আমি ভাব জমাবার বেজায় চেষ্টা করেও বিফল হয়ে অফিস চলে গেলাম।
.
অফিস থেকে ফিরলাম নিরতিশয় কাহিল হয়ে। একটা টেবিলে হাঁটু এমন ঠোকা খেয়েছে যে ব্যথার চোটে প্রাণান্তকর অবস্থা। হাঁটতে পারছি না ভাল করে। পেনকিলার খেয়েও বিশেষ লাভ হয়নি।
অম্রুতাঞ্জন ছিল একটা বাড়িতে। ভাবলাম লাগালে আরাম হতে পারে। অনেক খুঁজেও পেলাম না।
.
অগত্যা বউয়ের শরণাপন্ন হতে হল।
অতীব থমথমে মুখে ভুরু কুঁচকে তিনি বসে আছেন। আমার ভয় হল, বেশিক্ষণ এইভাবে থাকার পর ভুরু যদি আর সোজা না হয়! হয়তো হা হা করে হাসছে তাও ভুরু কুঁচকে আছে।
বললাম, "অম্রুতাঞ্জন আছে না?"
তিনি আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন কয়েক মুহূর্ত তারপর দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, "থাক। কিচ্ছু লাগবে না।"
আমি বললাম, "লাগবে।"
বউ বলল, "বললাম তো লাগবে না।"
আমি বললাম, "এত রাগ তোমার কিসের? অম্রুতাঞ্জন লাগালে ব্যথাটা একটু কমবে তাতেও তোমার আপত্তি?"
.
হাঁটুর যন্ত্রণায় কাতর প্লাস অম্রুতাঞ্জন না পেয়ে রাগে গরগর করতে করতে আমি সবিস্ময়ে দেখলাম তাঁর মুখের সেই থমথমে ভাব কেটে যাচ্ছে। মুখচোখ নরম হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
বললেন, "তুমি জানলে কেমন করে যে আমার মাথা যন্ত্রণা করছে? যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে মাথা?"
ওহ্ হরি! এই ব্যাপার!
মুচকি হেসে বললাম, "টেলিপ্যাথি।"
আমার হাঁটু ব্যথার কথাটা বেমালুম চেপে গিয়ে অম্রুতাঞ্জন লাগিয়ে দিলাম তাঁর কপালে। কিছুক্ষণ পরে তিনি সহাস্য মুখে শুধালেন, "ডিমের পোচ খাবে না পেঁয়াজ-লঙ্কা-আদাকুঁচি দিয়ে অমলেট?"
মেঘ কেটে গেল বোঝা যাচ্ছে।
.
তাহলে কখনও কখনও আঘাত লাগা ভাল...বলুন?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:২৬