিবি সিলেট জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, বিএমএ সাবেক কোষাধ্যক্ষ ডা. ময়নুল ইসলাম, বাসদ সিলেট জেলার আহবায়ক কমরেড উজ্জল রায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার শিল্পীরা।
রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ: দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ লিডিং ইউনিভার্সিটি এবং জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, দৈনিক সিলেটের ডাক এর সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি দানবীর রাগীব আলী। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সকাল সোয়া ৮টায় আনন্দ শোভাযাত্রা, ৯টায় দেয়ালিকা উন্মোচন, সোয়া ৯টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সাড়ে ১১টায় আপ্যায়ন, বেলা ১২টায় বৈশাখী মেলার উদ্বোধন, বিকেল ৫টায় পুতুল নাচ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাউল আড্ডা।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ: আজ বিকেল ৫টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শেষ বিকেলের আড্ডায় নাট্য কর্মীরা বিভিন্ন নাটকের গান পরিবেশন করবেন। আগামীকাল বুধবার বাংলা ১৪১৭ বরণ উপলক্ষে সকাল ৯টায় শুরু হবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এতে বাঙালির ঐতিহ্য বহনকারী নানা বিষয়ক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ধামাইল, পুঁথিপাঠ, ছড়া পাঠ, আবৃত্তি, কুইজ প্রতিযোগিতা, আড্ডা ও পথনাটকের আয়োজন করা হয়েছে।
বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ: নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ আজ ১৪ এপ্রিল ২০১০ সকাল ৯টা থেকে নিজস্ব ক্যাম্পাস, মদিনা মার্কেটে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী : সকাল ৯টায় উদ্বোধন। উদ্বোধক চন্দ্রাবতি রায় বর্মন। সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সন্ধ্যা ৭টা হতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান হবে সিলেট নগরীর মডেল হাউ স্কুলে।
আরজদ আলী পাঠাগার: “বর্ষবরণ উৎসব ১৪১৭” উপলক্ষে সিলেটের সাহিত্য সাংস্কৃতিক ও মানবকল্যাণমূলক বেসরকারি সংগঠন ‘আরজদ আলী স্মৃতি কল্যাণ পাঠাগার (এএমডব্লিউএল)’র উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সংস্থান পানিগাঁওস্থ প্রধান কার্যালয়ে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেÑ সকাল ১১টায় শিশুদের চিত্রাংকন, সংগীত, কবিতা ও ছড়া আবৃত্তি, বেলা ৩টায় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ। এছাড়া ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসন ও সকাল ১০টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচি সমূহে সংস্থার দুটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×