দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ, তিন চিত্র।
শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, নেপাল ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনটি দেশের অভিজ্ঞতা ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। একদিকে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক ধস কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, অন্যদিকে নেপাল এক অভূতপূর্ব ছাত্র-আন্দোলনের পর শান্তিপূর্ণভাবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে নতুন নির্বাচনের পথে হাঁটছে। অথচ বাংলাদেশে একই সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর হতাশার চিত্র ফুটে উঠছে।
নেপালের শান্তিপূর্ণ উত্তরণ।
অভ্যুত্থানের পর মাত্র তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল করেছে নেপাল। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কারকি মাত্র তিনজন সহযোগী নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন। ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ছাত্ররা। তারা মন্ত্রীত্ব দাবি করেনি, কোন রাজনৈতিক দল গঠন করেনি। স্কুল-কলেজে ফিরে যাওয়ার আগে আন্দোলনের সময় যে ভাঙচুর, মারপিট হয়েছে তার জন্য প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছে। নিজেরাই রাস্তাঘাট ও এলাকা পরিষ্কার করেছে।
কোনও বিপ্লবী ইস্তাহার, সংবিধান বাতিল বা সেনাবাহিনী নামানোর প্রয়োজন হয়নি। কয়েকজন বিতর্কিত নেতার অবসরের দাবিই ছিল তাদের একমাত্র শর্ত।
শ্রীলঙ্কার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো।
অর্থনৈতিক দেউলিয়া হওয়ার পর শ্রীলঙ্কা কঠিন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। জ্বালানি ও খাদ্য সংকট কাটিয়ে দেশটি আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থা ফিরে পাচ্ছে। জনগণও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলছে।
বাংলাদেশের অন্ধকার ভবিষ্যৎ?
অন্যদিকে বাংলাদেশে ভিন্ন চিত্র। জামায়াত ও বিএনপি ক্ষমতা দখলের খেলায় মেতে উঠেছে। ছাত্র সমাজও নতুন দল গড়ে ক্ষমতার পেছনে ছুটছে।
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখানে নেপালের মতো ছাত্রদের আত্মসংযম নেই, নেই ভবিষ্যৎ নিয়ে একাগ্রতা।
এরপরও প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক কমছে না। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের কর ছাড় সুবিধা ও নতুন প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রে নেপাল ও শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ানোর পথে, অথচ বাংলাদেশ ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার লড়াই ছেড়ে প্রকৃত সংস্কারের দিকে মনোযোগ না দেয়, তবে দেশের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকার হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




