
যুব উন্নয়নের হাজার কোটি টাকা মিলিশিয়া তৈরি, আইটি প্রশিক্ষণ বাদ দিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরুর অভিযোগ
আজকের কন্ঠ ডেস্ক,
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৫ দিনব্যাপী আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণের একটি বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সমালোচকদের দাবি, বিগত সরকারের আমলে তথ্য প্রযুক্তি খাতে যুবকদের প্রশিক্ষণ ও ফ্রিল্যান্সার তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পগুলো স্থগিত রেখে বর্তমানে সে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে অস্ত্র প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মিলিশিয়া বাহিনী তৈরি করার কাজে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, আগামী ২২ নভেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হতে যাওয়া ১৫ দিনব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণে জুডো, কারাতে ও তায়কোয়ান্ডোর পাশাপাশি 'অস্ত্রশস্ত্র' (Weapon Training) প্রশিক্ষণও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই বিজ্ঞাপন সামনে আসার পরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাত ও যুব উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। তাদের অভিযোগ, যুব উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ জনকল্যাণমূলক ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সরিয়ে বিতর্কিত সামরিক প্রশিক্ষণের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
যুব উন্নয়ন ও প্রযুক্তির জন্য বরাদ্দকৃত বিপুল অর্থ:
পর্যবেক্ষকদের তথ্য অনুযায়ী, বিগত শেখ হাসিনা সরকার যুব উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিপুল সংখ্যক ফ্রীল্যান্সার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে যুব অধিদপ্তরকে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল।
এছাড়াও, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাবদ মোট ২ হাজার ২১১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই বরাদ্দ থেকে যুবকদের আইটি প্রশিক্ষণ, স্থানীয় পর্যায়ে খেলার মাঠ উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরিতে ব্যয়ের পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু গত ৫ই আগস্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের নেওয়া যুব উন্নয়নের এই সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ অসম্পূর্ণ ও স্থগিত হয়ে যায়।
বিতর্কিত অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও মিলিশিয়া তৈরির অভিযোগ:
যুব উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায় যাচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে সমালোচকরা বলছেন, আইটি প্রশিক্ষণ বা মাঠ উন্নয়নের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ফেলে রেখে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের উপদেষ্টারা এখন এই বরাদ্দের টাকা দিয়ে যুবকদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেদের জন্য একটি 'মিলিশিয়া বাহিনী' তৈরির চেষ্টা করছেন।
সমালোচকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে এবং বেকারত্ব দূর করতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ জরুরি, তখন যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয় অস্ত্র প্রশিক্ষণের মতো বিতর্কিত এবং উদ্দেশ্যমূলক কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করছে।
তারা বলছেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো সুস্থ খেলাধুলা এবং আত্মরক্ষামূলক কৌশল শেখানো, কিন্তু 'অস্ত্রশস্ত্র' প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্তিকরণ সরকারি অর্থের অপব্যবহার এবং যুবসমাজকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়। এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য কী এবং এর অর্থায়ন কোথা থেকে আসছে, তা নিয়ে অবিলম্বে সরকারের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করা হয়েছে।
#যুবউন্নয়ন #অস্ত্রপ্রশিক্ষণ #মিলিশিয়া #আর্থিকঅনিয়ম #আইটিপ্রশিক্ষণ #যুবওক্রীড়ামন্ত্রণালয় #বাংলাদেশ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




