somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্য : জামতাড়া গ্যাং (না জানলে গুগল করুন)!

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্ক্যাম বললেই যে স্ক্যামটা মনে আসে এটা এই ধরণের স্ক্যাম নয়।ফলে মফস্বল জায়গায় সরকারি অফিসে ক্লার্কের চাকরি করা রতনদা ব্যাপারটা ধরতে পারেন নি।

ছুটির দিনে সকাল সকাল সাহেব বাঁধের পাড় দিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন । হটাৎ হোয়াটস অ্যাপে টুং করে একটা মেসেজ এলো।

একটা অজানা নম্বর থেকে একটা সুন্দরী মেয়ের ফটো এল। লাল একটা শাড়ি পরা । স্বর্গের পরী মনে হচ্ছে। রতনদা হাঁটা থামিয়ে, ছবিটা জুম করে দেখতে আরম্ভ করলেন। ইতিমধ্যে আরো একটা ছবি এলো। নীল শাড়ি, অন্য একটা মেয়ে । ব্যাকলেস ব্লাউজ পরে কোনাকুনি দাঁড়িয়ে আছে । হাসছে মুক্তোর মতো। রতনদা এবার ওই ফটোটা জুম করে দেখতে আরম্ভ করলেন। আহা , কি মিষ্টি হাসি , হারিয়ে যাচ্ছিলেন ফটোটার মধ্য, হটাৎ ওই একই নাম্বার থেকে আর একটা ফটো এলো। হট প্যান্ট পড়া আর সাথে একটা মিনি টপ। মাঝখানে পুরো অনাবৃত।

রতনদার তখন মনে বসন্ত এসে গেছে। সাহেব বাঁধের পাড়ে পচে যাওয়া কচুরিপানার গন্ধ তখন মনে হচ্ছে ভোরের শিউলির গন্ধ! চারপাশটা দেখে মনে হচ্ছে কচুরিপানা নয়, এ তো পুরুলিয়ার বসন্তের পলাশ! যা রতনদার মনেও এসে দোলা দিতে শুরু করেছে। সাহেব বাঁধের কচুরিপানার মাঝে আটকা পড়া নৌকা দেখে তখন আর সাহেব বাঁধ না, মনে হচ্ছে কাশ্মীরের ডাল লেক!

ভাবতে ভাবতে ফোনে একটা মেসেজ এলো।
"দাদা, কোনটা পছন্দ ?"

মানে টা কি ? রতনদা ভাবছেন। ওদিকে মনে পলাশ ফুল আগুন লাগিয়েছে । এবার ভালো করে তিনটে ছবি একের পর এক দেখতে আরম্ভ করলেন।

অনেক ভেবে জিজ্ঞেস করলেন কত খরচ? হার্ট রেট তখন প্রায় 120।

ফোনটা কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ। একটু পর টুং করে মেসেজ এলো।
"দাদা, আগে পছন্দ বলুন। তার পরে দাম।"

রতনদা মনের গ্লানি কাটিয়ে বললেন, "প্রথম শাড়ি পরা আর লাস্টের প্যান্ট পরা।"

ওপার থেকে আবার টুং।

একটা লিংক এলো ফোনে , বললো 6000 পাঠিয়ে দিন। রতনদা একটুও ভাবলেন না। 6000 আর এমন কি? লাল পলাশের স্বপ্নে বিভোর হয়ে পাঠিয়েই দিলেন জিপে করে।

টাকা সেন্ট হতেই রতনদার বুক ধড়ফড় করা শুরু। ওদিক থেকে আর কোনো সাড়া শব্দ নেই! শেষে না পেরে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে হোয়াটস অ্যাপে ওই নাম্বারটায় কল করলেন ।

রিং হয়ে যাচ্ছে। দুবার রিং করার পরে একটা মেয়ে ফোনটা তুলল।

রতনদা অমায়িক গলায় জিজ্ঞেস করলেন,
"দয়া করে যদি একটু বলেন আমার নাম্বার আপনি কি করে পেলেন ?"

ওদিকের গলাটা ওদিক থেকে উত্তর দিলো,
"দাদা আপনার নাম্বারটা আপনার স্ত্রী দিয়েছে। আমি ওর বন্ধু। আমি বুটিক থেকে বলছি। আমার লেডিস গার্মেন্টস এর ব্যবসা আছে। আপনার স্ত্রী বললেন, আপনাকে দিয়ে পছন্দ করিয়ে তার পর আপনার থেকে টাকা নিতে।"

রতনদার নাকে হঠাৎ আবার কচুরিপানার পচা গন্ধ ভেসে এলো। বড়ন্তির পলাশ রাঙা জঙ্গল থেকে আবার সাহেব বাঁধের কচুরিপানার মাঝে নেমে এলেন। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। ফোনটা কেটে দিলেন।

ফোনটা কিছুক্ষণ পর আবার বেজে উঠলো।

রতনদা ফোনের স্ক্রিনে দেখলেন, ওনার বউ , মাধুরী কলিং।

ফোন তুলতেই বউ আদুরে গলায় ওদিক থেকে বলে উঠলো, "ধন্যবাদ সোনা। খুব ভালো পছন্দ তোমার। তবে পরের ড্রেসটা কেন অর্ডার দিয়েছ? ওটা পরার আমার আরো বয়স আছে নাকি? দুষ্টু!"

রতনদা বুকের ওপর পাথর চেপে বললো ,
"না না , তোমাকে ভেবেই তো পছন্দ করলাম। এই গরমের ছুটিতে দীঘা যাবো বলেছিলাম না। তখন তুমি ঐ ড্রেসটা পরবে!"

বলেই ফোন কেটে দিলো রতনদা।

তার পরে ফোনে বউয়ের নামটা এডিট করে "জামতাড়া গ্যাং মেম্বার" লিখে সেভ করে রাখলেন। =p~
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×